ভোটের পর রাস্তা তৈরির প্রতিশ্রুতি মমতার
মাথাভাঙা-ফালাকাটার বেহাল সড়ক দিয়ে মাদারিহাট টুরিস্ট লজে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পৌঁছন সোমবার সন্ধ্যায়। মঙ্গলবার শেষ দফার ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে তাঁর প্রচার সভায় জলপাইগুড়ি জেলার বেহাল রাস্তার জন্য দায়ী করেন কেন্দ্রীয় সরকারকেই। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচন আসছে। তখনও রাস্তা ঠিক না করে তৃণমূল সরকারের কাছে জবাব চাইছেন। জবাব তো কংগ্রেস সরকারকে দিতে হবে।” মাথাভাঙা-ফালাকাটা সড়ক অবশ্য ইস্ট-ওয়েস্ট করিডরের মধ্যেই পড়ে। যেখানে রাস্তা সারানোর প্রধান অন্তরায়, জমির সমস্যা।
পঞ্চায়েত ভোটের শেষ পর্বের প্রচার শেষে মঞ্চ থেকে নামছেন মুখ্যমন্ত্রী। ধূপগুড়িতে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব স্পষ্ট জানিয়েও দিয়েছেন, এলাকার মানুষ রাজি নয় বলে প্রয়োজনীয় জমি নেওয়া যাবে না। তবে এ দিন সে প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, “যে রাস্তা দিয়ে কাল আসছিলাম সে রাস্তা নিয়ে এক সাংবাদিক বন্ধু বলেছিলেন, মন্ত্রীরা এলে রাস্তার গর্ত বোজানো হয়। তাকে বলে ছিলাম, সেটা আপনাদের তত্ত্ব। আমাদের নয়। মনে রাখবেন, জাতীয় সড়কের রাস্তা কেন্দ্রীয় সরকারের।” তবে মুখ্যমন্ত্রী এ-ও আশ্বাস দেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে আমি নিজে রাস্তায় ইট পাততে নামব।”
ইতিমধ্যে মাথাভাঙা-ফালাকাটা সড়ক মেরামতির দরপত্র হয়েছে। কিন্তু মমতার অভিযোগ, পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের ঘাড়ে রাস্তা মেরামতির দায় চাপাতে সে কাজ শুরু করা হয়নি। কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আলিপুরদুয়ারে আপনারা জিতেছেন। নাগরাকাটাতে জিতেছেন। আজ বলছেন, পঞ্চায়েতের আগে কাজ শুরু হল না। ওই রাস্তা ঠিক করতে হবে। কী করে করাতে হয়, তা আমরা জানি। আমাদের হাতে থাকলে, এক দিনে করতাম। এটা দিল্লির হাতে। মনে রাখবেন টেন্ডার হয়েছে। ইচ্ছা করে কাজ করছে না।”
ফালাকাটার জটেশ্বরের সভায় আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে গলা মেলালেন মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: রাজকুমার মোদক।
একই ভাবে চতুর্থ দফার ভোটে গোলমাল, রক্তারক্তির জন্যও সিপিএম-কংগ্রেসই দায়ী করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, মালদা আর মুর্শিদাবাদ জেলার মানুষ কংগ্রেস- সিপিএমকে প্রত্যাখ্যান করবে।
মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলবার দুপুরে ডুয়ার্সের ফালাকাটার জটেশ্বর এবং বিকেলে ধূপগুড়িতে দলের দু’টি সভায় প্রায় একই সুরে একযোগে সিপিএম-কংগ্রেসের সমালোচনা করেছেন। তা কখনও চা বাগানের বেহাল দশা নিয়ে। আবার কখনও ডুয়ার্সের জাতীয় সড়কের জরাজীর্ণ অবস্থা নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, “ডুয়ার্স নিয়ে রাজ্য সরকারের উন্নয়নের অনেক পরিকল্পনা আছে। জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত হাতে না থাকলে কোনও কাজ হবে না।”
একটা সময়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ডুয়ার্সের অন্তর্ভুক্তির দাবি তোলায় এলাকা অশান্ত হয়ে উঠেছিল। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আজ আপনাদের মধ্যে দুশ্চিন্তা নেই তো যে, পাহাড় সমতল ভাগ হয়ে যাবে? আজ পাহাড় যেমন হাসছে, তেমনি তরাই ডুয়ার্স হাসছে। কোনও রক্তারক্তি নেই।” এটাই তাঁর সরকারের সবচেয়ে বড় সাফল্য বলে তিনি দাবি করেন। সেই সঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটের পরে প্রশাসনিক কাজের সুবিধার জন্য আলিপুরদুয়ার জেলা ভাগের সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।
মমতা বলেন, “আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এমন কেউ থাকবে না যার মাথার উপরে ছাদ নেই।” উত্তরবঙ্গে মিনি মহাকরণ ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে চালু করারও আশ্বাস দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “জলপাইগুড়ি জেলায় এত কলকারখানা হবে যে বেকার থাকবে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.