বাইক-বাহিনীতে নজর রাখতে দল গড়ল কোর্ট
ঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ক্ষণ ঠিক করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কত বাহিনী মোতায়েন হবে, তা ঠিক করে দিয়েছে হাইকোর্ট। এ বার উচ্চ আদালত প্রচার পর্বে বাইক-বাহিনী বন্ধে এবং নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ৮ জনের বিশেষ নজরদারি বাহিনীও তৈরি করে দিল।
ইতিমধ্যেই তিন দফার প্রচার শেষ হয়ে গিয়েছে। আর বাকি রয়েছে দুই দফা। শেষ ওই দুই দফার প্রচারে হাইকোর্ট নিযুক্ত বিশেষ বাহিনীই নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপরে নজরদারি চালাবে। বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার জানিয়ে দেন, মোট চারটি ভাগে ভাগ হয়ে ওই বিশেষ বাহিনী জেলায় জেলায় ঘুরবে। প্রত্যেক দলে দু’জন করে স্পেশ্যাল অফিসার থাকবেন। এক জন রাজ্যের নির্বাচিত। অন্য জন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। তবে ওই বাহিনী কবে কোথায় যাবে, তারা কী করবে তা ঠিক করে দেবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
বসিরহাটে কংগ্রেসের বাইক মিছিল। ছবি: নির্মল বসু।
বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ওই দলের সফরসূচি গোপন রাখা হবে। বাহিনীর সদস্যরাও আগে থেকে জানতে পারবেন না যে তাঁদের কোথায় যেতে হবে। যে সব এলাকায় প্রচার হচ্ছে, সেখানে আচমকা হানা দেবেন তাঁরা। এই টিমে এমন অফিসার থাকবেন যাঁরা তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। বাইক-বাহিনীর প্রচার, বা প্রচার পর্বের নিরাপত্তার অভাব দেখলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করার ক্ষমতা থাকবে দলের সদস্যদের।
এ দিন শুনানির শুরুতেই কংগ্রেসের আইনজীবী প্রদীপ তরফদার বলেন, “প্রচার পর্বে কোনও নিরাপত্তা নেই। বাইক-বাহিনীর অভিযান যেমন চলার তেমন চলছে। পুলিশ কোনও সহায়তা করছে না।” সিপিএমের পক্ষে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টচার্য বলেন, “প্রচার পর্বে অনেক প্রার্থী নিজের কেন্দ্রেই ঢুকতে পারছেন না। কোথাও নিরাপত্তা নেই।”
এই সময় রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চট্টোপাধ্যায় বিচারপতির হাতে একটি রিপোর্ট তুলে দেন। বিচারপতি জানতে চান, “এটা কীসের রিপোর্ট?” বিমলবাবু বলেন, “বাইক-বাহিনী বন্ধে রাজ্য সরকার কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা এই রিপোর্টে বলা আছে। এই রিপোর্টের প্রতিলিপি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছেও পাঠানো হয়েছে।”
কিছুটা থেমে বিমলবাবু বলেন, “কমিশনের কিন্তু বাইক-বাহিনী নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। বাইক-বাহিনী প্রচার করছে না। কমিশনের নির্দেশ পালিত হচ্ছে। আদালতে যা বলা হচ্ছে, তা রাজনৈতিক দলের কথা। বিরোধীদের প্রচার।”
বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় এ সময় মন্তব্য করেন, “বিরোধী দল মানেই খারাপ।”
অ্যাডভোকেট জেনারেলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কমিশনের আইনজীবী লক্ষ্মীচাঁদ বিয়ানি বলেন, “প্রচার পর্বে নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। প্রচার পর্বে কোথায় কত বাহিনী গিয়েছে, কমিশন তা সঠিক ভাবে জানে না। নির্বাচনেও রক্তপাত হচ্ছে।”
বিমলবাবু বলেন, “নির্বাচন পরিচালনার দায় কমিশনারের। রাজ্য সরকার কমিশনের নির্দেশ মতো বাহিনী, কর্মী ও অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ করবে। নির্বাচন পরিচালনা করবে কমিশন। তাই রক্তপাত বা অশান্তি এ সবেরই দায়ভার কমিশনকেই নিতে হবে।”
এই সময়ে বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় হস্তক্ষেপ করে বলেন, “প্রচার পর্বে কোথায় কত বাহিনী দেওয়া হয়েছে, তা কমিশনকে জানাতে হবে। কেন এখনও বাইক-বাহিনী চলছে, জানাক রাজ্য প্রশাসন। তৃতীয় দফার ভোটের আগে বাইক-বাহিনী বন্ধ নিশ্চিত করুক রাজ্য প্রশাসন।”
লক্ষ্মীচাঁদ বিয়ানি বলেন, “প্রচারের প্রতি পর্বে তিন সেকশন অর্থাৎ ৩০ জন করে পুলিশকর্মী থাকবে। এটা ৬ জুলাই রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠকে স্থির হয়েছিল। কিন্তু প্রতি ব্লকে কত পুলিশ পাঠানো হয়েছে, তা কমিশন জানে না।”
বিচারপতি বলেন, “দুই দফা ভোট শেষ হয়েছে। আরও তিন দফা নির্বাচন বাকি। তাই এই তিন পর্বে রাজ্য সরকার ও কমিশনের বৈঠকে বাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তা মানতে হবে।”
আজ, বৃহস্পতিবার থেকেই আট জনের স্পেশ্যাল অফিসার বাহিনী কাজ করবে বলে বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, সোমবার মামলাটির ফের শুনানি হবে। তবে এর মধ্যে কোনও পক্ষ যদি মনে করেন আদালতে কিছু জানানো দরকার, তা হলে তা তারা জানাতে পারবে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.