|
|
|
|
স্টেডিয়াম সংস্কারে গতি নেই
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
আইএফএ’র উদ্যোগে আগামী নভেম্বরে আইপিএলের ধাঁচে ফুটবল টুর্নামেন্ট হওয়ার কথা। খেলা হবে মেদিনীপুরেও। কিন্তু তার আগে শহরের অরবিন্দ স্টেডিয়াম সংস্কারের কাজ শেষ হবে কি না সংশয়। কারণ, কাজ এগোচ্ছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। সমস্যা মানছে কাজের দায়িত্বে থাকা মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এমকেডিএ)। পর্ষদের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি বলেন, “ঠিকাদার সংস্থাকে সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছি। ফের ওই সংস্থার সঙ্গে কথা বলব।”
শহর ও শহরতলিতে হারিয়ে যাওয়া ফুটবল উন্মাদনা ফিরিয়ে আনতেই আইপিএলের ধাঁচে ফুটবল টুর্নামেন্ট করার পরিকল্পনা করেছে আইএফএ। এ নিয়ে একাধিক বৈঠকও হয়েছে। ৮টি জেলার ৮টি দল নিয়ে টুর্নামেন্ট হবে। সেই তালিকায় রয়েছে মেদিনীপুর। সামনের নভেম্বরে টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার কথা। চলবে ডিসেম্বর পর্যন্ত। শহর ও শহরতলি জুড়ে এখন সারা বছর ধরে ক্রিকেটের চর্চা চলে। এক সময় জেলা সদরে ফুটবল নিয়ে প্রচুর উন্মাদনা ছিল। ফুটবল খেলা দেখতে মাঠে ভিড় উপচে পড়ত। ক্রমেই ফিকে হয়েছে সেই উন্মাদনা। ফুটবলের আলো কেড়ে নিয়েছে ক্রিকেট। এই যখন পরিস্থিতি, তখন আইপিএলের ধাঁচে ফুটবল টুর্নামেন্ট হলে জেলা সদরে ফুটবল নিয়ে উৎসাহ বাড়বে বলে মনে করছে আইএফএ। কারণ, জেলার ছেলেরা ছাড়াও নামী ফুটবলাররা টুর্নামেন্টে খেলবেন। দর্শক টানবেন তাঁরাই। |
জেলার খেলার মাঠগুলির হাল এমনই। মেদিনীপুর স্টেডিয়ামের ছবিটি তুলেছেন রামপ্রসাদ সাউ। |
মেদিনীপুরে শহরে একমাত্র খেলার জায়গা অরবিন্দ স্টেডিয়াম। শহরে অন্য কোনও স্টেডিয়াম না থাকায় সারা বছর এখানে ক্রিকেট, ফুটবল, অ্যাথলেটিক্স নানা খেলা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে স্টেডিয়ামটি সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে। গ্যালারির বিভিন্ন জায়গায় সীমানা পাঁচিল ভেঙে পড়েছে। যেখানে নতুন করে ফেন্সিং তৈরি করা প্রয়োজন। না হলে খেলা চলাকালীন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। খেলোয়াড়দের পোশাক পরিবর্তনের জন্য আলাদা ঘর, ভিআইপি লাউঞ্জ তৈরি, চিকিৎসক বসার ঘর তৈরি করাও প্রয়োজন। এখন স্টেডিয়ামে প্রায় ১০ হাজার দর্শক বসার ব্যবস্থা রয়েছে। গ্যালারিতে বসতে পারেন প্রায় ৮ হাজার দর্শক। এ ছাড়া কর্মকর্তাদের বসার জায়গা, বিভিন্ন ফাঁকা জায়গায় চেয়ার দিয়ে আরও প্রায় দু’হাজার লোকের বসার ব্যবস্থা করা যায়। চলতি বছর গোড়ায় মেদিনীপুরে এসে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, স্টেডিয়ামের উন্নয়নে ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হবে। সেই মতো অর্থ বরাদ্দও হয়। বরাদ্দ অর্থে কী কী কাজ হবে, সেই পরিকল্পনা হয়েছে। কাজও শুরু হয়েছে। তবে কাজের গতি অবশ্য অত্যন্ত শ্লথ। শুরুতে একদিকের গ্যালারি ভেঙে ফেলা হয়। তারপর কাজ এগিয়েছে নামমাত্রই। আগে এই স্টেডিয়ামে জাতীয় স্তরের সাব-জুনিয়র ফুটবল টুর্নামেন্ট হয়েছে। মাঠটি প্রায় ৮ হাজার ৮০০ বর্গমিটারের। সাধারণত, ৯ হাজার ৬০০ বর্গমিটারের মাঠে যে কোনও স্তরের ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করা সম্ভব। সংস্কারের পর স্টেডিয়ামের চেহারাই বদলে যাবে বলে দাবি জেলা ক্রীড়া সংস্থার।
কিন্তু অনেকেই মনে করছেন, নভেম্বরের আগে স্টেডিয়ামের কাজ শেষ না হলে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজনে হিমসিম খেতে হবে। নামী ফুটবলাররা বেহাল পরিকাঠামো দেখে বিরক্ত হতে পারেন। গত মে মাসে স্টেডিয়াম পরিদর্শনে এসেছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র। চারপাশ ঘুরে দেখে তিনি বলেছিলেন, “মাঠটা বেশ ভাল। শুধু ড্রেসিং দরকার। দ্রুত কাজ শেষ হোক। তারপর এই মাঠে আই লিগের ম্যাচ দেবো। মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের মতো দল আসবে। টেস্ট ক্রিকেটারদের এনে আমন্ত্রণমূলক ক্রিকেট ম্যাচ করাবো।”
৬ মাসের মধ্যে যাতে স্টেডিয়াম সংস্কারের কাজ শেষ হয়, সেই দিকে নজর রাখারও নির্দেশ দেন ক্রীড়ামন্ত্রী। আই লিগের ম্যাচ তো দূরঅস্ত্। সংস্কার কাজ শেষে এখন আইপিএলের ধাঁচে ওই ফুটবল টুর্নামেন্ট সুষ্ঠু ভাবে আয়োজন করা যায় কি না, এখন তা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে। এমকেডিএ’র চেয়ারম্যানের অবশ্য আশ্বাস, “চিন্তার কিছু নেই। যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার কাজ শেষ হবে।” |
|
|
|
|
|