দূষণবিধি ভঙ্গের নালিশ, মানতে নারাজ এসার
রিবেশ বিধি ভঙ্গের অভিযোগ ওঠায় এসার অয়েল কর্তৃপক্ষকে কাজ বন্ধ রাখা এবং পাঁচ লক্ষ টাকার ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি জমা করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রন পর্ষদ। এক জমিমালিকের অভিযোগের তদন্ত করে গত ১৫ জুলাই এই নির্দেশ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সংস্থা সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, কোনও বেনিয়ম হয়নি। যাবতীয় অনুমোদন নিয়েই কাজ হচ্ছে।
রানিগঞ্জ কোল বেড মিথেন (সিবিএম) ব্লক থেকে গ্যাস তুলে সরবরাহ করার বরাত পেয়ে ২০০৮ সাল থেকে কাজ শুরু করেছে এসার। এর জন্য কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের অনুমোদন লাগে। ২০০৮-এর পরে ২০১১ সালে সংস্থাটি দ্বিতীয় দফা খননের অনুমোদন পায়। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি তৃতীয় দফায় প্রায় সাড়ে ছ’শো কুয়ো খোঁড়া ও পাইপলাইন পাতার অনুমতি মিলেছে। নিয়ম অনুযায়ী, কাজ শুরুর আগে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছেও অনুমতি নিতে হয়। এই দফায় আপাতত শতাধিক কূপ খননের অনুমতি চেয়ে এসার আবেদন করেছিল। কিন্তু তা পাওয়ার আগেই তারা ফরিদপুর (লাউদোহা) থানা এলাকার নাচনে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে দেয় বলে অভিযোগ।
দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের ‘এ’ জোনে শিবাজি রোডের বাসিন্দা প্রতাপকুমার সরকার গত এপ্রিলের শেষে বর্ধমান জেলাশাসকের কাছে এসারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের লিখিত অভিযোগ জানান। দুর্গাপুর থানাতেও অভিযোগের প্রতিলিপি পাঠিয়ে তিনি জানান, তিনি ও তাঁর বন্ধুরা মিলিয়ে মোট ১৬ জন নাচন-ধবনি রাস্তার পাশে বিঘা চারেক জমি কিনেছেন। সেই জমির গা দিয়েই এসারের পাইপলাইন পাতা হয়েছে।
প্রতাপবাবুর অভিযোগ, পাইপলাইন পাতার আগে জমির মালিকদের কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। জলের পাইপলাইন পাতার নাম করে পাশে একটি অতিরিক্ত পাইপলাইন পাতছেন কর্তৃপক্ষ। সেই পাইপের উপরে ‘হাইলি ইনফ্লেমেবেল পাইপলাইন বিলো, এসার অয়েল লিমিটেড’ লেখা ফিতে পেতে তা মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। তাঁর সংশয়, “ওখানে যে গ্যাসের পাইপলাইন পাতা হল, আমরা ভবিষ্যতে বাড়ি করার অনুমতি পাব তো?”
প্রতাপবাবুর এই অভিযোগের ভিত্তিতেই গত ৫ জুলাই এসার অয়েলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রন পর্ষদের আধিকারিকেরা এলাকা পরিদর্শন করেন। দেখা যায়, নাচন গ্রামের কাছে কূপ (ইডিডি ৫৩) খনন শুরু করে দিয়েছেন এসার অয়েল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তার জন্য নিয়মমাফিক পর্ষদের থেকে ‘কনসেন্ট টু এস্টাবলিশ’ নেওয়া হয়নি। পুলিশ জানায়, কেন্দ্রীয় পরিবেশ ও বন মন্ত্রক এবং জেলা পরিষদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই তাঁরা কাজ করছেন বলে এসারের তরফে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও অনুমতিপত্র তাঁরা পুলিশকে দেননি।
গত ১৫ জুলাই দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ নির্দেশ দেয়, এসারকে আপাতত ওই এলাকায় কাজ বন্ধ রাখতে হবে। এক বছরের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক গ্যারান্টিও জমা রাখতে হবে। তা জমা দিতে হবে ১৫ দিনের মধ্যে। পর্ষদের দুর্গাপুর কার্যালয়ের আধিকারিকেরা সংস্থার কাজকর্মের উপর নজর রাখবেন। তবে এসার অয়েল কর্তৃপক্ষ কোনও অভিযোগই মানতে চাননি। সংস্থার ডিজিএম দেবজিত্‌ কর এবং কর্পোরেট কমিউনিকেশন দফতরের অফিসার রবীন ঘোষ দাবি করেন, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি নিয়েই কাজ চলছে।
সংস্থার এক মুখপাত্রের দাবি, “বসতি থেকে পাইপলাইনের দূরত্ব ন্যূনতম ৩০০ মিটার হওয়ার কথা থাকলেও আমরা প্রায় ৫০০ মিটার দূরত্বে পাইপ বসিয়েছি।” রবীনবাবু বলেন, “ব্যাঙ্ক গ্যারান্টির বিষয়টি ঠিক জানি না। খোঁজ নিয়ে বলব।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.