ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের ব্যক্তিত্বের সঙ্গে তাঁর কোনও মিল নেই বললেই চলে। কিন্তু তাতে কী? ইস্টবেঙ্গলের নতুন ব্রাজিলিয়ান কোচ মার্কোস ফালোপার প্রথম দিনের প্র্যাক্টিসে ভেসে উঠল সেই ব্রিটিশ কোচের ছায়াই!
বছর তিনেক আগে মর্গ্যানের প্রথম অনুশীলনের স্মৃতিচারণ করতে বসে ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন গোলকিপার কোচ অতনু ভট্টাচার্য বলছিলেন, “মর্গ্যান শুরুতেই ফুটবলারদের পায়ে বল দিয়ে দিয়েছিলেন। বলের ওপর কার কেমন দখল, সেটার প্রাথমিক আন্দাজ পাওয়ার জন্য। তার পর ফিজিক্যাল ট্রেনিং।” বুধবার ব্রাজিলিয়ান কোচের ক্লাসও হুবহু একই পদ্ধতি মেনে শুরু হল। পার্থক্য একটাই। মর্গ্যান কোচ-কাম-ফিজিক্যাল ট্রেনারের কাজটা একাই করতেন। এখানে বাবা-ছেলে দু’টো কাজ ভাগ করে নিয়েছেন। তবে এ দিন ক্লাবে তিন জন ডাক্তার এলেও, সব ফুটবলার না থাকায় মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়নি। ক্লাবের অন্যতম শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, “ডাক্তাররা যে দিন তারিখ দেবেন, সে দিনই মেডিক্যাল পরীক্ষা হবে।” |
সুয়োকাকে নিয়ে ফালোপা। নতুন মরসুমে লাল-হলুদ প্র্যাক্টিসে প্রথম দিন। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস। |
মর্গ্যানের উত্তরসূরির হাতে তাঁদের প্রিয় ক্লাব কতটা নিরাপদ, তা দেখতে বুধবার সাতসকালে ক্লাবতাঁবুতে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। নতুন কোচের সঙ্গে প্রথমবার আলাপ করতে মুখিয়ে ছিলেন ফুটবলাররাও। কেমন লাগল ব্রাজিলিয়ান কোচকে? ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক মেহতাব বললেন, “একদম বন্ধুর মতো। প্রথম দিনের অনুশীলন দেখে টেকনিক্যালি বিশ্লেষণ করা খুব কঠিন। তবে যা মনে হল, বল কন্ট্রোলের দিকেই বেশি জোর দিতে চান।” দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ফুটবলার সৌমিক দে আবার বললেন, “কুপার ট্রেনিং থেকে শুরু করে ফ্রিহ্যান্ড এক্সারসাইজ সবই খুব সুন্দর ভাবে হল। মনে হচ্ছে, ফালোপার থেকে অনেক কিছু শিখতে পারব।”
তবে প্রথম দিনের প্র্যাক্টিসে চিফ কোচের থেকে তাঁর ছেলে আমেরিকোকে (গোলকিপার কোচ) নিয়ে বেশি উৎসাহ ছিল সবার। এত স্থূলকায় শরীর নিয়ে তিনি কি পারবেন অভিজিৎ-অভ্রদের বারপোস্টের নীচে সামলে আবার চিডি-মোগাদের যোগ্য ফিটনেস ট্রেনার হতে? মেহতাব কিন্তু বলছেন, “আমেরিকো অনেক কিছু জানেন। আমার ধারণা, উনি আসায় ক্লাবের উপকারই হবে।” এ দিন প্র্যাক্টিসে সুয়োকা ছাড়া আর কোনও বিদেশি ফুটবলার ছিলেন না। ২১ জুলাই কল্যাণীতে আবাসিক শিবিরের আগে চিডি, ওপারা চলে আসবেন বলে খবর। মোগাকে অবশ্য আরও এক সপ্তাহ বাদে পাওয়া যাবে। তিনি সুদানে প্রীতি ম্যাচ খেলতে ব্যস্ত।
এ দিকে, অবসরের পরে মেহতাব-সৌমিকদের ক্লাবের বিভিন্ন কাজে যুক্ত করতে চাইছে ইস্টবেঙ্গল। দেবব্রতবাবু বলছিলেন, “মেহতাব, সৌমিক, অভিজিৎরা আমাদের ক্লাবের সম্পদ। ওদের আমরা অবসরের পরেও কাজে লাগাতে চাই। সেটা সহকারী কোচ হিসেবে হতে পারে। ইউথ ডেভলপমেন্ট-এর কাজে কিংবা টিম ম্যানেজার হিসেবেও হতে পারে।” এ দিন দীপঙ্কর রায়, অভিজিৎ মণ্ডল, অর্ণব মণ্ডল-সহ মোট আট জন ফুটবলার সই করলেন ইস্টবেঙ্গলে।
|