একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। যার উপরে নির্ভরশীল তিনটি পঞ্চায়েতের ৩০টি গ্রামের বাসিন্দা। মাত্র একজন চিকিৎসক থাকলেও, গত দেড় মাস ধরে তিনি এখানে আসছেন। এর ফলে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। নলহাটি থানার কুরুমগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এই অবস্থার জন্য রোগীদের সামান্য কারণে হলেও ছুটতে হচ্ছে রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে।
নলহাটি ১ ব্লকের কুরুমগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শয্যা সংখ্যা ৩০। পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। কুরুমগ্রাম, বড়রা অঞ্চল ও মাড়গ্রামের হাঁসন ১ অঞ্চলের বাসিন্দারা এখান থেকে পরিষেবা পেয়ে আসছেন। দৈনিক গড়ে ১০০ জন রোগী এখানে আসেন। এখানকার জন্য জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে এক জন চিকিৎসক বরাদ্দ। এ ছাড়া, তিন জন নার্স, এক জন ফার্মাসিস্ট নিযুক্ত আছেন। নলহাটি ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আলোবরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “২০১২ সালের নভেম্বর মাসে ন্যাশনাল রুরাল হেলথ মিশন থেকে মনস্বী রায় নামে এক জন চিকিৎসক নিয়োগ করা হয়। মাস দেড়েক থেকে তিনি এখানে আসছেন।
|
দু’বার তাঁকে শো-কজ করা হলেও কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ফের শো-কজ করা হবে।”
হাসপাতালের নার্স শেফালী হালদার বলেন, “কোনও রকমে পরিষেবা দিয়ে রোগীদের ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জটিল রোগ হলে রোগীদের নলহাটি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে বলি। মাস দেড়েক চিকিৎসকের অভাবে কেমন যে কাটছে বলে বোঝাতে পারব না।” মাড়গ্রাম থানার বেলুন গ্রামের বাসিন্দা ফুলকলি লেট সোমবার সকালে ৬ বছরের শিশুকে নিয়ে এসেছিলেন। বললেন, “চিকিৎসক নেই। ঘুরে যেতে হচ্ছে। এখন রামপুরহাট হাসপাতাল ছাড়া গতি নেই।” একই ভাবে পরিষেবা না পেয়ে ঘুরে যেতে হল ওই গ্রামের উজ্জ্বল লেট, কুরুমগ্রামের শুসারি দাসদের। চিকিৎসক মনস্বী রায় অবশ্য বলেন, “আমাকে রুরুমগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য নিয়োগ করা হয়েছে। অথচ বিএমওএইচ কুরুমগ্রাম ছাড়াও ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতি সপ্তাহেই ২৪ ঘণ্টা ডিউটি করার জন্য চাপ দিতেন। আমি চাই শুধু মাত্র কুরুমগ্রামে কাজ করতে দেওয়া হোক।” শো-কজের চিঠি তিনি এখনও পাননি বলে দাবি করেছেন। বিএমওএইচ বলেন, “ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তিন জনের জায়গায় বর্তমানে দু’জন মেডিক্যাল অফিসার আছেন। বহির্বিভাগ ও অন্তর্বিভাগ রোজ খোলা রাখতে হলে তিনজন চিকিৎসক দরকার। সেই কারণে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি থেকে এক জন করে চিকিৎসক নিয়ে এসে কাজ চালাতে হয়। ব্লকের সোনারকুণ্ড, কয়থা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসককে এখানে ২৪ ঘণ্টা ডিউটি করছেন। সেই জন্য মনস্বী রায়কে সপ্তাহে একদিন ২৪ ঘণ্টা ডিউটি করতে বলা হয়েছিল। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে বলেছি।” |