দলের ঊর্ধ্বে উঠলেন স্পিকার
ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় আস্থা ভোটে জয়ী হেমন্ত সোরেন
লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের পথে হেঁটে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ঝাড়খণ্ড বিধানসভার স্পিকার তথা বিজেপি নেতা চন্দ্রপ্রকাশ সিংহ। জেএমএম-কংগ্রেস জোট সরকারের আস্থা ভোটের দিন দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে নিজের দল বিজেপির নেতাদের দাবি নস্যাৎ করে পাল্টা যুক্তির জাল বিছালেন তিনি। ঘটনায় অবশ্যই খুশি নন বিজেপি নেতৃত্ব। আর এই ঘটনার পর কংগ্রেস-জেএমএম জোট আপাতত বিজেপি-র এই নেতাকে স্পিকার পদ থেকে না সরানোর সিদ্ধান্তই নিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হেমন্ত সোরেন আজ বিধানসভায় আস্থা ভোটে জয়ী হন। ৮২ সদস্যের বিধানসভায় ৪৩-৩৭ ভোটে হেমন্তের প্রস্তাব জিতে যায়।
এই আস্থা ভোটে অংশ নিতে কংগ্রেস বিধায়ক শাওন লাকরা বিধানসভায় এসেছিলেন সরাসরি জেল থেকে। একটি খুনের মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে শাওন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ের উল্লেখ করে তখন বিজেপি দলনেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা দলের নেতা তথা স্পিকার চন্দ্রপ্রকাশ সিংহকে বলেন, লাকরাকে ভোট দিতে দেওয়া স্পিকারের পক্ষে উচিত হবে না। স্পিকার মুন্ডাকে বলেন, “খোঁজ নিন। আজ সকালেই অ্যাডভোকেট জেনারেলের সঙ্গে আমি এই নিয়ে কথা বলেছি। তিনি জানিয়েছেন, শাওন লাকরার ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই। তাই আমি তাঁকে আটকাতে পারি না। তবে উনি ভোট দেবেন কিনা সেটা ওঁর বিবেকের বিষয়।” স্পিকার তাঁর দলেরই নেতা। তাই তাঁর এই কথা শুনে অবাক হয়ে যান মুন্ডা। ক্ষুব্ধ মুন্ডা স্পিকারকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, “আপনার বিবেক কী বলে?” স্পিকার সে কথায় কোনও কর্ণপাতই করেননি।
নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাচ্ছেন ঝাড়খণ্ড বিধানসভার স্পিকার
চন্দ্রপ্রকাশ সিংহ। বৃহস্পতিবার রাঁচিতে। ছবি: মুন্না কামদা
আমেরিকার সঙ্গে পরমাণু চুক্তির বিরোধিতা করে ২০০৮ সালে ইউপিএ-১ সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করেন বামেরা। তখন লোকসভার স্পিকার ছিলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। আস্থা ভোটের সময় তিনি স্পিকারের পদের মর্যাদা রেখেই সভা পরিচালনা করেছিলেন। তাঁর দল সিপিএমের আপত্তি সত্ত্বেও পদ ছাড়েননি। বরং নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে দলের সংগঠন থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন। ঝাড়খণ্ডের স্পিকার বিজেপি নেতা চন্দ্রপ্রকাশও সেই পথই অনুসরণ করলেন।
চন্দ্রপ্রকাশের সঙ্গে কথা বলতে এর আগে শপথের পরেই রাজ্যের দুই মন্ত্রী রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ ও অন্নপূর্ণা দেবী স্পিকারের বাড়িতে যান। আজ দল নয়, স্পিকারের চেয়ারের নিরপেক্ষতাকেই তিনি অগ্রাধিকার দেওয়ায় খুশি নতুন জোট সরকারও। এই অবস্থায় বিজেপি যদি চন্দ্রপ্রকাশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়? স্পিকারের কথায়, “স্পিকার হিসেবে সংবিধান মেনে কাজ করেছি। দলের বিষয়টা নেতা হিসেবেই সামলাব।”
আজ বিধানসভায় আরও দুই চমক ছিল জেএমএমের দুই ‘ফেরার’ বিধায়ক নলিন সোরেন ও সীতা সোরেন। আজ সকালে সীতা সোরেন থানা থেকে জামিন নেন। আর সুপ্রিম কোর্ট নলিন সোরেনের জামিন মঞ্জুর করে। ফলে দু’জনেই বিধানসভায় হাজির হয়ে ভোট হেমন্তের সমর্থনে ভোট দেন। ফলে বিরোধীরা জোটবদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও হেমন্ত জিতে যান ৪৩-৩৭ ভোটে।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.