চার-চারটে জেটিঘাটের সবকটি’র অবস্থাই শোচনীয়। জেটিঘাটগুলি মাছধরা ট্রলারগুলি নিয়মিত ব্যবহার করলেও ঘাটগুলির সংস্কারে প্রশাসনের উদাসীনতা নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই মৎস্যজীবীদের।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানায় হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদীতে চারটি জেটিঘাট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিস্তর অভিযোগ মৎস্যজীবীদের। অথচ এই ঘাটগুলিতে যেমন মাছ ওঠানামার কাজ চলে তেমনই সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার সময় এখান থেকেই প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, জল সংগ্রহ করে। কিন্তু ঘাটগুলির বেহাল পরিকাঠামোয় মৎস্যজীবীদের সমস্যার শেষ নেই। সমস্যা আরও বাড়ে যখন ইলিশের মরশুম আসে। তখন ট্রলারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় পরিকাঠামোগত সমস্যা আরও ভয়ানক আকার নেয়।
প্রচুর ট্রলার এখান থেকে সমুদ্রে যাতায়াত করলেও হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদী নাগোয়া কোনও মৎস্যবন্দর নেই। সমস্যা মেটাতে বছর তিনেক আগে নামখানা পঞ্চয়েত সমিতির তরফে চারটি কংক্রিটের জেটিঘাট তৈরি করা হয়। ঘাটগুলিতে দাঁড়িয়ে মাছ ধরার ট্রলারগুলি বরফ, তেল, খাবার, পানীয় জল ইত্যাদি সংগ্রহ করত। কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই জোয়ারের জলরে ধাক্কায় চারটি ঘটারে অবস্থাই শোচনীয় হয়ে দাঁড়ায়। কংক্রিটে ফাটল দেখা দেয়। |
মাটি ধসে ঘাটের নীচের অংশ ফাঁকা হয়ে যায়। কিন্তু সংস্কার না হওয়ায় ওই অবস্থাতেই ঘাটে ওঠানামা চলছে। বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনা ঘটে গেলেও প্রশাসনের ঘাটগুলির সংস্কারের ব্যাপারে কোনও গা নেই। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ মৎস্যজীবীরা। তার উপর ভরা বর্ষায় ইলিশের মরশুম শুরু হওয়ায় আরও সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। জুন থেকে সেপ্টেম্বর, মূলত এই চার মাস ইলিশ ধরার মরশুম। এই সময় তিনশো থেকে চারশো ট্রলার সমুদ্র যায়। মাছ ধরে ফের তারা ফিরে আসে নামখানার ঘাটে। প্রায় তিনশো শ্রমিক ঘাটগুলিতে মাছ ওঠানামার কাজ করেন। শ্রমিকদের অভিযোগ, বেহাল ঘাটে কাজ করতে নিয়ে দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। ঘাটে কোনও আলোর ব্যবস্থা নেই। চারটি ঘাটই ভেঙেচুরে একেবারে বিপজ্জনক দশা। তবু পেটের দায়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে। কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, “ওই বেহাল জেটিঘাটগুলির সংস্কারের জন্য প্রশাসনের কাছে একাধিক বার আবেদন জানিয়েছি। কোনও কাজ০ই হয়নি।”
কেন ঘাটগুলির সংস্কার করা হয়নি?
কাকদ্বীপের বিধায়ক তথা রাজ্যের সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী মণ্টুরাম পাখিরা বলেন, “ওই চারটি ঘাটের সংস্কারের বিষয়ে আমি মৎস্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তবে এখন পঞ্চায়েত নির্বাচন চলায় এখন সংস্কারের কাজ করা যাচ্ছে না। নির্বাচনের পরে ঘাটগুলি সংস্কারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |