|
|
|
|
কাকিমা, দুই ভাইকে খুন করল যুবক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলচর |
কাকার বাড়িতে নিমন্ত্রণে গিয়ে কাকিমা এবং দুই ভাইকে খুন করে থানায় আত্মসমর্পণ করল এক যুবক। নিলামবাজার থানার শ্রীদুর্গাপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ জানায়, রান্নাঘরে ধারালো অস্ত্রে কুপিয়ে খুন করা হয় বকুলরানি দেব(৬০) এবং অনিত দেবকে(৩০)। অসীমের ক্ষতবিক্ষত দেহ পড়েছিল বাড়ির দরজার সামনে। আত্মসমর্পণের পর রাধু দেব (৩০) পুলিশকে জানায়, সেই তিন জনকে খুন করেছে। তবে তদন্তকারীদের সন্দেহ, ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে।
পুলিশ সূত্রের খবর, আজ সকালে বাড়ির দরজার সামনে অসীমের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন দেব পরিবারের পড়শিরা। তাঁরা বাড়ির ভেতরে ঢুকে দেখেন, রান্নাঘরে পড়ে রয়েছে মা এবং এক ছেলের দেহ। ডাকাতির কথাই সকলের সন্দেহ হয়েছিল। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রক্তমাখা দা উদ্ধার করে।
এর পরই থানায় হাজির হয় রাধু। তার স্বীকারোক্তি, ‘আমার বাড়ি একই গ্রামে। কাকার বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে। কাকিমার নিমন্ত্রণ পেয়ে রাতে খেতে গিয়েছিলাম। শুরু থেকেই কেমন লাগছিল। হঠাত্ নেমন্তন্ন! খেতে গিয়ে সন্দেহটা পোক্ত হয়। মা এবং দুই ছেলেতে ফিসফিস করে কী সব বলছিল। অনুমান করে নিতে কষ্ট হয়নি, আমাকে খুন করার চক্রান্ত হয়েছে। সে সুযোগ আমি তাদের দিইনি। তাদের ঘরের দা দিয়েই প্রথমে কাকিমা, অনিলকে কুপিয়ে মারি। পরে অসীমকেও একই ভাবে খুন করেছি।’
করিমগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে কে গুপ্ত বলেন, ‘‘বকুলরানির দেহে আট বার কোপ বসানো হয়। অনিল-অসীমের গলা-পেট-ঘাড়েও তিন চারটি কোপ ছিল। একা রাধুর পক্ষে এ কাজ করা কতটা সম্ভব, তা ভাবতে হবে।’’
বকুলদেবীর এক ছেলে অনুজবাবু নগাঁওয়ে থাকেন। বিধবা মা এবং দুই ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে আজই এসে পৌঁছান নিলামবাজারে। পরপর তিন জনকে মুখাগ্নি করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি জানান, বাবা মারা যাওয়ার পর কষ্ট করে মা তাঁদের মানুষ করেছেন। তাঁর কথা ভেবে ছোটবেলা থেকেই চার ভাই চাকরি শুরু করেন। নিহত দুই ভাই মেঘালয়ের জোয়াইয়ে ব্যবসা করতেন। তিনি নগাঁওয়ে ছাতার দোকানে কাজ করেন। সবচেয়ে ছোট অরূপ বেঙ্গালুরুতে কর্মরত। বকুলদেবী একাই থাকতেন বাড়িতে। অনুজের কথায়, ‘‘অনেক দিন থেকেই রাধু মা-কে জ্বালাতন করছিল। পরে সে বেঙ্গালুরুতে কাজ জুটিয়ে চলে গেলে স্বস্তি পেয়েছিলাম সবাই। কিন্তু দিন দশেক আগে বাড়ি আসে সে। প্রায় একই সময়ে আসে অনিল-অসীমও। আর তখনই এই কাণ্ড।’’ |
|
|
|
|
|