রাহুলের কর্মশালা
কংগ্রেসের মত কী, নেতাদের মনেই এখনও বিভ্রান্তি
রাজ্যওয়াড়ি কংগ্রেস মুখপাত্রদের দু’দিনের জন্য এক কর্মশালায় ডেকে গত কাল রাহুল গাঁধী জানিয়ে দিয়েছিলেন, লোকসভা ভোটের আগে যে কোনও বিষয়ে যেন সমস্বরে কথা বলেন দলীয় নেতৃত্ব। তাঁর এও ফরমান, দলীয় মতের বাইরে কোনও মত প্রকাশ করলে প্রয়োজনে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট নেতার বিরুদ্ধে।
কিন্তু বিভিন্ন বিষয়ে দলীয় লাইন আদপে কী তা নিয়েই বিভ্রান্তি রয়েছে কংগ্রেসে। কংগ্রেস নেতাদের মতে, ওই বিভ্রান্তির কারণেই মাঝে মাঝে এক এক নেতা এক এক ধরনের কথা বলেন। যেমন রাহুল গাঁধীকে লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরা হবে কি না তা হাইকম্যান্ড এখনও স্পষ্ট করেনি। তাই কখনও দিগ্বিজয় সিংহের মতো শীর্ষ নেতা জানাচ্ছেন, নির্বাচনের আগে রাহুলকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে তুলে ধরা হবে না। পর ক্ষণেই ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য জনার্দন দ্বিবেদী বলছেন, ভোটের আগে যথাসময়ে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আবার গত কাল কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী অস্কার ফার্নান্ডেজ বলেছেন, রাহুল গাঁধীই প্রধানমন্ত্রী হবেন!
অমেঠিতে রাহুল-প্রিয়ঙ্কা। মঙ্গলবার। ছবি: পি টি আই।
শুধু রাহুলের প্রসঙ্গেই নয়, নরেন্দ্র মোদীর ঠিক কতটা সমালোচনা করা হবে তাও স্পষ্ট নয়। রাজ্যওয়াড়ি কংগ্রেস মুখপাত্রদের নিয়ে কর্মশালায় প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন জয়রাম রমেশ। মোদীকে ‘ভস্মাসুরের’ সঙ্গে তুলনা করায় তাঁকেই দলের তরফে সমঝে দেওয়া হয়েছিল।
কংগ্রেসের মধ্যে এই বিভ্রান্তি আজও প্রকট হয়েছে। দু’দিন আগে কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদ বলেছিলেন, গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গার কারণেই ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের জন্ম হয়েছিল। এ ব্যাপারে এনআইএ-র রিপোর্ট উদ্ধৃত করেছিলেন শাকিল। তাতে বিতর্ক শুরু হয়েছে। পরে কংগ্রেস মুখপাত্র রেণুকা চৌধুরি বলেন, “শাকিলের ওই মত তাঁর ব্যক্তিগত।” আজ আবার কংগ্রেস মুখপাত্র রাজ বব্বর বলেন, শাকিল আহমেদ এক জন বিচক্ষণ এবং অভিজ্ঞ নেতা। তিনি এনআইএ-র রিপোর্ট উদ্ধৃত করে একটি মন্তব্য করেছেন মাত্র। তা হলে কংগ্রেসের প্রকৃত অবস্থান কী? জবাবে রাজ বব্বর বলেন, “বাজে কথা বোলো না, বাজে কথা শুনো না এবং বাজে জিনিস দেখো না।”
তবে কংগ্রেস নেতা মীম আফজল আজ জানান, বিভিন্ন বিষয়ে দলের অবস্থান নেতা-কর্মীদের জানানোর প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা রাহুল গাঁধী শুরু করতে চলেছেন। কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের জন্য ‘খিড়কি’ নামে একটি সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে। তার মাধ্যমে হাইকম্যান্ডের তরফে যেমন মতামত জানানো হবে, তেমনই নেতা-কর্মীরা তাঁদের মতও জানাতে পারবেন।
এই সব তর্ক-বিতর্কের পাশাপাশি রাজ্যওয়াড়ি কংগ্রেস মুখপাত্রদের নিয়ে কর্মশালা আজও চলেছে। লোকসভা ভোটের আগে মুখপাত্ররা কী ভাবে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাব দেবেন তা নিয়ে আজ তাঁদের প্রশিক্ষণ দেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী মণীশ তিওয়ারি এবং দলের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র সঞ্জয় ঝা। সূত্রের খবর, সাংবাদিক বৈঠকে মন্তব্য করা নিয়ে মুখপাত্রদের মণীশ সতর্ক করে দেন। তাঁর পরামর্শ, পরে ক্ষমা চাইতে হয় এমন কোনও মন্তব্য না করাই ভাল। নরেন্দ্র মোদীর প্রসঙ্গে দলের অবস্থানের বাইরে না যেতে মুখপাত্রদের সতর্ক করে দেন তিনি। ঘরোয়া আলোচনাতেও সাংবাদিকদের বেফাঁস কথা না বলার পরামর্শ দিয়েছেন সঞ্জয় ঝা।
তবে এর পরেও কংগ্রেসের একাধিক শীর্ষ নেতা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বিভিন্ন বিষয়ে হাইকম্যান্ড অবস্থান স্পষ্ট না করলে বিভ্রান্তি থাকবেই। কর্মশালা করে তা রোখা যাবে না।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.