তিন সপ্তাহে পুরপ্রধান বাছতে বলল হাইকোর্ট
তিন সপ্তাহের মধ্যে বোর্ড মিটিং ডেকে খড়্গপুরে পুরপ্রধান নির্বাচন করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। জেলাশাসককে এই মিটিং ডাকতে হবে। খড়্গপুর পুরসভা সংক্রান্ত মামলাটি চলছিল হাইকোর্টের বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যের এজলাসে। শুনানি শেষে সোমবার বিচারপতি এই নির্দেশ দেন।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছে সবপক্ষই। প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা কংগ্রেস কাউন্সিলর রবিশঙ্কর পাণ্ডের কথায়, “দীর্ঘদিন ধরে পুরসভায় অচলাবস্থা চলছে। আদালতের রায়ে আমরা খুশি। এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারেরই মুখ পুড়ল।” অন্যদিকে, ভারপ্রাপ্ত পুরপ্রধান তথা তৃণমূল কাউন্সিলর তুষার চৌধুরীর বক্তব্য, “আদালতের নির্দেশে আমি দায়িত্ব পালন করছি। আদালত যেমন নির্দেশ দেবে, সেই মতোই পদক্ষেপ করব।”
বস্তুত, তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে গত ১৪ অগষ্ট অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল কংগ্রেস। গোড়ায় এই বোর্ডকে সমর্থন করেছিল কংগ্রেস। পরে সেই সমর্থন প্রত্যাহার করা হয়। অনাস্থা প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে গত ২৭ অগষ্ট পুরসভায় বোর্ড মিটিং হয়। এই মিটিংয়ে ঠিক কী হয়েছে, মিটিংটি বৈধ না অবৈধ, তা নিয়েই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। কংগ্রেসের দাবি ছিল, বৈধ ভাবে মিটিং হয়েছে। অনাস্থা ভোটে হেরে গিয়েছেন পুরপ্রধান জহরলাল পাল। তৃণমূলের বক্তব্য ছিল, অবৈধ ভাবে মিটিং হয়েছে। এই অবস্থায় প্রায় এক সপ্তাহ ধরে টালবাহানা চলে। শেষমেশ ৫ সেপ্টেম্বর পুর- দফতর থেকে একটি নির্দেশিকা আসে। যেখানে জানানো হয়, অনাস্থা সংক্রান্ত বৈঠকের বিষয়টি লিগ্যাল সেলের বিবেচনাধীন। যতক্ষণ না সেল কোনও মতামত দিচ্ছে, ততক্ষন অবধি ২৭ অগষ্টের আগে পুরসভা যেমন চলছিল, তেমনই চলবে। অর্থাৎ, জহরলাল পাল পুরপ্রধানের কাজকর্ম চালাবেন।
এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিল কংগ্রেস। কংগ্রেসের বক্তব্য, বিষয়টি যখন লিগ্যাল সেলের বিবেচনাধীন, তখন উপপুরপ্রধান তুষার চৌধুরীকে পুরপ্রধানের কাজ চালানোর নির্দেশ দেওয়া উচিত ছিল। তবে পুর- দফতর তা করেনি।
এদিকে, পুরসভার বোর্ড মিটিংকে কেন্দ্র করে রাজ্যের পুর- দফতর যে নির্দেশিকা জারি করেছিল, গত ২৪ সেপ্টেম্বর তার উপর স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্ট জানায়, পুরপ্রধান নন, পুর- আইন অনুযায়ী পরবর্তী পুরপ্রধান নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত পুরসভার কাজ চালিয়ে যাবেন উপপুরপ্রধান। সেই মতো উপপুরপ্রধান তুষার চৌধুরী পুরসভার কাজকর্ম চালাচ্ছিলেন। সোমবার হাইকোর্ট নির্দেশ দিল, তিন সপ্তাহের মধ্যে বোর্ড মিটিং ডেকে খড়্গপুরে পুরপ্রধান নির্বাচন করার। হাইকোর্টের এই রায়ে তাদের নৈতিক জয় হয়েছে বলেই মনে করছে কংগ্রেস- শিবির। এদিকে, এই সময়ের মধ্যে কাঁসাই দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। বদলেছে রেলশহরের রাজনীতির ছবিটাও। খড়্গপুর পুরসভায় ৩৪ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। এর মধ্যে ১৪ জন তৃণমূলের, ১৪ জন কংগ্রেসের, ২ জন সিপিআইয়ের, ১ জন সিপিএমের, ১ জন বিজেপির এবং ২ জন নির্দল। নির্দল কাউন্সিলর সত্যদেও শর্মা বছর খানেক আগে থেকে কংগ্রেস- শিবিরে রয়েছেন।
বস্তুত, রেলশহরে সিপিআইয়ের ৩ জন কাউন্সিলর ছিলেন। তৈমুর আলি খান নামে এক কাউন্সিলরকে ক’মাস আগে দল থেকে বহিস্কার করে সিপিআই। তিনি অন্য কোনও দলে যোগও দেননি। অন্যদিকে, দলের কাউন্সিলর কমল কুণ্ডুর মৃত্যুতে তৃণমূলের কাউন্সিলর সংখ্যা ১৫ থেকে কমে ১৪ হয়েছে। এই অবস্থায় পুরপ্রধান নির্বাচনে কোন শিবিরের সমীকরণ কী দাঁড়ায়, তা নিয়েও রেলশহরে শুরু হয়েছে জল্পনা।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.