যা করেছি মানবিকতার খাতিরে, দাবি অধীরের
ধর্ষণের রাজনীতি করছে কংগ্রেস, তোপ তৃণমূলের
কামদুনি, খোরজুনা ও রানিতলাকে চলতি পঞ্চায়েত যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠল অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে। গ্রাম-বাংলার ধর্ষণের ঘটনাকে রাইসিনার দরবারে নিয়ে আসার এই কংগ্রেসি প্রয়াসকে বাঁকা চোখে দেখছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যে ক্রমশ জমি হারাচ্ছে কংগ্রেস। তারা তাই ধর্ষণের রাজনীতি থেকে ফায়দা তুলতে চাইছে। যদিও অধীর শিবিরের বক্তব্য, এর মধ্যে রাজনীতি খোঁজা অর্থহীন। মানবিকতার খাতিরেই যা কিছু করা হয়েছে।
রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মধ্যেই কামুদনি বা মুর্শিদাবাদের খোরজুনা ও রানিতলার লোকেরা যে ভাবে পরপর দু’দিন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাতে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে তৃণমূল। দল মনে করছে, ধর্ষিতার পরিবারগুলিকে সামনে রেখে আসলে রাজনীতি করছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব তথা অধীর। এ ভাবে ঘটনাগুলিকে জাতীয় স্তরে প্রাসঙ্গিক করে তোলার পিছনে একটি পরিকল্পিত ছক রয়েছে তাঁর। তৃণমূলের দাবি, নিজের জেলায় ক্রমশ জমি হারাচ্ছেন অধীর। জেলায় তাঁর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা কংগ্রেস ছেড়ে শাসক দলে যোগ দিচ্ছেন। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটেও মুর্শিদাবাদে ফল খারাপ করবে কংগ্রেস। আর তা বুঝতে পেরেই অধীর এখন মরিয়া।
তৃণমূলের ক্ষোভ, কামদুনি কাণ্ডে ইতিমধ্যেই চার্জশিট পেশ হয়েছে। মুর্শিদাবাদের দু’টি ঘটনাতেও গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্তদের। তবু কামুদনি, খোরজুনা ও রানিতলা তিন ক্ষেত্রেই প্রতিনিধিরা প্রণব মুখোপাধ্যায়কে জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের তদন্তে তাঁদের ভরসা নেই। তাই তাঁরা সিবিআই তদন্তের দাবিতে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়েছেন। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “সাংবিধানিক পরিধির মধ্যে থেকে রাষ্ট্রপতির পক্ষে যে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয়, অধীরও তা বিলক্ষণ জানেন। আসলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় রাজ্য প্রশাসনের অপদার্থতার বিরুদ্ধে সরব হয়ে ভোটেবাক্সে ফায়দা তুলতে চাইছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
অধীর এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর যুক্তি, কামদুনিতে যে পৈশাচিক ঘটনা ঘটেছে তার পর মানবিকতার খাতিরেই স্থানীয় মানুষের পাশে দাঁড়াতে তিনি ওই গ্রামে গিয়েছিলেন। সেখানকার মানুষজন তাঁর কাছে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। তিনি তাঁদের অনুরোধ রক্ষা করেছেন মাত্র। আর খোরজুনা ও রানিতলার পরিবারগুলি তাঁর জেলার ঘটনা। সে ক্ষেত্রে স্থানীয় সাংসদ হিসাবে ওই পরিবার দু’টির পাশে দাঁড়ানো তাঁর কর্তব্য।
গত কাল রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় মহিলা কমিশনের পর আজ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন খোরজুনা ও রানিতলার বাসিন্দারা। দু’পক্ষই ধর্ষণের তদন্তে জেলা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কমিশনের সদস্যদের কাছে সরব হন। ধর্ষণের অভিযোগ না নেওয়া ও ধর্ষিতার প্রতি অসংবেদনশীল মন্তব্য করায় প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে অবিলম্বে ওই জেলার পুলিশ সুপারকে বদলি করার দাবি তোলা হয়। তাদের অভিযোগ কমিশনে নথিভুক্ত করা হয়েছে। কমিশনের চেয়ারপার্সন কে জি বালকৃষ্ণন অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছে খোরজুনা ও রানিতলার পরিবার দু’টি।
মুর্শিদাবাদের ওই প্রতিনিধিরা যে ভাবে জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবিরের অপসারণের দাবিতে সরব হয়েছেন, তার পিছনেও রাজনীতি রয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। শাসক শিবিরের বক্তব্য, জেলার এসপি শক্ত হাতে প্রশাসন চালাচ্ছেন বলে সমস্যায় পড়ে গিয়েছেন অধীর। নিজের গড়ে দাপট কমে যাওয়ার চিন্তায় তিনিই চাইছেন কবিরকে সরাতে। কিন্তু নিজে সামনে না এসে প্রতিনিধি দলের মাধ্যমে সেই চেষ্টা চালাচ্ছেন। এই অভিযোগ উড়িয়ে অধীর শিবিরের পাল্টা দাবি, তৃণমূল নেতৃত্বের নির্দেশেই বেছে বেছে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের ভূয়ো অভিযোগে গ্রেফতার করেছেন ওই এসপি। ধর্ষণের অভিযোগও নিতে চাইছেন না। এই পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে তাই বাধ্য হয়েই সরব হয়েছেন জেলার বাসিন্দারা।

পুরনো খবর




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.