বেশি রাতের পার্টি, উশৃঙ্খল জীবন যাপন-এ সব আর করতে পারবেন না টোলগেরা। মহমেডানের নতুন কোচ আবদুল আজিজ কার্যত ফতোয়া জারি করেই সাদা-কালো ফুটবলারদের নৈশ জীবনে ইতি টেনে দিলেন।
রবিবারের অনুশীলনে ফুটবলারদের ডেকে আজিজ বলে দিয়েছেন, “ভাল ফুটবল খেলতে গেলে আদর্শবান হওয়া দরকার। শৃঙ্খলাপরায়ণ হতে হবে। আর সে জন্য নৈশ পার্টিতে যাওয়া বা মদ খাওয়া বন্ধ করতে হবে।”
আসলে, মরসুমের শুরু থেকেই শক্ত হাতে ফুটবলারদের জীবনযাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেন মহমেডানের নতুন কোচ। ময়দানের বেশির ভাগ ফুটবলারই ‘লেট নাইট’ পার্টিতে অভ্যস্ত। তবে নৈশ পার্টি বা নেশায় আসক্ত হয়ে বহু ফুটবলারের জীবনই নষ্ট হয়েছে। ময়দানেও এই ঘটনা নতুন নয়। নিকট অতীতে লালম পুঁইয়া এর অন্যতম বড় উদহরণ। লালমের মতো প্রতিভাবান ফুটবলার শুধুমাত্র নেশায় আসক্ত হয়ে ফুটবল থেকেই হারিয়ে গেছেন। বিদেশের ফুটবলেও এ রকম বহু উদাহরণ রয়েছে। পল গ্যাসকয়েন, জর্জ বেস্টদের নাম তো এ ক্ষেত্রে সবার আগে মনে পড়ে যায়। সেজন্যই বোধহয় মরসুমের শুরু থেকেই ফুটবলারদের জন্য ‘ডুজ অ্যান্ড ডোন্টস’ ঠিক করে দিচ্ছেন আজিজ। এ দিন অনুশীলনের পর মহমেডান কোচ বললেন, “ফুটবলারদের ভাল-র জন্যই একটা নিয়মে ওদের বাঁধতে চাইছি। উশৃঙ্খল হলে ফুটবলার জীবন বেশি দিন টানা যায় না।”
মহমেডান ফুটবলাররা অবশ্য কোচের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছেন। সাদা-কালোর অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার টোলগে ওজবে বলে দিলেন, “কোচ একেবারে ঠিক কথা বলেছেন। আদর্শবান ফুটবলার হতে গেলে কিছু নিয়ম মেনে চলা দরকার।” আবার অসীম বিশ্বাস বললেন, “হার্ড অনুশীলনের পর কোচ ফুটবলারদের পুরো রেস্ট নিতে বলেছেন। নৈশ পার্টি করলে আমাদেরই ক্ষতি হবে।” পাইতে বলছিলেন, “মদ খাওয়া, উশৃঙ্খল জীবন কাটানো মানে নিজের ক্যারিয়ারের ক্ষতি করা। কোচের কথা শুনে চললে আমরাই লাভবান হব।”
|
বালিতে অভিনব প্র্যাক্টিস মহমেডানের। রবিবার রেস কোর্সে।—নিজস্ব চিত্র |
এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই কর্তাদের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন আজিজ। সব ফুটবলার অনুশীলনে যোগ দিলে পেন-টোলগেদের নিয়ে আলাদা করে একটি ক্লাসও নিতে চান তিনি। কোচের এই উদ্যোগে নিঃসন্দেহে খুশি মহমেডান কর্তারাও। সভাপতি সুলতান আহমেদ বললেন, “আজিজ খুব ভাল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা সব রকম ভাবে ওকে সাহায্য করতে তৈরি রয়েছি।” এরই সঙ্গে ফুটবলারদের উদ্দেশে সভাপতির কড়া বার্তা, “কোনও ফুটবলার যদি কোচের এই নিয়ম না মানে তবে শাস্তি পেতে হবে তাঁকে।” এ দিকে প্রথম দিন হালকা অনুশীলন করালেও, এ দিন রেস কোর্সের মাঠে বালির ওপর কঠোর অনুশীলন করান আজিজ। আগামী এক সপ্তাহ টোলগেদের জন্য এ রকমই ‘হার্ড ট্রেনিং’-এর সূচি তৈরি করেছেন তিনি। এ দিনের অনুশীলনের পর মহমেডান ফুটবলাররা মজা করে বলছিলেন, “এত কঠিন অনুশীলনের পর এমনিতেই কোনও ফুটবলার আর রাতের পার্টির কথা ভুলেও ভাববে না।” |