অপহরণের সাত দিন পরে, সোমবার সকালে আফ্রিকার জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পেলেন ‘এম টি কটন’ জাহাজের ভারতীয় ক্যাপ্টেন এবং ২৪ জন নাবিক। গত ১৫ জুলাই পশ্চিম আফ্রিকার গ্যাবনের নিকটবর্তী জেন্টিল বন্দর থেকে মাল বোঝাই করে বেরোনোর পরেই জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল জাহাজটি।
তুরস্কের জাহাজ সংস্থা গেডেন লাইন-এর পক্ষ থেকে সোমবার জানানো হয়, এ দিন ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ এম টি কটন জাহাজের ক্যাপ্টেন, কলকাতার আলিপুরের বাসিন্দা শিশির ওয়াহি এবং ২৪ জন ভারতীয় নাবিক জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছেন। সকলেই নিরাপদে আছেন। জলদস্যুরা যখন তাঁদের মুক্তি দেয়, তখন জাহাজটি নাইজেরিয়ার নিকটবর্তী সমুদ্রে ছিল। জাহাজটিকে কাছাকাছি কোনও বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
তুরস্কের ওই জাহাজ সংস্থা আরও জানায়, জাহাজের ক্যাপ্টেন শিশির ওয়াহি এবং নাবিকেরা তাঁদের বাড়িতে ফোন করে জানিয়েছেন, তাঁরা সুস্থ এবং নিরাপদে রয়েছেন। একটি সূত্রের খবর, জলদস্যুরা জাহাজটিকে নিজেদের দখলে নেওয়ার পরে স্যাটেলাইট ফোনগুলি বিকল করে দেয়। মুক্তি পাওয়ার পরে নাবিকেরা দু’টি স্যাটেলাইট ফোন সারাতে পেরেছেন। ওই দু’টি ফোন থেকে ক্যাপ্টেন ও নাবিকেরা তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
ওয়াহিদের পারিবারিক সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বাড়িতে ফোন করেন শিশিরবাবু। স্ত্রী প্রীতি ওয়াহির কাছে বাড়ির খবর নেন। তিনি জানতেন না যে, অপহরণের দিনেই তাঁর পরিবার জেনে গিয়েছিল, জলদস্যুরা তাঁদের বন্দি করে রেখেছে।
১৫ জুলাই বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ জাহাজ সংস্থা গেডেন লাইনের শাখা অফিস মুম্বইয়ের ‘ভি-শিপস’ থেকে শিশিরবাবুর আলিপুরের বাড়িতে ফোন করে জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। এম টি কটনের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। দু’ঘণ্টা পরে শিশিরবাবুর স্ত্রী জাহাজ সংস্থার মুম্বইয়ের শাখা অফিস ‘ভি শিপস’-এ ফোন করেন। সেই অফিস থেকে তাঁকে জানানো হয়, আশঙ্কা করা হচ্ছে, ওই জাহাজ আফ্রিকার জলদস্যুদের কবলে পড়েছে।
‘ভি শিপস’-এর পক্ষ থেকে এ দিন জানানো হয়, গেডেন লাইন তুরস্কের জাহাজ সংস্থা। তাই জাহাজের ক্যাপ্টেন ও নাবিকদের মুক্তির ব্যাপারে মধ্যস্থতা করেছে সে-দেশের বিদেশ মন্ত্রক। এ বিষয়ে তুরস্কের পক্ষ থেকে গ্যাবন সরকারের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছিল বলে জাহাজ সংস্থা সূত্রের খবর। ‘ভি শিপস’-এর ক্যাপ্টেন বৈভব দলভি জানান, জাহাজের ক্যাপ্টেন ও নাবিকদের মুক্তিই তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে জলদস্যুরা কোনও মুক্তিপণ চেয়েছিল কিংবা জাহাজের মালপত্র লুঠ করেছে কি না, সেই বিষয়ে কোনও তথ্য তাঁদের কাছে নেই। |