পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারের শেষপর্বেও গোলমাল, সংঘর্ষ অব্যাহত উত্তরবঙ্গে।
সোমবার রাতে এবং মঙ্গলবার সকালে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর থানার বিভিন্ন এলাকায় রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গোলমালগুলি নাম জড়িয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল এবং সিপিএমের। ইসলামপুরের এসডিপিও সুবিমল পাল বলেন, “পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের পাঠানো হচ্ছে। পরিস্থিতি আপাতত স্বাভাবিক।” তৃণমূলের অভিযোগ, দলের এক গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থী ফুলবাড়ি এলাকায় প্রচারে গেলে সিপিএমের দুষ্কৃতীরা তাঁকে হুমকি দেয়। বহিরবাড়ি এলাকাতে সিপিএমের এক কর্মী সমর্থকের বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। দলের এক কর্মী জখম হয়েছেন বলেও সিপিএমের দাবি। তাঁকে মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
রাতে ইসলামপুর থানার গাছিয়াটোল এলাকাতে সিপিএম ও কংগ্রেস সংঘর্ষে ২ সিপিএম কর্মী ও ২ কংগ্রেস কর্মী আহত হন। মঙ্গলবার সকালে ইসলামপুর থানার ভুঁজাগাওতে কংগ্রেস সমর্থকদের দোকানে লুঠের অভিযোগ ওঠে সিপিএমের বিরুদ্ধে। দু’পক্ষ বোমাবাজি করে বলেও অভিযোগ। কংগ্রেসের জেলার নেতা জাকির হুসেন বলেন, “প্রচারের নামে সিপিএম হামলা চালাচ্ছে।” তবে সিপিএমের জোনাল সম্পাদক স্বপন গুহনিয়োগী বলেন, “কংগ্রেস এলাকা জুড়ে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে।”
আরএসপির এক নেতার বাড়ি আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে দিনহাটা থানার নাজিরহাটে ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আরএসপির জেলা সম্পাদক তাপস সাহা বলেন, “দলের দিনহাটা ২ ব্লক কমিটির নেতা সুদর্শন গোপের বাড়ির দুটি ঘর তৃণমূল সমর্থকরা পুড়িয়ে দেন। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখানো হয়।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ভিত্তিহীন অভিযোগ। মানুষকে বিভ্রান্ত করতে অপপ্রচার করা হচ্ছে।” বাগরাকোট পঞ্চায়েতের মোর্চা সমর্থিত ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার প্রার্থী সুমনদীপিকা লাকড়াকে সোমবার রাতে প্রচার সেরে ফেরার পথে ঢিল মারা হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে মালবাজার মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
অন্য দিকে, ভোটের ডিউটি সেরে বাড়ি ফেরার পথে দুটি পুলিশের গাড়ি মুখোমখি সংঘর্ষে এক পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। জখম আরও দুই পুলিশ কর্মী। মঙ্গলবার ভোরে হবিবপুর থানার মনসাতলার কাছে মালদহ-বামনগোলা রাজ্য সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। মৃত রথীন রায় (৪৫) জিপটি চালাচ্ছিলেন। তিনি হবিবপুর থানায় কর্মরত ছিলেন। পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “দুর্ঘটনার কারণ দেখা হচ্ছে।” ভোটের দিন রাত তিনটে পর্যন্ত জেলার ১২০টি বুথে ভোট গ্রহণ চলেছে। কালিয়াচকের ২টি বুথে ও হবিবপুরের একটি বুথে ভোট ৪টা পর্যন্ত ভোট হয়। সেখানে ভোট শেষ হওয়ার পর একটি পুলিশের জিপে সুবোধ রায়, শ্যাম পিং, রথীন রায় হবিবপুর থানায় ফিরছিলেন। সেই সময় পুলিশের আরেকটি গাড়ি মালদহের দিকে ফিরছিল। মনসাতলার কাছে দু’টি গাড়ির সংঘর্ষ হয়। |