|
|
|
|
জমি দিতে নারাজ |
গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে গুলি, হত ১ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রাঁচি |
খনি, বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য জমি দিতে নারাজ গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ রণক্ষেত্রের চেহারা নিল। পুলিশের গুলিতে হত এক বিক্ষোভকারীর। জখম চার। আজ হাজারিবাগের কেরেডারি ব্লকের চাট্টি বরিয়াতুতে ঘটনাটি ঘটে।
এ নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন। দোষী পুলিশকর্মীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে হাজারিবাগ-রাঁচি সড়ক অবরোধ করেন গ্রামের মানুষ। পোড়ানো হয় মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের কুশপুতুল। প্রতিবাদে বুধবার হাজারিবাগ বন্ধ ডেকেছে বিজেপি এবং ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম তারকেশ্বর মাহাতো (৩০) ওরফে কেশর। রাত পর্যন্ত তাঁর দেহ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। ফের কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি রুখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, কেরেডারি ব্লকের চাট্টি বরিয়াতুতে খনি এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরির জন্য পাঁচ বছর ধরে সাধারণের জমি অধিগ্রহণ করতে চাইছে ‘ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশন’ (এনটিপিসি)। কিন্তু গ্রামের মানুষ জমি দিতে নারাজ।
তাঁদের অভিযোগ, ঠিকাদারের মাধ্যমে এলাকা দখল করতে চাইছে এনটিপিসি। দুপুরে প্রদীপ সিংহ নামে ওই সংস্থারই এক ঠিকাদার চাট্টি বরিয়াতুতে সাইট অফিস তৈরির কাজ শুরু করেন। তাঁকে বাধা দেন গ্রামের মানুষ। ওই সময়ই ঠিকাদারের ছেলে পিন্টু এক গ্রামবাসীর পিঠে শাবলের কোপ বসিয়ে দেয়। এর পরই ঠিকাদার ও তাঁর লোকজনের সঙ্গে গ্রামবাসীদের গোলমাল বাঁধে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ঠিকাদারের ছেলে পিন্টুকে ধরেন গ্রামবাসীরা। পুলিশে খবর দিলেও প্রথমে পুলিশ আসেনি। ঠিকাদারও থানায় ফোন করেন। পিন্টুকে উদ্ধার করতে গ্রামে যায় পুলিশ। তখনই পুলিশ ও গ্রামবাসীদের মধ্যে গোলমাল হয়।
পুলিশের দাবি, গ্রামবাসীরা তাঁদের ইট-পাথর ছুঁড়তে থাকে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুলিশ কোনও কথা শুনতে চায়নি। পিন্টুকে ছাড়াতে এসেছিল। বাধা দিলে পুলিশ গুলি চালায়। জখম হন নানু মাহাতো, রাহুল মাহাতো, মাখন রাম, রমেশ মাহাতো নামে চার গ্রামবাসী।
রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব কুমারের বক্তব্য, পুলিশের ওপরে আক্রমণ হওয়ায় তারা গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে। তিনি বলেন,“গ্রামের মানুষ নিজেদের হাতে আইন তুলে নিতে চাইছিলেন। পুলিশ বাধা দেয়। কিন্তু পুলিশকেই নিশানা করে গ্রামবাসীরা। তদন্ত হবে।”
এনটিপিসি অবশ্য ঘটনার দায় নিতে চায়নি। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই ঠিকাদার সেখানে তাঁর নিজের অফিস খুলতে গিয়েছিল। তার সঙ্গে এনটিপিসি-র যোগাযোগ নেই।
গ্রামবাসীদের চাষের জমি অধিগ্রহণ করে বিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির বিরোধিতা করছে একটি মানবাধিকার সংগঠনও। সংগঠনের সদস্য গোপীনাথ ঘোষ জানান, সকাল ন’টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। প্রথমে গ্রামের মানুষই পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন। কিন্তু তখন পুলিশ আসেনি। পরে ঠিকাদারের লোকজন পুলিশকে খবর দেওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গুলি চালায়। |
|
|
|
|
|