|
|
|
|
কমিশনের সঙ্গে বসুন, বলল কোর্ট |
পুরভোট-নির্ঘণ্ট আপসে নির্ধারণের নির্দেশ রাজ্যকে
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
নির্ঘণ্টের প্রশ্নে রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন সহমতে না-পৌঁছনোয় এ বার তেরো পুরসভার নির্বাচন নিয়েও হস্তক্ষেপ করতে হল আদালতকে।
বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, রাজ্যের পুর-সচিবকে কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসে তিন দিনের মধ্যে ওই নির্বাচনের দিন চূড়ান্ত করতে হবে। আজ, বৃহস্পতিবারই পুর-সচিবকে কমিশনের অফিসে গিয়ে নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে বসতে বলেছে প্রধান বিচারপতি অরুণকুমার মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী মঙ্গলবার দু’পক্ষকে আদালতে এসে পুরভোটের সম্ভাব্য দিনক্ষণ জানাতে হবে। সে দিন হাইকোর্ট থেকেই নির্ঘণ্ট ঘোষণা হবে।
মেখলিগঞ্জ, হলদিবাড়ি, আলিপুরদুয়ার, বালুরঘাট, ডালখোলা, বর্ধমান, গুসকরা, পানিহাটি, হাবড়া, ডায়মন্ড হারবার, মেদিনীপুর, চাকদহ ও দুবরাজপুর এই ১৩টি পুরসভার কোনওটির মেয়াদ ইতিমধ্যে শেষ, কোনওটির এ মাসেই শেষ হচ্ছে। ১০ জুলাই মামলার প্রথম শুনানিতে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) বিমল চট্টোপাধ্যায় হাইকোর্টকে জানিয়েছিলেন, সরকার আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ওই ১৩টি পুরসভায় ভোট করতে চায়। হাইকোর্ট এ ব্যাপারে কমিশনের মতামত চেয়েছিল। এ দিন কমিশনের কৌঁসুলি লক্ষ্মীচাঁদ বিয়ানি বলেন, ৭ সেপ্টেম্বর ১৩টিতে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। তাঁরা চান, ২২ সেপ্টেম্বর ১২টিতে ভোট হোক। আর মেদিনীপুরে নির্বাচন হোক নভেম্বরে, কারণ সেখানে সীমানা পুনর্বিন্যাসের কাজ শেষ হয়নি। অর্থাৎ, পুরভোটের নির্ঘণ্ট নিয়েও রাজ্য-কমিশন ভিন্নমত। এই পরিস্থিতিতে অ্যাডভোকেট জেনারেলের উদ্দেশে ডিভিশন বেঞ্চ বলে, “পুরভোটের নির্ঘণ্ট নিয়ে বৃহস্পতিবারই পুর-সচিবকে নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে বসতে হবে। তিন দিনের মধ্যে দিনক্ষণ চূড়ান্ত করে ফেলতে হবে। কী ঠিক হল, আগামী মঙ্গলবার আদালতে এসে তা জানাতে হবে।”
পঞ্চায়েত নির্বাচন মামলাতেও রাজ্য ও কমিশনকে মুখোমুখি বসে আপসে দিন স্থির করার পরামর্শ দিয়েছিল হাইকোর্ট। তাতে মীমাংসা না-হওয়ায় শেষমেশ মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। তবে এ ক্ষেত্রে পারস্পরিক আলোচনায় মতভেদ দূর হবে বলে হাইকোর্ট-সূত্রে আশা প্রকাশ করা হয়েছে। অন্য দিকে হাইকোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে মহাকরণে রাজ্যের পুর-নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়ে দেন, পুর-সচিব কমিশনে গিয়ে বারোটি পুরসভায় ৭ সেপ্টেম্বরে ভোট করার কথাই বলবেন। কমিশন ২২ সেপ্টেম্বর ভোট আয়োজনের যে প্রস্তাব দিয়েছে, তাতে রাজ্যের আপত্তি রয়েছে। কেন আপত্তি?
পুরমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, “১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পুজো। রাজ্যে বিশ্বকর্মা পুজোর পরেই দুর্গাপুজোর ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায়। তাই ২২ সেপ্টেম্বর নির্বাচন হলে সংশ্লিষ্ট পুর-এলাকার বাসিন্দাদের অসুবিধে হবে।” তবে মেদিনীপুরের পুরভোট প্রসঙ্গে পুরমন্ত্রী কমিশনের সঙ্গে সহমত। তিনিও চান, ওখানে নভেম্বরেই নির্বাচন হোক।
এ দিকে মামলার আবেদনকারী বাসবী রায়চৌধুরীর কৌঁসুলি সুব্রত মুখোপাধ্যায় এ দিন আদালতে রাজ্য পুর-আইনের ১৪ নম্বর ধারার ৪ নম্বর উপধারাটি খারিজের আবেদন জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, ওই উপধারা মোতাবেক পাঁচ বছরের মেয়াদ ফুরনোর পরেও কোনও পুরসভার কাজকর্ম চালাতে ছ’মাসের জন্য প্রশাসক নিয়োগ করা যেতে পারে। এবং তারই সুবাদে ১৩টি পুরসভার ক্ষেত্রে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু সুব্রতবাবুর দাবি: রাজ্য পুর-আইনের এই উপ-ধারাটি সংবিধানের ২৪৩ (ইউ) ধারার পরিপন্থী। কেননা তাতে পরিষ্কার বলা রয়েছে, পুরসভা বা পঞ্চায়েতে পাঁচ বছর অন্তর নির্বাচন আবশ্যিক। আর তা করতে হবে পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষের আগেই।
আগামী মঙ্গলবার, অর্থাৎ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন হাইকোর্ট এই বিষয়টি শুনবে বলে বেঞ্চ জানিয়েছে। সুব্রতবাবুকে বলা হয়েছে এ সম্পর্কে তিন দিনের মধ্যে অতিরিক্ত হলফনামা পেশ করতে। পাশাপাশি সংবিধানের ২৪৩ (ইউ) ধারা মেনে কী ভাবে নির্বাচন করা যায়, পুর-সচিবকে তা-ও খতিয়ে দেখতে বলেছেন প্রধান বিচারপতি।
|
পুরনো খবর: রাজ্য ১৩টি পুরসভায় ভোট চায় ৭ সেপ্টেম্বর |
|
|
|
|
|