এক জন নিহত স্বামীর অসমাপ্ত কাজ করার লক্ষ্যে হেঁসেল ছেড়ে ১০ বছর ধরে রাজনীতির ময়দান চষছেন। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের বিদায়ী কৃষি কর্মাধ্যক্ষের স্ত্রী। প্রথম জন চোপড়ার জেলা পরিষদের সিপিএম প্রার্থী আলেমা খাতুন। প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস প্রার্থী মামুনি বেগম।
আলেমা খাতুনের স্বামী আকবর আলি ছিলেন চোপড়ার বেশ প্রভাবশালী সিপিএম নেতা। ২০০৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের মুখে দলের অফিসের মধ্যেই তাঁকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়। কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের বেশ কয়েকজন গ্রেফতার হন। সেই মামলার বিচারপর্ব প্রায় শেষের পথে। স্বামীর মৃত্যুর পরে রান্নাঘর ছেড়ে রাজনীতির ময়দানে নেমে পড়েন আলেমা। গত বার লালবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানও হয়েছিলেন। পরে অবশ্য আস্থা ভোটে হেরে তাঁকে প্রধান পদ থেকে সরতে হয়। চোপড়ায় এখনও সিপিএমের সংগঠন বেশ জোরদার। অন্তত প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য চোপড়ায় প্রতিটি সভায় মানুষের উত্সাহ দেখে ভাল ফল হবে বলে আশা করছেন। আলেমা বলেন, “এলাকার মানুষ সেই রক্তাক্ত দিনের কথা আজও ভোলেননি। আমাদের পাশে ছিলেন। এখনও আছেন। এবারের ভোটেও মানুষের রায় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেই যাবে।” উল্টো দিকে মামুনি এ বারই প্রথম ভোটে দাঁড়িয়েছেন। এলাকায় শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের ‘দারুণ দিদিমণি’ বলে পরিচিত। কিন্তু শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে যুক্ত কেউ পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হতে পারবেন না। সে জন্য চাকরি ছেড়ে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর স্বামী মুস্তাফা কামালেরও এলাকায় বেশ প্রভাব রয়েছে। রাস্তাঘাট, বিদ্যুত্ ও অন্য ব্যাপারে নানা
অভিযোগ থাকলেও ‘ভাল ব্যবহার’-এর সুবাদে মুস্তাফা কামাল ও তাঁর স্ত্রী তাই পাল্লা দেওয়ার মতো জায়গায় রয়েছেন।
দুই প্রার্থীর কেউ কারও বিরুদ্ধে আপত্তিকর কোনও মন্তব্য করেন না। এলাকার মানুষের বক্তব্য, “লড়াইটা বেশ জোরজার হচ্ছে। কেউ কম যান না। দেখা যাক না কী হয়!”
আগামী ২৯ জুলাই নির্বাচনের ফল প্রকাশ হবে। সে দিকে তাকিয়ে সকলেই। কিন্তু আলেমা তাকিয়ে তার পরের দিন ৩০ জুলাইয়ের দিকেও। ওই দিন তাঁর স্বামীকে খুনের মামলার রায় ঘোষণা হওয়ার কথা।
|