মাঝরাতে থানায় হট্টগোল তৃণমূলের
সামাল দিতে গিয়ে বিতর্কের মুখে মন্ত্রী
ংগ্রেসের অভিযুক্তদের ধরতে নিষ্ক্রিয়তা এবং পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে মাঝরাতে পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে হট্টগোল বাঁধানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের একদল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। রবিবার রাত দেড়টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের নিউ জলপাইগুড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে। সেই সময়ে থানার বারান্দার টব ও ওসির ঘরের একটি টেবিলের কাঁচ ভেঙে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের ক্ষোভ সামাল দিতে গিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব।
ওই ঘটনার পরে কংগ্রেসের তরফে বলা হয়েছে, নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করা হবে। বামেরাও পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন। যদিও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেছেন, “একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে সব বিধির কথা মাথায় রেখে যা করণীয় তা করেছি। বিপদের দিনে মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমার কর্তব্য। আবার যাতে কেউ আইন নিজের হাতে না নেয় সেটাও নিশ্চিত করার দায়িত্বও আমার রয়েছে। এর বেশি কিছু বলতে চাই না।”
ওই রাতে হট্টগোলের খবর পেয়ে পুলিশ কমিশনার কে জয়রামনও সেখানে পৌঁছন। পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, সেখানে মন্ত্রীর সঙ্গে পুলিশ কমিশনারের কিছুক্ষণ বাদানুবাদও হয়। পুলিশের তরফে বলা হয়, কোনও অভিযোগ থাকলে এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রী তা ফোনে জানালেই ব্যবস্থা নেওয়া যেত। তৃণমূল সূত্রের খবর, মন্ত্রী জানিয়ে দেন, তিনি পরিস্থিতি সামাল দিয়ে নেতা-কর্মীদের ফেরাতেই সেখানে যান। শেষ পর্যন্ত রাত ২ টো নাগাদ মন্ত্রী থানা থেকে ফিরে যান। পুলিশের তরফে গোটা বিষয়টি রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরে জানিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, পুলিশ ফাঁড়িতে একটি জেনারেল ডায়েরি (জিডি) করে ঘটনার বিবরণ নথিভুক্ত করা হয়।
পুলিশ কমিশনার কে জয়রামন বলেন, “উনি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি হিসাবে ফাঁড়িতে এসেছিলেন বলে জানান। পুলিশের বিরুদ্ধে দলীয় কর্মীদের নানা ক্ষোভ-বিক্ষোভের কথা বলেন। থানায় কিছুক্ষণ বিক্ষোভও হয়। তবে আমরা সবার অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছি বলে ওঁকে জানিয়ে দিয়েছি। উনি গভীর রাতে নিজে থানায় না গিয়ে আমাকে টেলিফোনও অভিযোগ বলতে পারতেন। তবে বিষয়টি মিটে গিয়েছে।”
এনজেপি ফাঁড়ির বারান্দায় ভাঙা কাচ। সোমবার দুপুরে বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত গত ১২ জুলাই। সে দিন কংগ্রেসের দখলে থাকা ফুলবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের আমাইদিঘি এলাকায় কংগ্রেস এবং তৃণমূলের কর্মীদের সংঘর্ষে কয়েকজন জখম হন। উভয় তরফে পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ অভিযুক্তদের খোঁজে নামে। ওই রাতে তৃণমূলের কয়েকজন নেতা-কর্মী পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফাঁড়িতে হইচই করেন বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ফাঁড়িতে যান মন্ত্রী গৌতমবাবু। ‘রমজানের মাসে’ রাতে পুলিশের তল্লাশি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পুলিশ কমিশনার ফাঁড়িতে পৌঁছাতেই তৃণমূল কর্মীদের একাংশ বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। অভিযোগ, বারান্দায় রাখা ফুলের টব ফেলে দেওয়া হয়। ওসির টেবিলের কাঁচ ভেঙে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। পুলিশের দাবি, মন্ত্রী অবশ্য দুঃখপ্রকাশ করে কমিশনার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করে চলে যান।
এই ঘটনার পরে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি কংগ্রেস কমিটির সভাপতি তথা রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী দেবাশিস প্রামাণিক বলেন, “পুলিশকে প্রভাবিত করার চেষ্টাও হচ্ছে। আমরা নির্বাচন কমিশনে সব জানিয়েছি।” জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহন বসুর অভিযোগ, “নির্বাচন বিধির তোয়াক্কা না করে কংগ্রেস কর্মীদের জোর করে গ্রেফতার করাতে এনজেপি ফাঁড়িতে ঢুকে পুলিশ কর্মী এবং আধিকারিকদের হুমকিও দিয়েছেন মন্ত্রী দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের সভাপতি তথা মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক শঙ্কর মালাকার জানান, সব কিছু নির্বাচন কমিশনে জানানো হবে। তিনি বলেন, “পুলিশ ফাঁড়িতে জিডি হলেও কেন এফআইআর হল না তা নির্বাচন কমিশন খতিয়ে দেখুক।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.