ষাটের বেশি? তা হলে আপনি ম্যাচ রেফারি নন
ন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যা নেই, এ বার ভারতে আসতে চলেছে সেই নিয়ম। ম্যাচ রেফারিদের বয়সসীমা নির্ধারিত হতে চলেছে ঘরোয়া ক্রিকেটে। ষাটের বেশি বয়সিদের এখন থেকে আর ম্যাচ রেফারির ভূমিকায় দেখা যাবে না।
অন্যান্য বেশির ভাগ পেশার মতোই এ বার ঘরোয়া ক্রিকেটের ম্যাচ রেফারিদের বয়সসীমা হচ্ছে ষাট। অর্থাৎ বাংলার রাজু মুখোপাধ্যায়-সহ বর্তমান বেশ কয়েক জন ম্যাচ রেফারিকে আসন্ন ঘরোয়া মরসুমে আর এই ভূমিকায় দেখা যাবে না। হঠাৎ কেন এই ষাট বছরের তত্ত্ব, তার কোনও ব্যাখ্যা নেই বোর্ডে। ষাটোর্ধ্বরা যদি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চাপ সামলে কাজ করতে পারেন, তা হলে তাঁরা ঘরোয়া ক্রিকেটে কেন করতে পারবেন না? আরও একটা প্রশ্ন উঠছে। এই বোর্ডই আগে একাধিক ষাটোর্ধ্ব ক্রিকেটারের হাতে ম্যাচ রেফারির দায়িত্ব তুলে দিয়েছিল। তা হলে কেন এখন এই ভোল বদল?
আগামী রবিবার কলকাতায় বোর্ডের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়তে চলেছে। কিন্তু মজা হল, বোর্ডের জেনারেল ম্যানেজার (গেম ডেভেলপমেন্ট) প্রফেসর রত্নাকর শেঠি যেখানে বলছেন, “এটা বোর্ডের আম্পায়ার্স কমিটির সুপারিশ”, সেখানে আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান নিরঞ্জন শাহ ও সদস্য এ ভি জয়প্রকাশ এমন কোনও সুপারিশের কথা জানেনই না। মঙ্গলবার ফোনে নিরঞ্জন বলেন, “আম্পায়ার্স কমিটির এমন কোনও সুপারিশের কথা আমার জানা নেই।” বোর্ডের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়া যেখানে আবার বলছেন, “এই সিদ্ধান্ত তো এক বছর আগেই নেওয়া হয়ে গিয়েছে”, সেখানে যাঁদের নিয়ে সিদ্ধান্ত, সেই রাজু মুখোপাধ্যায়, বেঙ্গালুরুর বি রঘুনাথ, পঞ্জাবের বলবীর সিংহরা এই খবর শুনে আকাশ থেকে পড়লেন।

২০০৬-২০০৭ মরসুমে ঘরোয়া ক্রিকেটে ম্যাচ রেফারি চালু হওয়ার পর থেকে ভারতীয় বোর্ড একাধিক ষাটোর্ধ্ব প্রাক্তন ক্রিকেটারকে ম্যাচ রেফারির দায়িত্ব দিয়েছে। তামিল নাড়ুর কল্যাণ সুন্দরম ও কর্নাটকের বিজয় কুমাররা যখন এই দায়িত্ব পেয়েছিলেন, তখনই তাঁরা ৬৩ পেরিয়ে গিয়েছেন। শ্রীনিবাস বেঙ্কটরাঘবনকে ৬৫ বছরের বেশি বয়সে আইপিএলে ম্যাচ রেফারি করা হয়। আইসিসি-তে ম্যাচ রেফারিদের কোনও বয়সসীমা নেই। রাজু মুখোপাধ্যায় আইসিসি-র ম্যাচ রেফারির মনোনয়ন পেয়েছিলেন ৬০ বছর বয়সে। অস্ট্রেলিয়ার অ্যালান হার্স্ট ও দক্ষিণ আফ্রিকার মাইক প্রোক্টর ষাট পেরনোর পরও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই ভূমিকা পালন করেছেন। বর্তমানে আইসিসি-র আফ্রিকা অঞ্চলের ম্যাচ রেফারি দেবদাস (ডেভ) গোবিন্দজির বয়স ৬৬। অবশ্য আইসিসি-র ম্যাচ রেফারিদের বর্তমান এলিট প্যানেলে কোনও ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি নেই। তবে আইসিসি ম্যাচ রেফারিদের কোনও বয়সসীমাও নেই। “ক্রিকেটে যে কাজে শারীরিক পরিশ্রমের চেয়ে অভিজ্ঞতা ও পরিণত মস্তিষ্কই বেশি জরুরি, সেখানে বয়সসীমার প্রয়োজনই বা কী?”, প্রশ্ন বাতিল হতে চলা এক ম্যাচ রেফারির।
কিন্তু হঠাৎ বোর্ড কর্তাদের মাথায় এই তত্ত্ব এল কোথা থেকে? ডালমিয়ার কাছে এই সিদ্ধান্তের কারণ জানতে চাওয়া হলে বলেন, “সব জায়গাতেই যে কারণে অবসরের বয়স ষাট, সেই কারণেই।” আসন্ন ওয়ার্কিং কমিটির সভায় অবসরের সিদ্ধান্তে চূড়ান্ত সিলমোহর পড়ার কথা থাকলেও ডালমিয়ার বক্তব্য, “সিদ্ধান্ত হয়েই গিয়েছে। আবার নতুন করে আলোচনার প্রশ্ন উঠছে কেন?”
ষাটোর্ধ্ব ম্যাচ রেফারিরা বোর্ডের এই সিদ্ধান্তে বেশ ক্ষুব্ধ। ক্ষুব্ধ বোর্ডের টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান অনিল কুম্বলেও। রবিবারের সভায় এই প্রসঙ্গ উঠলে তিনি বয়সসীমার বিরুদ্ধে যুক্তি দিতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু এরই মধ্যে বাংলা থেকে রাজুর বদলে কে প্রতিনিধিত্ব করবেন, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। শোনা যাচ্ছে দেবাঙ্গ গাঁধীকে এই দায়িত্ব নেওয়ার জন্য তৈরি থাকতে বলা হয়েছে।

ষাটের গেরোয়

বয়স ৬৩
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে
ডিসেম্বর ২০০৬ থেকে জানুয়ারি ২০১৩। মোট ৩৩ টি ম্যাচ।

বয়স ৬৪
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে
সেপ্টেম্বর, ২০০৩ থেকে ডিসেম্বর ২০১২।
মোট ৪৪টি ম্যাচ।

বয়স ৬৪
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে
নভেম্বর, ২০০০ থেকে ডিসেম্বর ২০১২।
মোট ২৭টি ম্যাচ।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.