ভোট প্রচারের শেষ দিন, মঙ্গলবার এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরি নিয়ে সিপিএম ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগে ফের সরব হলেন রায়গঞ্জের সাংসদ দীপা দাশমুন্সি। একাধিক প্রচার সভায় দীপা বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে সিপিএম ও তৃণমূল এক হয়ে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরি হবে না বলে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছে।। এইমস আমাদের স্বপ্ন।’’ তাঁর দাবি, “কেন্দ্রীয় সরকার হাসপাতালের জমি কেনার জন্য জেলা পরিষদকে ২২ কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথা ঘোষণা করেছে। কংগ্রেস জেলা পরিষদ দখল করে ওই টাকায় জমি কিনে কেন্দ্রের হাতে তুলে দেবে। তারপরই হাসপাতালের কাজ দ্রুত শুরু হয়ে যাবে। হাসপাতাল তৈরির স্বার্থে জেলা পরিষদের ২৬টি আসনেই আমাদের মানুষ জেতাবেন।”
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির উদ্যোগে ২০০৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকার ৮২৩ কোটি টাকা বরাদ্দে রায়গঞ্জে হাসপাতাল তৈরির কথা ঘোষণা করে। প্রথমে বামফ্রন্ট সরকার ও পরে তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে জমি অধিগ্রহণ করেনি বলে দীপা দেবীর অভিযোগ। এমনকী, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল ২০১০ সালের অক্টোবরে রায়গঞ্জের শীতগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের পানিশালা এলাকায় হাসপাতাল তৈরির জন্য জেলা প্রশাসনের চিহ্নিত করা ১১০ একর জমি পরিদর্শনও করে। রাজ্য সরকারকে জমি অধিগ্রহণ করার অনুরোধ করলেও তাতে কোনও কাজ হয়নি কেন সেই প্রশ্ন তোলেন দীপা। তাঁর আরও দাবি, পানিশালা এলাকার সব চাষি হাসপাতাল তৈরির জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে রাজ্য সরকারের হাতে জমি তুলে দিতে প্রস্তুত রয়েছেন। কয়েক মাস আগে চাষিরা নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিত ভাবে স্বেচ্ছায় জমি দেওয়ার কথা লিখে মহাকরণ অভিযানও করেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক স্বার্থে তাঁদের সঙ্গে দেখা করেননি বলেও কংগ্রেস সাংসদের অভিযোগ।
যে এলাকায় ওই হাসপাতালের জমি চিহ্নিত হয়েছে, সেই শীতগ্রাম পঞ্চায়েত দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেসের দখলে। কংগ্রেসের দাবি, মানুষ তাঁদের পাশে রয়েছেন দেখে সিপিএম ও তৃণমূল পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন প্রচার করছে। শীতগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের বিদায়ী প্রধান নবকান্ত বর্মনের অভিযোগ, “গত পাঁচ বছরে এলাকায় রাস্তাঘাট ও জলসেচের উন্নয়ন হয়নি বলে আমাদের বিরুদ্ধে সাধারণ চাষিদের নাম করে কিছু সিপিএম ও তৃণমূলের ক্যাডার মিথ্যা অভিযোগ তুলে কৌশলে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছে।” জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যর দাবি, রাজ্য সরকার কৃষিজমি নষ্ট করে হাসপাতাল তৈরির বিরোধী। জমি অধিগ্রহণ হয়নি। তিনি বলেন, “বাসিন্দারা কংগ্রেসের কথার গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তৃণমূলের ফল ভালই হবে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য অপূর্ব পালও বলেন, “কারা পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করে তা সময়ই বলবে।” |