উত্তর-দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হাওড়ার বেশ কয়েকটি বুথে পুনর্নির্বাচন হল মঙ্গলবার। সর্বত্রই জোরদার ছিল নিরাপত্তা।
উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের সান্ডেরবিল পঞ্চায়েতের বাঁকড়া এলাকার ৬টি বুথে এ দিন ভোট হয়েছে। প্রায় ৬৭ শতাংশ ভোট পড়ে। বসিরহাট ১ ব্লকের গোঠরা গ্রাম পঞ্চায়েতেও লক্ষ্মণকাটি শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের একটি বুথে ফের ভোট হয়। এখানে প্রায় ৯১ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভোটের দিন গোঠরার ওই বুথে অনেক রাত পর্যন্ত ভোট চলছিল। গভীর রাতে ভুল খবরের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী ওই বুথে আসে। অনেক লোক দেখে তাদের সরাতে যায়। বচসা শুরু হয়। বাহিনী লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ করলে ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থীকে কেন্দ্রীয় বাহিনী মারধর করে বলে অভিযোগ। আহত তৃণমূল প্রার্থীকে বসিরহাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এর জেরে ভোট বন্ধ হয়ে যায়। এ দিন অবশ্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভোট শেষ হয়।
বনগাঁ মহকুমার বাগদা ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির ২০ নম্বর আসনের ১৪০ নম্বর বুথে প্রায় ৯০ শতাংশ ভোট পড়েছে। ১৯ তারিখের তৃতীয় দফা ভোটে পঞ্চায়েত সমিতির ১৯ নম্বর আসনের ব্যালট এই বুথে চলে আসায় নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। |
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং ২ ব্লকের কালিয়াতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮৮ ও ৮৯ নম্বর বুথেও নির্বাচন ছিল আজ। ভোটের দিন ওই বুথ দু’টিতে ভোটার স্লিপ ছিঁড়ে দেওয়া ও ভোটার স্লিপ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এ দিন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সকালে কিছু ভোটার ভোট দিতে এলেও বেলা ১২টার পর থেকে কেন্দ্রগুলি ফাঁকাই ছিল। কেন্দ্রের সামনে পুলিশ, র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স ও বিএসএফের নিরাপত্তারক্ষীরা থাকলেও ভোটারদের লাইন সে ভাবে চোখে পড়েনি। সংবাদমাধ্যমকেও বুথের ভিতর ঢুকতে দেওয়া হয়নি। দুই বুথে প্রায় ৬০ শতাংশ ভোট পড়েছে।
এ দিনও এই এলাকায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোটারদের বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে সিপিএম। দলের স্থানীয় নেতা মনোরঞ্জন দিয়াশীর অভিযোগ, “ওই দুই বুথে আমাদের কোনও এজেন্টকে বসতে দেওয়া হয়নি। ওদের হুমকিতে সাধারণ ভোটারেরাও ভোট দিতে যেতে পারেননি। সোমবার রাতে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়েছে তৃণমূল। প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে এ দিন এক তরফা ভোট করিয়েছে ওরা।”ক্যানিং ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি শওকত মোল্লা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, “যেখানে বুথের ধারে কাছে যাওয়ারই অনুমতি পাননি আমাদের জেলা পরিষদ প্রার্থী শাহজাহান মোল্লা, সেখানে ওদের এই অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন। প্রশাসন আমাদের প্রার্থীদেরও বুথের কাছে যেতে দেয়নি।” |
মহকুমাশাসক শেখর সেন বলেন, “কড়া পুলিশ নিরাপত্তার মধ্যে শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে।” ডায়মন্ড হারবার মহকুমার মন্দিরবাজার ব্লকের ৮৪ নম্বর বুথে, বারুইপুর মহকুমার জয়নগর ২ ব্লকের ১০০ নম্বর বুথে, কুলতলির ৯ নম্বর বুথে ও সোনারপুরের ৪৭ নম্বর বুথেও ফের ভোট নেওয়া হয় এ দিন। এই চারটি বুথেই ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ভোট পড়েছে।
এ দিন হাওড়ার ১৪টি বুথে পুনর্নির্বাচন হয়েছে। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এর মধ্যে ছিল পাঁচলার ৬৪, ৬৫, ৬৬ নম্বর বুথ, বাগনান-২ ব্লকের ১৯ ও ১০৬ নম্বর বুথ, ডোমজুড়ের ২১৪, ২৬৬, ২৭৪ নম্বর বুথ, আমতা-২ ব্লকের ১৪/১, ৫০, ৬৭ এবং ১৬৫ বুথ এবং জগৎবল্লভপুরের ২০ এবং ১৯২/১ নম্বর বুথ। সন্ধের মধ্যে সমস্ত জায়গায় ভোট প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়। ভোটের হার ছিল প্রায় ৬২ শতাংশ। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, দু’কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ও প্রায় ১০০ জন সশস্ত্র রাজ্য পুলিশ মোতায়েন ছিল। |