কয়েক দিন বৃষ্টির পর দু’দিন ধরে রোদ হতেই ডাম্পিং গ্রাউন্ড থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে। তার উপর পুর কর্মীরা ডাম্পার দিয়ে আবর্জনার স্তূপ ঘাটায় আরও বেশি করে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে অভিযোগ তুলে কাজে বাধা দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মঙ্গলবার বেলা ১০টা নাগাদ ডাম্পিং গ্রাউন্ড লাগোয়া চয়নপাড়া, বৈকুন্ঠপল্লি-সহ আশপাশের এলাকার মহিলারা ডাম্পিং গ্রাউন্ডে গিয়ে কাজ করতে বাধা দেন। ঘন্টাখানেক পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
পুরসভার সাফাই বিভাগের মেয়র পারিষদ স্বপন চন্দ বলেন, “বাসিন্দাদের সমস্যার কথা আমরা জানি। তাদের সুবিধার জন্য ডাম্পিং গ্রাউন্ড এলাকায় সীমানা পাঁচিল দেওয়া হয়েছে। নতুন যন্ত্র কিনে সঠিক ভাবে যাতে আবর্জনা ডাম্পিং গ্রাউন্ডের ঘেরা জায়গায় ফেলা যায় তা দেখা হচ্ছে। গাছ লাগানোর পরিকল্পনা হয়েছে। অথচ এ ভাবে মাঝে মধ্যেই কাজে বাধা দেওয়া ঠিক নয়।” তাঁর দাবি, বর্জ্য থেকে সার বা বিদ্যুৎ তৈরির চেষ্টা চলছে। তা না হওয়ায় পর্যন্ত আবর্জনা নষ্ট করতে সঠিক ভাবে মাটি চাপা দেওয়া এবং বিশেষ রাসায়নিক ব্যবহার করা হবে।
পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, গাড়ি যাতে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের ভিতরে ঢুকে বিভিন্ন জায়গায় বর্জ্য ফেলতে পারে সে জন্য আবর্জনা সরিয়ে রাস্তা তৈরি করতে হয়। ডাম্পার দিয়ে তা সরানোর কাজ করতে হয়। তা ছাড়া মাটি খুড়ে আবর্জনা চাপা দেওয়ার কাজও রয়েছে। এ দিন সকাল থেকে সে সব কাজই চলছিল। |
এলাকার বাসিন্দা অইন্যা রায়, বুলবুলি রায়, শকুন্তলা রাই, বিনেতা রাইদের অভিযোগ, বৃষ্টিতে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ফেলা আবর্জনা কয়েকদিন ধরে ভিজেছে। এখন সেগুলি ঘাঁটাতেই দুর্গন্ধে এলাকায় টেকা যাচ্ছে না। বাড়ির লোকেরা খেতে, বসতে, ঘুমতে পারছেন না। সে কারণেই এ দিন কাজ বন্ধ করতে বলা হয়। অইন্যা দেবী বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই সমস্যার কথা বলা হচ্ছে। পুর কর্তৃপক্ষ সমস্যা মেটাতে যথাযথ গুরুত্ব দিচ্ছেন না।” বাসিন্দাদের অভিযোগ, শুধু দুর্গন্ধ নয়, ডাম্পিং গ্রাউন্ডের আবর্জনা বর্ষার জলের সঙ্গে গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। কুয়োর জলে মিশছে। অনেকের বাড়ির কুয়োর জল তাই ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। ডাম্পিং গ্রাউন্ডের সমস্যা নিয়ে সরব এলাকার সচেতনতা জাগরণ কমিটি। কমিটির সম্পাদক সুজিত বিশ্বাস বলেন, “বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ করতে কোনও ব্যবস্থাই এখনও পুর কর্তৃপক্ষ নিতে পারেননি। অথচ এলাকায় দুর্গন্ধে বসবাস করা দায় হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন স্কুল কলেজও রয়েছে। সমস্যায় পড়েছে তারাও। পাঁচিল দেওয়া হলেও প্রায়ই তার বাইরে রাস্তার উপর আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। তাতেও সমস্যা বেড়েছে।” |