|
|
|
|
মণিপুরের পাহাড়ে মিলল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের রণাঙ্গন |
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি |
মণিপুরের প্রত্যন্ত পাহাড়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ‘রণাঙ্গন’ খুঁজে পেলেন একদল অভিযাত্রী।
সময়টা ছিল ১৯৪৪ সালের এপ্রিল মাস। নেতাজি-র ডাকে তখন ইম্ফলের কাছে পৌঁছে গিয়েছে জাপানের বাহিনী। তাদের রুখতে জওয়ানদের পাঠায় ইংরেজরাও। মণিপুরের নুংসিগুমের পাহাড়ে দু’পক্ষে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। জাপানিদের মেশিনগানের গুলিতে জখম হয়েও লড়াই চালিয়ে যান ইংরেজ-বাহিনীর ভারতীয় জওয়ান আব্দুল আজিজ। ‘রান-অ্যাওয়ে হিল’ নামে পরিচিত নুংসিগুমের ওই পাহাড়েই শনিবার জাপানিদের বাঙ্কারের ধ্বংসাবশেষ, মেটাল ডিটেক্টর, কার্তুজ, জাপ-বাহিনীর জওয়ানদের বেল্টের পিতলের টুকরো, জাপানি ঘড়ি, মেশিনগানের গুলি, বিভিন্ন ধরনের কামানের গোলা, বোমার অংশ-সহ একাধিক ঐতিহাসিক স্মারকের হদিস পেয়েছেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অভিযাত্রীরা।
মণিপুরে ‘কোহিমা-ইম্ফলের’ যুদ্ধে ৫৫ হাজার জাপ-সেনা এবং প্রায় ১৩ হাজার ব্রিটিশ-ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়েছিল। আগামী বছর ওই যুদ্ধ সাত দশক পূরণ হবে। সে দিকে নজর রেখে মণিপুরের প্রত্যন্ত এলাকায় চোখের আড়ালে থাকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ‘স্মারক’-এর খোঁজ চালাচ্ছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। ইংরেজ-বাহিনীর এক জওয়ানের ডায়েরি থেকেই ওই পাহাড়ের হদিশ পায় সংগঠনটি।
ইতিহাসবিদেরা জানিয়েছেন, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ডাকে মইরাং পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া ‘১৫ নম্বর জাপানিজ আর্মি’কে ইম্ফলের সীমানার বাইরে রুখে দিয়েছিল ইংরেজ বাহিনী। জাপানিরা তখন বিষ্ণুপুর, চূড়চাঁদুপুর এবং ইম্ফলের বিভিন্ন পাহাড়ে বাঙ্কার তৈরি করে। এমনই একটি জাপ-ঘাঁটি ছিল সালোংগাম থেকে ইয়ুমনামখুনৌ যাওয়ার পথের মাঝখানে নুংসিগুম। সেখানে ৩১২৪ ফুট উঁচু একটি পাহাড়ের চূড়ায় ছিল জাপ-বাহিনী।
১৯৪৪ সালের ৬ এপ্রিল। ইংরেজ বাহিনীর কোম্পানি কম্যান্ডার মেজর ডব্লিউ ডি রিটসে, ওই পাহাড়ের জাপ-ঘাঁটি দখল করতে নির্দেশ দেন জমাদার আব্দুল আজিজকে। কামান দেগে জাপানের বাহিনীর প্রতিরোধ ভেঙে বাহিনীকে নিয়ে পাহাড়ে উঠতে থাকেন আজিজ। তাঁদের দিকে মেশিনগান থেকে গুলি চালাতে থাকে জাপানিরা। জখম হলেও জাপ-বাঙ্কারগুলি দখল করেন ইংরেজ বাহিনীর নেতা আজিজ। পালায় জাপানিরা। পরে ওই পাহাড়েই মৃত্যু হয় গুলিতে গুরুতর জখম আজিজের।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া সামগ্রীগুলি নিয়ে ‘ইম্ফল ওয়ার মিউজিয়াম’ তৈরি হবে। |
|
|
|
|
|