দেশ জুড়ে মেডিক্যাল ও ডেন্টালের স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমে ভর্তির জন্য অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা (নিট) পদ্ধতি সবে চালু হয়েছিল। নতুন সেই পরীক্ষা ব্যবস্থা বৃহস্পতিবার খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তাদের এই নির্দেশের ফলে আগামী বছর থেকে মেডিক্যাল ও ডেন্টালে অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা আর হবে না।
সর্বোচ্চ আদালত মনে করে, মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া বা এমসিআই-কে ওই পরীক্ষা নেওয়ার অধিকার দেয়নি সংবিধান। সেই কারণেই ওই পরীক্ষা পদ্ধতি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি অবৈধ এবং সংবিধান-বিরোধী। তাই এ দিন সেই বিজ্ঞপ্তিটিও বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীরের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ।
মেডিক্যালে অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষার ব্যবস্থা চালু হয়েছিল চলতি বছরেই। এ বার যাঁরা ওই পদ্ধতিতে প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে মেডিক্যালে ভর্তি হয়ে গিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে অবশ্য শীর্ষ আদালতের এ দিনের নির্দেশ কার্যকর হবে না। রায় দেওয়ার সময় এই বিষয়টি পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এতে স্বস্তি পেয়েছেন ভর্তি হয়ে যাওয়া ছাত্রছাত্রী এবং তাঁদের অভিভাবকেরা।
সুপ্রিম কোর্টের এ দিনের রায় অবশ্য সর্বসম্মত ছিল না। তিন বিচারপতির বেঞ্চে এক জন ভিন্ন মত পোষণ করেন। প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীর এবং বিচারপতি বিক্রমজিৎ সেনের অভিমত, “মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার এই ধরনের পরীক্ষার নেওয়ার কোনও অধিকারই নেই। এমসিআই-এর এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি সংবিধানের ১৯, ২৫, ২৬, ২৯ এবং ৩০ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করেছে।” তিন সদস্যের বেঞ্চের অন্যতম সদস্য, বিচারপতি অনিল দাভে অবশ্য অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষার পক্ষেই মত দেন। তাঁর মত, “এটাই বাস্তবসম্মত এবং যুগ ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ।” তবে সংখ্যাধিক্যের মতের ভিত্তিতে নিট খারিজ করে দেয় তিন সদস্যের বেঞ্চ।
অভিন্ন প্রবেশিকার ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ১১৫ জন সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন। ২০১২ সালের ১৩ ডিসেম্বর আদালত নির্দেশ দেয়, এমসিআই ওই পরীক্ষা নিতেই পারে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়, অন্য সংস্থা, ডেন্টাল কাউন্সিল যে-পরীক্ষা নেয়, তা নেওয়া যাবে। কিন্তু ফল প্রকাশ করা যাবে না। দেশের বিভিন্ন আদালতে নিট-এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে যে মামলা ছিল, এ বছরের জানুয়ারিতে সেগুলি তাদের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। ১৩ মে তারা ফলপ্রকাশের উপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেয়। তার পরে প্রবেশিকার ফল প্রকাশ করা পায়। ছাত্রছাত্রীরাও ভর্তি হন। এ দিন তিন সদস্যের বেঞ্চ নিট নিয়ে তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল।
|
এইমস-সহ দেশের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজগুলিতে বিশেষজ্ঞ শিক্ষক চিকিৎসক নিয়োগে সংরক্ষণে নিষেধাজ্ঞা জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীরের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই রায় দিল। |