একঘেয়েমি জীবনে বিরক্তি, পালিয়েও ধরা পড়ল ৪ পড়ুয়া
স্কুলের ধরাবাঁধা জীবন ভালো লাগে না। স্বাদ বদলের আশায় তাই বাড়ি থেকে পালিয়েছিল চার বন্ধু। রাঁচি থেকে ট্রেনে চেপে পুরুলিয়া পর্যন্ত চলেও এসেছিল। কিন্তু বিনা টিকিটের ওই চার খুদে যাত্রী টিকিট পরীক্ষকের হাতে ধরা পড়ে যাওয়ায়, তাদের ‘অ্যাডভেঞ্চার’ মাটি হয়ে গেল।
সোমবার সকালে স্কুলে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে রাঁচির হরমু এলাকার বাসিন্দা সির্দ্ধার্থ কুমার, সৌরভ কুমার, বিশাল দুবে ও অভিষেক দুবে। তারা সকলে স্থানীয় নমন বিদ্যাপীঠের ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া। বিশাল ও অভিষেক দুই সহোদর ভাই। তাদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, রাঁচি স্টেশন থেকে হাটিয়া-খড়গপুর প্যাসেঞ্জার ট্রেনে চেপে চারজনে চলে আসে পুরুলিয়া স্টেশনে। চার কিশোরকে প্লাটফর্মের উপর উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে সন্দেহ হয় টিকিট পরীক্ষক পার্থ বণিকের। প্রথমে তাদের কাছে টিকিট দেখতে চান তিনি। টিকিট দেখাতে পারেনি তারা। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, তাদের অ্যাডভেঞ্চারের কথা। খবর যায় পুরুলিয়ার স্টেশন ম্যানেজার শ্যামাপ্রসাদ মজুমদারের কাছে। তিনি ওদের ডেকে কথা বলেন।
শ্যামাপ্রসাদবাবু বলেন, “ওদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম কেন বাড়ি থেকে পালিয়েছে? ওদের জবাব শুনে আমি অবাক। ওরা জানায়, স্কুলের ধরাবাঁধা জীবন ভালো লাগে না। রোজকার স্কুলের হোমওয়ার্ক, নিত্যদিনের একই রুটিনে ওরা মুষড়ে পড়েছিল। তাই ওরা দল বেঁধে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছে।”
ঘর-ছাড়া খুদে ‘পর্যটকে’রা জানিয়েছে, ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রদের হাতে কতই বা টাকা থাকে? আবার বাবা-মা’র কাছে ঘুরতে যাওয়ার কথা বললে পুরো অ্যাডভেঞ্চারটাই বাতিল হয়ে যাবে। তাই সামান্য টাকা নিয়েই বেরিয়ে ওরা বেড়িয়ে পড়েছিল। সেই টাকায় কি আর টিকিট কেনা যায়? কিন্তু সেই টিকিট না কাটার জন্যই যে তাদের ‘সফর’ গোড়াতেই শেষ হয়ে যাবে তখন ভাবতে পারেনি ওরা। তবে বিনা টিকিটের খুদে যাত্রীদের পুরুলিয়া স্টেশনের কর্মীরা রেল পুলিশের হাতে তুলে দেননি। স্টেশন ম্যানেজার উল্টে তাঁদের দুপুরে ভরপেট ভাত খাওয়ান। জেনে নেন ওদের বাড়ির ফোন নম্বর। তারপরে সোজা ওদের অভিভাবকদের ফোন করে পুরো বিষয়টি জানান।.
সোমবার রাতেই কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে রাঁচি থেকে পুরুলিয়া আসেন বিশাল ও অভিষেকের বাবা শম্ভু দুবে ও সৌরভের বাবা বিনোদ সিংহ। ছেলেদের ফিরে পেয়ে রেল কর্মীদের তাঁরা অকুন্ঠ ধন্যবাদ জানিয়ে গেছেন। বাবার হাত ধরে বাড়ি ফেরার সময় চার পড়ুয়াই মুচকি হাসছিল। তা দেখে এক রেলকর্মীর স্বগতোক্তি, “স্বাদ বদলের খোঁজে ওদের প্রাথমিক বাধা পড়েছে। ধরা বাঁধা রুটিন ভেঙে বাইরে বেরিয়ে পড়ার ইচ্ছাটা মনে হয় শেষ হয়নি!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.