হাওড়া স্টেশন চত্বরে শ্লীলতাহানি
বহু বার ফোন, ১০০ ডায়াল তবু নিরুত্তর
ড়িতে তখন রাত ১১টা বেজে ২০ মিনিট।
দুষ্কৃতীরা তখনও তাঁদের ঘিরে রয়েছে। ইতিমধ্যে বাবার সামনেই তাঁকে হেনস্থা করেছে। তার মধ্যেই কোনও মতে ১০০ ডায়ালে ফোন করেছিলেন হাওড়া-কাণ্ডে নিগৃহীতা মুম্বই থেকে কলকাতায় ঘোষিকার কাজে আসা ওই তরুণী। কিন্তু বারবার ফোন বেজে যায় পুলিশ কন্ট্রোল রুমে। কেউ ফোন তোলেননি। ফলে কোনও পুলিশি সাহায্যও মেলেনি।
বুধবার এমনই অভিযোগ শোনা গেল ওই তরুণীর মুখে। আক্রান্ত তরুণীর নিরাপত্তার জন্য পুলিশ প্রথমে জানিয়েছিল, ঘটনার পরদিন সকালেই ট্রেন ধরে মুম্বই ফিরে গিয়েছেন ওই তরুণী এবং তাঁর বাবা। পরে জানা যায়, তাঁরা রয়েছেন হুগলিতে এক আত্মীয়ের বাড়ি। এর পরেই ওই তরুণীর মোবাইল নম্বরে যোগোযোগ করা হয়। তখন তিনি এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “যে কোনও শহরে ১০০ ডায়াল করলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশি সাহায্য মেলে। কিন্তু এই প্রথম দেখলাম হাওড়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরে ১০০ ডায়াল করার পরে বেজে বেজে থেমে গেল। কেউ ফোন তুললেন না।”
গত সোমবার রাত সওয়া ১১টা নাগাদ হোটেল থেকে বেরিয়ে হাওড়া সব্জি বাজার লাগোয়া একটি রেস্তোরাঁয় বাবা এবং আরও দুই বন্ধুর সঙ্গে খাবার কিনতে গিয়েছিলেন ওই তরুণী। এর পরে অন্য একটি দোকানের সামনে যান জল কিনতে। অভিযোগ, তখনই মত্ত অবস্থায় এক ব্যক্তি তাঁর উদ্দেশে অশ্লীল কথা বলে হাত ধরে টানাটানি শুরু করে। এই ঘটনা দেখে ওই তরুণীর বান্ধবী দুষ্কৃতীর কানে জুতো দিয়ে আঘাত করেন। এর পরেই ওই দুষ্কৃতী চার-পাঁচ জন সঙ্গীকে ডেকে এনে তাঁদের চার জনকে ঘিরে ধরে মারধর করে।
এ দিন দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত ওই তরুণী বলেন, “ওরা আমাদের গায়ে হাত দিয়ে যখন অসভ্যতা করছে, বাবা এবং সঙ্গে থাকা এক ভাইকে মারছে, আমি তখন পাগলের মতো ১০০ ডায়ালে ফোন করে গিয়েছি। কিন্তু কেউ ফোন তোলেননি।” শুধু তা-ই নয়, ওই তরুণীর আরও অভিযোগ, ঘটনা দেখতে অত রাতেও ভিড় জমে গিয়েছিল। তিনি সকলের কাছে হাত জোড় করে সাহায্যও চেয়েছিলেন। কিন্তু কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। শেষে এক জন প্রবীণ ব্যক্তি কয়েক জনকে নিয়ে এগিয়ে এলে দুষ্কৃতীরা পালায়।
ওই তরুণী এ দিন বলেন, “এটি ঠিকই পুলিশ প্রথমে ফোন তোলেনি। কিন্তু যখন আমরা থানায় গিয়েছি অভিযোগ জানাতে, পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে। রাতেই এক জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে।” মুম্বইয়ের বাসিন্দা, পেশায় ঘোষিকা ওই তরুণী জানান, তিনি মাঝেমাঝেই কাজের সূত্রে কলকাতায় আসেন। কিন্তু এই ধরনের ঘটনা তাঁকে খুবই দুঃখ দিয়েছে। তিনি বলেন, “আমি চাই বাকি দুষ্কৃতীরাও ধরা পড়ুক। পুলিশ আরও সক্রিয় হোক। কারণ পুলিশ সক্রিয় থাকলে আমাদের এ ভাবে প্রকাশ্যে শ্লীনতাহানির শিকার হতে হতো না।”
হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি সদর নিশাত পারভেজ বলেন, “কমিশনারেট হওয়ার পরে আমাদের রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড ও হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড রাস্তায় পাহারা দেয়। কিন্তু ওই দিন স্কোয়াডের গাড়ি কাছাকাছি কোথায় ছিল, তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।” ১০০ ডায়ালে ফোন করার পরেও সাহায্য না মেলার ব্যাপারে ডিসি জানান, কেন কেউ ফোন তোলেননি, তা অবশ্যই খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.