হলদিয়া মেডিক্যাল
একই ভবনে দুই কলেজে আপত্তি কী, প্রশ্ন কোর্টের
প্রথম বারের পরিদর্শনে এক ভবনে হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজ এবং ডেন্টাল কলেজ চালানো নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলেনি মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (এমসিআই)। কেন তোলেনি? প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি নিশীথা মাত্রে শুক্রবার আরও প্রশ্ন তোলেন, এমসিআইয়ের প্রতিনিধিরা প্রথম বার যখন ওই কলেজ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন, তখন কি তাঁরা ডেন্টাল কলেজটি দেখেননি? একটা আস্ত কলেজ তো আর লুকিয়ে রাখা যায় না! তা ছাড়া একই ভবনে যদি দু’টি কলেজ চালানো যায়, তাতেই বা আপত্তি কোথায়?
হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন সংক্রান্ত মামলাটি এ দিন হাইকোর্টের বিচারপতি মাত্রে ও বিচারপতি কাঞ্চন চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে নতুন করে শুরু হয়েছে। অনুমোদন বাতিলের মূল কারণ হিসেবে একই ভবনে মেডিক্যাল কলেজ এবং ডেন্টাল কলেজ চালানোর কথাই বলা হয়েছে বারবার। মেডিক্যাল কাউন্সিলের পক্ষে এ দিনও সেই কারণটির উপরে জোর দেওয়া হয়। বিচারপতি মাত্রে অবশ্য শুনানির শুরুতেই জানিয়ে দেন, তিনি চিন্তিত ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। আর সেই চিন্তা থেকেই তিনি এমসিআইয়ের আইনজীবী সৌগত ভট্টাচার্যকে লক্ষ করে পরপর কয়েকটি প্রশ্ন করেন। কেন ওই মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন খারিজ করা হয়েছিল, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সৌগতবাবু বলেন, কর্তৃপক্ষ একই ভবনের একটি অংশে ডেন্টাল কলেজও চালাচ্ছিলেন। এটা করা যায় না। বিচারপতি মাত্রের প্রশ্ন, কেন করা যায় না? আপত্তি কীসের?
রাজ্যে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন খারিজ করে দেয়। অনুমোদন খারিজ করে এমসিআই-ও। কলেজ-কর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। শুরু হয় মামলা। রাজ্য সরকার, রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং এমসিআই কলেজটির অনুমোদন বাতিল করার যে-সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা খারিজ করে দেন হাইকোর্টের বিচারপতি গিরীশ গুপ্ত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করে এমসিআই। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলার দীর্ঘ শুনানি হয়।
চূড়ান্ত রায় দেওয়ার মুখে প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজের পক্ষে রায় দেওয়ার জন্য কেউ তাঁকে ফোনে অনুরোধ করায় তিনি এই মামলা শুনানির জন্য অন্য ডিভিশন বেঞ্চে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। কারণ, তাঁর মনে হয়েছে, কেউ তাঁকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। তাই তিনি মামলাটি আর নিজের এজলাসে রাখা সমীচীন মনে করছেন না। এ দিন অন্য বেঞ্চে নতুন করে মামলাটির শুনানি শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত টানা শুনানি চলে।
রাজ্যে ডাক্তারের অভাব। সেই প্রসঙ্গ তুলে হাইকোর্ট বারবার বলেছে, এই অবস্থায় একটি মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন বাতিলের বিলাসিতা সাজে না। সেই সঙ্গেই পড়ুয়াদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন বিচারপতি। নতুন বেঞ্চের বিচারপতি মাত্রেও এ দিন ছাত্রছাত্রীদের জন্যই বেশি চিন্তার কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ১৫ জুলাই ছিল মেডিক্যাল কোর্সে ভর্তির শেষ দিন। মামলা চলায় গত শিক্ষাবর্ষে হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজে প্রথম বর্ষে ছাত্র ভর্তি করা যায়নি। চলতি বছরেও ১৫ জুলাই পেরিয়ে গিয়েছে। মামলার জন্য ছাত্র ভর্তি করা হয়নি। এখন অনুমোদন পেলেও ছাত্র ভর্তি করা যাবে না।
এ দিন কলেজ-কর্তৃপক্ষের হয়ে আইনজীবী সমরাদিত্য পাল এবং এস কে কপূর ভর্তির সময় বাড়ানোর আবেদন জানান। এই নিয়ে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে আলাদা একটি মামলা ছিল। বিচারপতি মাত্রে জানিয়ে দেন, প্রধান বিচারপতি তাঁর ডিভিশন বেঞ্চকে আপিল মামলাটির বিচার করতে বলেছেন। যদি ভর্তির সময় বৃদ্ধির মামলাটির বিচারের দায়িত্বও তাঁদের বেঞ্চকে দেওয়া হয়, তাঁরা এই মামলার সঙ্গেই সেটি শুনবেন। ভর্তির সময়সীমা
বৃদ্ধির আবেদন সংক্রান্ত মামলাটিও এই ডিভিশন বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য কলেজের তরফে এ দিনই প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন জানানো হয়।
ফের শুনানি হবে ২৬ জুলাই।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.