রাজ্য সরকার দিন চূড়ান্ত করতে পারেনি। আর সময় দিতেও আদালত নারাজ। বরং কলকাতা হাইকোর্ট মঙ্গলবার জানিয়ে দিল, পরশু, অর্থাৎ আগামী শুক্রবার তারাই একতরফা ভাবে রাজ্যের ১৩টি পুরসভার নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে দেবে।
মেয়াদ ফুরোতে চলা ওই তেরোটি পুরসভায় নতুন বোর্ড গঠনের জন্য ভোট কবে নেওয়া হবে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলে তা চূড়ান্ত করতে রাজ্যের পুর-সচিবকে গত বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ ছিল, আলোচনার সিদ্ধান্ত এ দিন আদালতে জানাতে হবে। সেই মতো বেঞ্চ এ দিন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের (এজি) কাছে জানতে চায়, পুর নির্বাচনের দিন কী ঠিক হল। অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চট্টোপাধ্যায় আদালতকে বলেন, সরকারের সঙ্গে কমিশনের মতৈক্য না-হওয়ায় নির্বাচনের চূড়ান্ত নির্ঘণ্ট তৈরি করা যায়নি। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কোর্টের কাছে আরও কিছু দিন সময় চান এজি।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কৌঁসুলি লক্ষ্মীচাঁদ বিয়ানি বলেন, গত শুক্রবার পুর-সচিব কমিশনের অফিসে গিয়ে ৭ সেপ্টেম্বর ভোট করানোর কথা বলেছিলেন। কমিশনের কর্তারা চেয়েছিলেন ভোট নেওয়া হোক ২০, ২১ কিংবা ২২ সেপ্টেম্বরে। ৭ সেপ্টেম্বর পুরভোট আয়োজন কেন সম্ভব নয়, কমিশন তা-ও সরকারের প্রতিনিধির কাছে সবিস্তার ব্যাখ্যা করেছে বলে তাদের কৌঁসুলির দাবি। তাঁর বক্তব্য: পুর-সচিব বলে গিয়েছিলেন, রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে। কিন্তু গত তিন দিনে সরকারের তরফে বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি।
পাশাপাশি পুর নির্বাচন নিয়ে মূল মামলাটি দাখিল করেছেন যিনি, সেই বাসবী রায়চৌধুরীর কৌঁসুলি সুব্রত মুখোপাধ্যায় এ দিন সওয়ালে অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকার সব নির্বাচনের ক্ষেত্রেই গোড়া থেকে সময় নষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে। “কোনও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াই তারা সম্পন্ন করতে চায় না! পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে সরকারের গড়িমসির ফলে রমজান মাসে ভোট করতে হল।” মন্তব্য সুব্রতবাবুর। আদালতকে তিনি বলেন, “পুরভোটের ক্ষেত্রেও এই ভাবে সময় নষ্ট করে পরে ওরা (রাজ্য সরকার) বলবে, শারদীয়া উৎসবের সময় এসে গিয়েছে। তাই ভোট করা যাবে না। মেয়াদ-উত্তীর্ণ পুরসভাগুলোয় প্রশাসক বসিয়ে বেনামে রাজ্য সরকারই কাজ চালাবে।”
সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বিচারপতি বাগচী বলেন, “রাজ্য সরকারকে আর সময় দিতে রাজি নই। শুক্রবার আমরা আদালতেই ১৩টি পুরভোটের দিন ঘোষণা করে দেব।”
|