মা-বাবা ‘জ্বালাতন’ করতেন। সেই কারণে তাঁদের দু’জনকে খুন করেছে সে। বুধবার আলিপুর আদালতে বিচারকের প্রশ্নের উত্তরে ভাবলেশহীন মুখে এই কথাই জানিয়েছে ঠাকুরপুকুরের তালপুকুর এলাকায় মা ও বাবার খুনে অভিযুক্ত শোভন সরকার।
এ দিন অভিযুক্তকে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট উমেশ সিংহের এজলাসে হাজির করায় পুলিশ। বেগুনি রঙের টি-শার্ট ও জিন্স পরে আদালতের কাঠগড়ায় মাথা উঁচু করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল শোভন। বিচারক অভিযুক্ত শোভনের কাছে জানতে চান, কেন সে নিজের মা-বাবাকে খুন করল? শোভন বিচারকের দিকে তাকিয়ে বলে, “মা-বাবা বড় জ্বালাত।”
মঙ্গলবার সকালে তালপুকুর এলাকার একটি বাড়ি থেকে পরেশ সরকার ও তাঁর স্ত্রী ঊষা সরকারের ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার করেন কিছু স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ। বৃদ্ধ ওই দম্পতির ছোট ছেলে শোভনের আচরণ দেখে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। বাড়ির পাশে শোভন দিনমজুর দিয়ে মাটি কাটিয়ে গর্ত খুঁড়ছিল। তার পরেই প্রতিবেশীরা শোভনকে চেপে ধরেন।
পুলিশের দাবি, প্রতিবেশীদের জেরাতেই ওই যুবক জানিয়ে দেয়, ধারালো অস্ত্র দিয়ে ওই দু’জনকে খুন করেছে সে নিজেই। খবর পেয়ে পুলিশ ওই বাড়িতে যায় এবং বৃদ্ধ দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধার করে।
শোভনকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে পুলিশ এ দিন সরকারি আইনজীবী মারফত বিচারকের কাছে আবেদন জানায়। সরকারি আইনজীবী বিচারককে জানান, কী কারণে এই খুন, তা এখনও জানতে পারেননি তদন্তকারীরা। তাই অভিযুক্তকে আরও জেরা করা প্রয়োজন। সেই কারণে, শোভনকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইছে পুলিশ। বিচারক সরকারি আইনজীবীর আবেদন মঞ্জুর করে অভিযুক্তকে ২২ জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পুলিশ এ দিন ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জেনেছে, পরেশবাবুর দেহে ছ’টিরও বেশি আঘাতের চিহ্ন ছিল। ঊষাদেবীর দেহে ছিল তিনটি আঘাতের চিহ্ন।
পুলিশ জানিয়েছে, খুন হওয়ার আগে পরেশবাবু ছেলেকে বাধা দিয়েছিলেন। সেই সময়ে হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাত পান তিনি। সেই আঘাতের চিহ্নও ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে মিলেছে।
|