ভোট দিচ্ছেন দুই মন্ত্রী
অনেক বুথে রাতেও ভিড়, উত্সাহে ভোট দিল সিঙ্গুর
প্রবল আগ্রহে গণতন্ত্রের মহাযজ্ঞে সামিল হল সিঙ্গুর।
টাটাদের প্রকল্প এলাকা থেকে জমি ফিরে পাওয়া যাবে কি না, সেই চিন্তা রয়েছে গ্রামবাসীদের। কিন্তু সোমবার সেই চিন্তাকে দূরে সরিয়ে গ্রামবাসীরা ভোটের লাইনে দাঁড়ালেন। অন্তত ২৭টি বুথে সূর্য ডোবার পরেও ভোট নেওয়া হয় বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। সে জন্য প্রশাসনের তরফে ওই সব বুথে আলোর ব্যবস্থা করা হয়।
২০০৮ সালের ভোটে ১৬টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৫টি দখল করে তৃণমূল। পঞ্চায়েত সমিতি এবং তিনটি জেলা পরিষদ আসনও ছিল তাদের দখলে। সেই সমীকরণ কতটা পাল্টাবে? সেই প্রশ্নের উত্তর দিতেই এ দিন সকাল থেকে বুথমুখো হন গ্রামবাসীরা। দিনের শেষে অবশ্য শাসক দলের বিরুদ্ধে মারদাঙ্গার অভিযোগ তোলেননি বিরোধীরা। গ্রামবাসীরাও সার্বিক গণতন্ত্রের পক্ষেই আস্থার কথা জানান। গোপালনগরের বাসিন্দা হাবুল দাস বলেন, “বাবুর ভেড়ি বুথে আমাদের ভোট ছিল। এখানকার ভোটে কোনও গোলমাল হয়নি।” একই কথা জানিয়েছেন সেখানকার বাসিন্দা মদন অধিকারীও।
রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য।
বেলা যত গড়িয়েছে সিঙ্গুরে এ দিন ভোটের লাইন ততই যেন দীর্ঘ হয়েছে। সিঙ্গুর ব্লকের ১৬টি পঞ্চায়েতের ১৪০ জন প্রার্থীর ভাগ্য এ দিন নির্ধারিত হল। বিকেল সোয়া চারটেয় সিঙ্গুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেল, তখনও ভোটারদের উপছে পড়া ভিড়। ঠেসাঠেসি ভিড়ে দাঁড়িয়েছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্মী ফণীন্দ্রনাথ সামন্ত। তিনি বলেন, “অন্তত দেড় ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। আরও দেড় ঘণ্টা দাঁড়াতেও আপত্তি নেই। ভোট দিয়ে তবেই বাড়ি ফিরব।” পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন নিতাইচন্দ্র রানা। তাঁর কথায়, “ভেবেছিলাম বিকেলের দিকে এলে কিছুটা ফাঁকা পাব। ও মা! এসে দেখি বিস্তর লাইন। অগত্যা দাঁড়িয়ে আছি।”
ঘড়ির কাঁটা ধরে বিকেল ৫টার মধ্যে যাঁরা ভোটকেন্দ্রে পৌঁছন, ভোটকর্মীরা তাঁদের হাতে স্লিপ ধরিয়ে দেন। গোপালনগর সাহানাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাওনান ছোয়ানি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আতালিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, চক পহলমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাত পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। এই চিত্রও দেখা গিয়েছে, শেষ বেলায় ভোট দিতে এসে বুথে ঢুকতে না পেরে রীতিমতো হইচই বাধিয়ে দিয়েছেন সিঙ্গুরের গোপালনগর মধ্যপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে।
বেচারাম মান্না, সঙ্গে স্ত্রী করবী।
সার্বিক ভাবে ভোট নির্বিঘ্নে হলেও একটি ছোট ঘটনা এড়ানো যায়নি। ন’পাড়ায় কংগ্রেস এবং তৃণমূলের সমর্থকদের মধ্যে এক দফা মারামারি হয়। গদাই চন্দ্র সাঁতরা নামে কংগ্রেসের এক পঞ্চায়েত প্রার্থীর মাথা ফাটে। তাঁকে চন্দননগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সিপিএমের সিঙ্গুর জোনাল কমিটির সম্পাদক পাঁচকড়ি দাস বলেন, “দু’একটি ছোটখাটো ঘটনা ছাড়া মানুষ ভোট দিতে পেরেছেন। প্রশাসন অবশ্য বিক্ষিপ্ত ভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘুরিয়েছে।” রাজ্যের কৃষি প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্না সকাল থেকে ঘুরেছেন সিঙ্গুর এবং হরিপালের নানা বুথে। তিনি বলেন, “সিঙ্গুরের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ রীতিমতো উত্‌সাহ নিয়ে ভোট দিয়েছেন। কোথাও কোনও অশান্তি হয়নি। রাজ্যে এর আগে কখনও এ রকম ভোট হয়নি।” সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “বিচ্ছিন্ন ভাবে আমাদের দলের যাঁরা নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছেন, তাঁরা তৃণমূলের ক্ষতি করতে পারবেন না। তৃণমূল সর্বত্রই জিতবে।”

ছবি: দীপঙ্কর দে



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.