|
|
|
|
গান শুনিয়ে তৃণমূলের ভোট প্রচার
নারায়ণ দে • আলিপুরদুয়ার |
ভোট প্রচারে ভাওয়াইয়া শিল্পীকে সামিল করেছে তৃণমূল। পাকা রাস্তা, সেতু, বিদ্যুৎ, জলের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে দোতারার সুরে দু’এক কলি গান শুনিয়ে ভোটারদের টানার কৌশল তৈরি করেছে আলিপুরদুয়ার ব্লক তৃণমূল। শিল্পী প্রদীপ ওরাওঁকে সঙ্গে নিয়েই বাড়ি-বাড়ি প্রচার চালাচ্ছে শাসক দলের প্রার্থীরা। দুঃস্থ শিল্পী বলেই এলাকায় পরিচিত প্রদীপবাবু। সকালে খেতে ধানের রোয়া বোনার কাজ সেরে বেরিয়ে পড়ছেন প্রচারে।
আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের পোরোর পাড় পঞ্চায়েতে পাকুড়িতলা এলাকার বাসিন্দা আদিবাসী ভাওয়াইয়া শিল্পী প্রদীপ ওরাওঁ। বছর দুয়েক আগে বিধানসভা ভোটের সময়ে প্রদীপবাবু আরএসপি-র সমর্থক বলে পরিচিত ছিলেন। এ বার পঞ্চায়েত ভোটের আগে থেকেই ভাওয়াইয়া শিল্পী তৃণমূলের হয়ে প্রচার শুরু করেছেন।
১৯৯৯ সালে প্রদীপবাবু রাজ্য ভাওয়াইয়া প্রতিযোগীতায় বিজয়ী হন। অভাব মেটাতে স্থানীয় শিশুদের গান শেখানো শুরু করেন তিনি। খরচের কারণে হারমোনিয়াম ব্যবহার করতে পারেন না, তাই দোতারাকেই গানের সঙ্গী করেছেন তিনি। যদিও নিজের দোতারা নেই। প্রদীপবাবু জানান, গ্রামেরই অন্য শিল্পীর থেকে দোতারা চেয়ে রেওয়াজ করেন। |
|
প্রচারে প্রদীপ ওরাওঁ। নিজস্ব চিত্র। |
পোরোরপাড় গ্রামের তৃণমূলের বুথ সভাপতি শম্ভু রায় বলেন, “গ্রামে মানুষ সারাদিন খাটাখাটনি করেন। প্রচারের সময়ে গ্রামবাসীকে খানিকটা কানের আরাম দিতেই প্রদীপবাবুকে সঙ্গে নিয়ে প্রচার চালাচ্ছি। আমাদের বক্তব্যের সঙ্গে প্রদীপবাবুর গান শুনছে মানুষ। আমরা ওনাকে একটা দোতারাও জোগাড় করে দিয়েছি।” তৃণমূলের নেতা নিত্যানন্দ অধিকারী বলেন, “প্রদীপবাবুর সংসারে নিত্য অভাব। ওঁর স্ত্রী এক চোখে দেখতে পারে না। দুই ছেলে নিয়ে সংসার। গান গেয়ে ২০০-৩০০ টাকা আয়। অন্যের খেতে দিনমজুরি করেন। নিয়মিত আয় বলতে স্ত্রী অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রাধুনির সহায়িকা। একজন ভাল শিল্পীর জন্য বাম সরকার এত দিন কিছুই করেনি।” গ্রামে গাছতলায় বসে প্রদীপ ওরাওঁ বলেন, “সাহায্যের আশ্বাস তো অনেকই পেয়েছি। কিন্তু হাতে তো কিছু পেলাম না। তাই দল পাল্টেছি। ভাওয়াইয়া ও লোকগীতের মাধ্যমে প্রচার করছি। রোজ প্রচারে বের হওয়ায় সম্ভব হয় না। দিনভর মাঠে কাজ করে শরীর চলে না। তবে চেষ্টা করি দলের কর্মীদের সঙ্গে প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে একটা দুটো গান শোনাতে। আশা করছি গ্রামে তৃণমূল জিতলে উন্নয়ন হবে।”
আরএসপি-র স্থানীয় নেতা তথা এলাকার জেলা পরিষদ প্রার্থী সুব্রত রায় অবশ্য বলেন, “প্রদীপবাবু যে ভাল ভাওয়াইয়া শিল্পী তা নিয়ে দ্বিমত নেই। তবে আমাদের কাছে সে ভাবে সমস্যার কথা উনি বলেননি।” |
|
|
|
|
|