পাকা রাস্তা বরাবর ফুটো করে নদী নির্ভর সেচ প্রকল্পের পাইপ বসানোয় দুর্বল হয়ে পড়েছিল এলাকার একমাত্র বাঁধ। রাস্তা টাঙনের জল সেখানে আছড়ে পড়তে ওই দুর্বল রাস্তার ২৫ ফুট ভেঙে উড়ে গিয়ে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। অন্তত ২০টি গ্রামের অন্তত ১৫,০০০ মানুষ দুদিন ধরে দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারী ব্লকের গাঙ্গুরিয়া অঞ্চলের দেউরিয়া এলাকার ঘটনা বানভাসীরা। তাদের ওই দুর্গতির জন্য সেচ দফতরের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন।
এলাকার বিদায়ী তৃণমূলের প্রধান শুকলাল রাম অভিযোগ করেন, “৩ মাস আগে রাস্তা বরাবর খুঁড়ে সেচ প্রকল্পের পাইপ লাইন বসানো হয়। কিন্তু খোঁড়া অংশে কংক্রিটের মশলা দিয়ে ভালোমতো পূরণ করা হয়নি বলে বাঁধ-রাস্তা ভেঙে মানুষের দুর্গতি হয়েছে।” রাতারাতি ঠিকাদার দিয়ে কাজ হওয়ার পর কাজে গাফিলতির বিষয়টি তাঁরা জানতে পারেন বলে বিদায়ী প্রধান জানিয়েছেন। বংশীহারীর বিডিও বনমালি রায়ও বলেন, “ব্লক প্রশাসনকে না জানিয়ে ওই পাইপ বসানোর কাজ হয়েছে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।” |
সেচ দফতরের দক্ষিণ দিনাজপুরের নির্বাহী বাস্তুকার সুনীল ঠাকুর বলেন, “রাস্তা খুঁড়ে পাইপলাইন বসানোর জেরে দেউরিয়ায় বাঁধ-রাস্তা ভেঙে বিপত্তির অভিযোগ পেয়েছি। তবে ওই কাজ সেচ দফতর করেনি। সেটি জেলা পরিষদের বাঁধ-রাস্তা।” রাস্তা খুঁড়ে আরএলআইয়ের পাইপ বসিয়েছে বলে তাঁর দাবি। জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি মাগদালিনা মুর্মু বলেন, “বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নেব।”
এদিন গাঙ্গুরিয়ার দেউরিয়ায় রাস্তার ভাঙনের জেরে বন্যা বিধ্বস্ত এলাকায় যান জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী এবং পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা দেখতে পান, হাড়িদাড়া, বাজেহরিপুর, শান্তিপুর, বড়গাছি, সিঙাদহ, কটিকন্দর, চকনগর, টেপরিদহ, বাগদুয়ার, কদুবাড়িঘাট, বিলবড়াইল, বাগদুয়ারসান্তাল, গেরুল গ্রামের বাসিন্দারা ব্লক সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের যাতায়াতের জন্য প্রশাসন থেকে নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেউরিয়া মিশন স্কুলের ত্রাণ শিবিরে ৫০০ বানভাসি মহিলা ও শিশু-কিশোর আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যার্তদের জন্য ওই স্কুলের মাঠে ভাত রান্নার ব্যবস্থা করেছে ব্লক প্রশাসন। জেলাশাসক বলেন, “কেবল বংশীহারি ব্লকেই অন্তত ৩০টি প্রাথমিক স্কুল বন্যার কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। টাঙনের জল খুব ধীরে নামছে জল নামলে ভাঙা রাস্তা ও বাঁধ মেরামতির উপর জোর দেওয়া হয়েছে।” তবে বালুরঘাটে আত্রেয়ী, তপন ও গঙ্গারামপুরে পুনর্ভবা এবং কুশমন্ডিতে টাঙনের জল কমতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সর্বত্র ত্রাণসামগ্রী বিলির কাজ শুরু হয়েছে।
|