|
|
|
|
আজ রায় হাইকোর্টের |
সমঝোতাপত্রের অভাবে কেটেও কাটেনি বই-জট
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কলকাতা হাইকোর্টে মামলার মধ্যেই গত শুক্রবার থেকে আদালতের বাইরেও আলোচনা চলছে সমানে। দিশাও একটা মিলেছে বলে খবর। কিন্তু সমঝোতাপত্র প্রস্তুত না-হওয়ায় একাদশ শ্রেণিতে পাঠ্যপুস্তক বিলির জট বুধবারেও খুলল না। আজ, বৃহস্পতিবার দু’পক্ষের সমঝোতাপত্র পাওয়ার পরে তিনি চূড়ান্ত রায় দেবেন বলে জানিয়ে দেন বিচারপতি।
আবেদনকারী প্রকাশনা সংস্থা এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের মধ্যে পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ এবং বিক্রি নিয়ে কয়েক দিন ধরে যে-আলোচনা হয়েছে, বুধবার তার একটি রিপোর্ট বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দেন অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু আলোচনা হলেও দু’পক্ষ এখনও কোনও সমঝোতাপত্র তৈরি করে উঠতে পারেনি। তাই বিচারপতি এ দিন এই মামলায় রায়ও দেননি।
তবে বোঝাপড়া যে একটা হয়েছে, তা জানিয়ে দেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের আইনজীবী এক্রামুল বারি। তিনি আদালতে বলেন, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে দু’বছরের জন্য একাদশ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকের একটি বড় অংশ ছাপার দায়িত্ব মামলার আবেদনকারী প্রকাশনা সংস্থাকে দেওয়া হবে। দু’পক্ষের আলোচনায় এই মর্মেই সমঝোতা হয়েছে। আর সংসদ চলতি বছরে যে-পদ্ধতিতে পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ ও বিক্রি করা হবে বলে ঠিক করেছিল, আপাতত সেটাই চালু থাকবে।
একাদশ শ্রেণির বাংলা, ইংরেজি-সহ আটটি পাঠ্যবই এ বার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের প্রকাশ করার কথা ছিল। তারা বই ছাপার বরাত দেওয়ার জন্য গত এপ্রিলে দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু সর্বাধিক দর দিয়েও পাঠ্যবই ছাপার বরাত না-পেয়ে একটি প্রকাশনা সংস্থা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। আটটি বই প্রকাশ ও বিক্রির উপরে স্থগিতাদেশ দেয় উচ্চ আদালত। একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় বই না-পেলে পড়ুয়ারাই সব থেকে বেশি অসুবিধায় পড়বেন। তাঁদের সমস্যার কথা জানিয়ে এক বছরের জন্য স্থগিতাদেশ শিথিল করতে হাইকোর্টে আবেদন জানান জিপি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারকে ভর্ৎসনা করে বিচারপতি বলেছিলেন, সংসদ যখন বেআইনি কাজ করছিল, তখন সরকারের হুঁশ কোথায় ছিল! তার পরে আদালতের বাইরে সমাধানের খোঁজ শুরু হয়।
সমঝোতার কী হল? আবেদনকারী প্রকাশনা সংস্থার আইনজীবী সপ্তাংশু বসু এ দিন আদালতের বাইরে বলেন, সংসদের মোট বই রয়েছে আটটি। তার মধ্যে ছ’টি ছাপা ও বিক্রির ভার পাবে তাঁর মক্কেল। বাকি দু’টি বই ছাপা ও বিক্রির ভার কে পাবে, তা ঠিক করবে সংসদ। ওই প্রকাশনা সংস্থার এক প্রতিনিধি সপ্তাংশুবাবুর সামনেই বলেন, “আমরা তো কার্যত মামলায় হেরেই গেলাম। কম দর দিয়েও অন্ধ্রপ্রদেশের একটি প্রকাশনা সংস্থা এ বছরের সব বই প্রকাশের ভার পেল!” সপ্তাংশুবাবু তাঁকে বলেন, “যে-কোনও সমঝোতায় দু’পক্ষকেই কিছু না কিছু ছাড়তে হয়।” আবেদনকারী সংস্থাটির প্রতিনিধি বলেন, “আগামী দু’বছর আটটি বইয়েরই বরাত চাই আমরা।”
এর পরে আবেদনকারী সংস্থার প্রতিনিধি অন্য একটি বিষয়ে তাঁদের আপত্তির কথা তোলেন। তিনি বলেন, “সর্বাধিক দর দিয়েও আমরা বরাত পেলাম না। অন্য দিকে মাত্র ২৫ শতাংশ দর দিয়ে অন্য একটি সংস্থা বরাত পেয়ে গেল। মামলা শেষ হওয়ার আগেই তারা প্রায় সব বই-ই বিক্রি করে ফেলল। কেন কম দরে ওই সংস্থাকে বরাত দেওয়া হল, তা জানা গেল না। কেলেঙ্কারির বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।” তাঁর দাবি, ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে এ বছর বই বিক্রির বিষয়টির নিষ্পত্তি করে দিক হাইকোর্ট। কিন্তু কেলেঙ্কারির বিষয়টি নিয়ে মামলা যেমন চলছে চলুক। বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট এ ব্যাপারে কী রায় দেয়, তা নিয়ে দু’পক্ষের আইনজীবীরাই সংশয়ে রয়েছেন।
|
পুরনো খবর: নারাজ অভিযোগকারী সংস্থা, জারি বই-জট |
|
|
|
|
|