মিড-ডে মিলে মৃত্যু
আরজেডি-বিজেপির চক্রান্ত দেখছেন নীতীশ
পরায় বিষাক্ত মিড-ডে মিল কাণ্ডের পিছনে রয়েছে বিজেপি, আরজেডি-র ‘যৌথ চক্রান্ত’ এমনই অভিযোগ তুললেন নীতীশ কুমার।
প্রকাশ্যে এ নিয়ে কিছু না-বললেও গত কাল পটনার বাসভবনে এক দলীয় বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “ক্ষমতা হারানোর ক্ষোভে আরজেডি-র সঙ্গে ‘গোপন আঁতাত’ গড়ে রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইছে বিজেপি।” রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে আগামী দিনে বিরোধীরা এ রকম আরও ষড়যন্ত্রের ছক কষতে পারে বলেও নেতাদের সতর্ক করেছেন নীতীশ।
কয়েক দিন আগে বিহারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী পি কে শাহিও বলেছিলেন, ছপরার স্কুলে খাদ্যে বিষক্রিয়ার ঘটনা ঘটেনি। ওই খাবারে বিষ মেশানো হয়েছিল। তাঁর ইঙ্গিত ছিল আরজেডি-র দিকেই। লালুর দলের সঙ্গে এ বার বিজেপি-কেও নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ। বৈঠকে উপস্থিত জেডিইউ-এর এক নেতা জানান, মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বলেছেন, বুদ্ধগয়ায় বিস্ফোরণের পর ছপরায় বিষাক্ত খাবার খেয়ে পড়ুয়াদের মৃত্যু ওই দু’টি ঘটনার পরই একই দিনে বন্ধ ডেকেছিল বিজেপি, আরজেডি। এতেই ওই দু’টি দলের মধ্যে গোপন সম্পর্ক স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। বিরোধীদের উদ্দেশে নীতীশ বলেছেন, “ওঁরা আমার ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিচ্ছেন। কিন্তু আমি আমার বেছে নেওয়া পথ থেকে কিছুতেই সরব না।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের পুরনো বন্ধুই এখন রাজ্যের উন্নয়নে বাধা দিতে চাইছে। এটাই তাদের কর্মসূচি।”
ওই ঘটনায় অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীকেই দুষছেন বিরোধীরা। রাজ্যের পূর্বতন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সুশীল মোদী আজ ধর্মসতীর ওই গ্রামে গিয়ে মৃত পড়ুয়াদের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করেন। সরাসরি নীতীশের নাম না-করে তিনি বলেন, “সংখ্যালঘু সরকার নিজেদের গদি বাঁচাতে ব্যস্ত। অসুস্থদের দ্রুত পটনার হাসপাতালে পাঠানো হলে এতগুলো প্রাণ নষ্ট হত না। বিশেষ তদন্তকারী দলও দেরিতে গঠন করা হল।” বিজেপি-র অন্য নেতা গিরিজা সিংহ বলেছেন, “কোনও লড়াই-আন্দোলন না-করেই মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন নীতীশ। উনি যে ভাবে ক্ষমতা দখল করেছেন, সে ভাবেই সব কিছুতে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পান তিনি।”
জেডিইউ সূত্রের খবর, লোকসভা নির্বাচনের আগে দলীয় সংগঠনকে আরও মজবুত করতেই জেলা স্তরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন নীতীশ। দলের সাংসদ, বিধায়কদের কয়েক জন সেখানে হাজির ছিলেন। এক নেতা জানান, রাজ্যে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন বুদ্ধগয়ার বিস্ফোরণের পরই বিষাক্ত মিড-ডে মিল খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। জোট সরকার ভাঙার পরই এ সব হচ্ছে। এর পিছনে বিরোধীদের চক্রান্ত রয়েছে। রাজনৈতিক লাভ তুলতে আরজেডি-র সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বিজেপি। এর আগে জনতা দরবারেও মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “ওই দু’টি দল এখন গোপনে যৌথভাবেই কাজ করছে।”
জেডিইউ-এর এক নেতার কথায়, “রাজ্যের মানুষ বুঝছেন, বিজেপি-র সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পরই পরপর দু’টি ঘটনা ঘটল। এটা আমাদের ভবিষ্যতে রাজনৈতিক অস্ত্র হবে। এ সব বক্তব্য নিয়েই মানুষের দরবারে যাব।” ওই নেতার কথায়, “ছপরা-কাণ্ডের পর কয়েক দিন মুখ্যমন্ত্রী ঠিক মতো ঘুমোতেও পারেননি।”
ইতিমধ্যে বিষাক্ত মিড-ডে মিল কাণ্ডের তদন্তে আট সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। দলের নেতৃত্বে রয়েছেন সারন জেলার পুলিশ সুপার সুজিত কুমার। ডিজিপি অভয়ানন্দ বলেন, “বিশেষ তদন্তকারী দলে সারনের এসপি ছাড়া সংশ্লিষ্ট জেলার অন্য কোনও পুলিশ অফিসারকে রাখা হয়নি।” ওই দলে রয়েছেন বৈশালী জেলার এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সিআইডি-র চার জন ইনস্পেক্টর এবং সিওয়ান ও গোপালগঞ্জের তিন জন সাব-ইনস্পেক্টর। তাঁদের তদন্তের বিষয়টি তদারকি করবেন আইজি (সিআইডি) এবং তল্লাশির ক্ষেত্রে সমন্বয় করবেন আইজি (অপারেশন)।
সারনের পুলিশ সুপার সুজিত কুমার এ দিন বলেন, “ছোটখাটো প্রমাণও সংগ্রহ করা হচ্ছে। তদন্তে সব রকমের পরিস্থিতিই দেখা হবে।” মুখ্যমন্ত্রী রাজনৈতিক দলের চক্রান্তের কথা বলছেন, এ নিয়ে পুলিশ সুপারের জবাব, “প্রয়োজনে অনেককেই জেরা করা হতে পারে।”
আজ ছপরার মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক অনিলকুমার ঝায়ের এজলাসে, ধর্মসতীর ওই প্রাথমিক স্কুলের পলাতক প্রধানশিক্ষিকা মীনাদেবীর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার আর্জি জানায় পুলিশ।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.