নির্দেশ দিয়েছে খোদ হাইকোর্ট। তা মেনে দু’পক্ষ মুখোমুখি বসল ঠিকই, কিন্তু পুরভোটের নির্ঘণ্ট ঘিরে সমস্যা কাটল না। রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিল, ২২ সেপ্টেম্বরের আগে ভোটের আয়োজন করা অসম্ভব। অন্য দিকে রাজ্য তাদের আগের প্রস্তাবমতো ৭ সেপ্টেম্বরকেই আঁকড়ে থাকল।
ফলত কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশমতো তিন দিনের মধ্যে ১৩ পুরসভায় ভোটের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা যাবে কি না, তা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠে গেল। পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট প্রথমে রাজ্য ও কমিশনকে বলেছিল আলোচনায় মতভেদ মেটাতে। বৈঠক নিষ্ফলা হওয়ায় শেষমেশ আদালতকেই ভোটের নির্ঘণ্ট চূড়ান্ত করতে হয়। এ ক্ষেত্রেও শেষ পর্যন্ত আদালতকে ফের হস্তক্ষেপ করতে হতে পারে বলে মনে করছে কমিশনের একাংশ।
কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসে তিন দিনের মধ্যে পুরভোটের দিনক্ষণ পাকা করতে বুধবার রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি অরুণকুমার মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ বলে দিয়েছে, বৈঠকের ফল মঙ্গলবার আদালতকে জানাতে হবে। ওই দিনই হাইকোর্ট থেকে ভোটের চূড়ান্ত নির্ঘণ্ট ঘোষণা হবে। সেই মতো বৃহস্পতিবার রাজ্যের পুর-সচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকা কমিশনের সদরে যান। কমিশন-সূত্রের খবর: ৭ সেপ্টেম্বর ভোট আয়োজনের যে প্রস্তাব আদালতে সরকার দিয়েছে, পুর-সচিব কমিশনের কাছে তারই পুনরাবৃত্তি করেন, যাকে ‘অবাস্তব’ বলে খারিজ করেছে কমিশন। মেখলিগঞ্জ, হলদিবাড়ি, আলিপুরদুয়ার, বালুরঘাট, ডালখোলা, বর্ধমান, গুসকরা, পানিহাটি, হাবরা, ডায়মন্ড হারবার, মেদিনীপুর, চাকদহ ও দুবরাজপুর এই তেরোটি পুরবোর্ডের মেয়াদ চলতি মাসে শেষ হচ্ছে। তবে মেদিনীপুরে নির্বাচনী ক্ষেত্রের সীমাবিন্যাস এখনও হয়নি। ফলে বারোটি পুরসভার ভোট একসঙ্গে করা যেতে পারে। কিন্তু তা কিছুতেই ৭ সেপ্টেম্বরে সম্ভব নয় বলে কমিশন জানিয়েছে পুর-সচিবকে।
৭ সেপ্টেম্বরে আপত্তি কেন? সময়াভাবের যুক্তি দিচ্ছে কমিশন। বলছে, ১০ অগস্ট ভোটার তালিকা প্রকাশ করে তা দলগুলিকে দিতে অন্তত পাঁচ দিন লাগবে। মনোনয়ন পেশে দরকার অন্তত ৮ দিন, স্ক্রুটিনিতে ১ দিন। তার দু’দিন পরে মনোনয়ন প্রত্যাহারে ১ দিন। শেষে প্রার্থীদের নাম ও ভোট-চিহ্ন ইভিএমে ঢোকাতে হবে। কর্মীদের প্রশিক্ষণও দিতে হবে। পঞ্চায়েত ভোটের কারণে ৩ অগস্টের আগে ভোটকর্মীদের পাওয়া যাবে না। “সব মিলিয়ে ২২ সেপ্টেম্বরের আগে ভোট সম্ভব নয়। সরকার চাইলে ২২ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে করতে পারে।” বলেন কমিশনের এক কর্তা। কমিশনের বিকল্প প্রস্তাব: সেপ্টেম্বরে আপত্তি থাকলে নভেম্বরে হোক। সে ক্ষেত্রে হাওড়া, কৃষ্ণনগর, ঝাড়গ্রাম ও বহরমপুরের সঙ্গেই ওই ১৩টি পুরসভার ভোট হতে পারে।
|