এক দিকে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিলের বৈঠক চলছে , তখনই বিভিন্ন দাবিতে বাইরে পরপর অবস্থান করলেন পড়ুয়ারা। সোমবার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই বৈঠক হয়। তখনই বাইরে অবস্থান করে প্রাণিবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা ও শারীরবিদ্যা, তিনটি বিষয়কে একত্র করে একটিই বিভাগে ছাত্রভর্তির বদলে স্নাতকোত্তরে তিনটি বিষয়ে পৃথক ভাবে ভর্তি চালু রাখার দাবি জানান ওই তিন বিষয়ের স্নাতক স্তরের পড়ুয়ারা। অন্য দিকে, স্নাতকোত্তরে আসন বাড়ানোর দাবিতে অবস্থান করলেন গণিত ও অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা। আগে এক বার রাজ্যপালের উপস্থিতিতে কাউন্সিলের বৈঠক চলাকালীনও বাইরে অবস্থান করেছিলেন পড়ুয়ারা।
প্রাণিবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা ও শারীরবিদ্যা এই তিন বিষয়কে একত্র করে এ বছর থেকে বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস নামে একটিই বিভাগ চালু হয়েছে প্রেসিডেন্সিতে। কিন্তু আগের বছরগুলিতে স্নাতক স্তরে যাঁরা ওই তিন বিভাগে ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের অনেকের দাবি, স্নাতকোত্তরে তাঁরা প্রাণিবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা বা শারীরবিদ্যা নিয়ে পড়তে চান। বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস নিয়ে নয়। কাউন্সিলের বৈঠকে ছাত্রদের দাবি মেনে আপাতত স্নাতকোত্তরে ওই তিন বিভাগে ছাত্রভর্তি চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। |
প্রেসিডেন্সির অর্থনীতি বিভাগ আয়োজিত বক্তৃতা-মঞ্চে অমর্ত্য সেন।
সঙ্গে উপাচার্য মালবিকা সরকার। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র। |
জাতীয়, আন্তর্জাতিক স্তরের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই এই বিষয়গুলি পৃথক ভাবে পড়ানো হয় না। সেখানে বায়োলকিজ্যাল সায়েন্সেসেরই চল। যদিও রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আলাদা আলাদা ভাবে বিষয়গুলি পড়ানো হয়। এ দিন বৈঠক চলাকালীন উপাচার্য মালবিকা সরকার বেরিয়ে এসে অবস্থানকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে মালবিকাদেবী বলেন, “এই ছাত্রছাত্রীরা যখন ভর্তি হয়, তখন তিনটির জায়গায় একটি পাঠ্যক্রম চালুর কথা হয়নি। তাই এদের দাবি মেনে স্নাতকোত্তরে তিন বিষয়ে পৃথক ভাবে ছাত্রভর্তির সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্নাতক স্তরে যে তিনটি ব্যাচের পড়ুয়া আছেন, শুধু তাঁদের জন্যই এই সুযোগ।” বহিরাগত পড়ুয়ারা অবশ্য ভর্তি হবেন বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস বিভাগেই। তবে বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস বিভাগে ভর্তি হওয়াই যে তাঁদের ভবিষ্যতের জন্য ভাল, সমস্ত ছাত্রছাত্রীদেরই তা বোঝানো হবে বলে মালবিকাদেবী জানান।
এ দিনই প্রথম নয়। পৃথক বিভাগে ছাত্রভর্তির দাবি বেশ কয়েক দিন ধরে জানাচ্ছেন ওই ছাত্রছাত্রীরা। গত সপ্তাহে বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস বিভাগের বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, পড়ুয়াদের দাবিদাওয়ার জেরে স্নাতকোত্তরে ছাত্রভর্তি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিও জারি করা যায়নি। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক বলেন, “তা ঠিক নয়। কাউন্সিলের বৈঠকের অপেক্ষা করা হচ্ছিল। এ বার বিজ্ঞপ্তি জারি হবে।”
স্নাতকোত্তরে আসন বাড়ানোর জন্য গণিত ও অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রছাত্রীরাও কাউন্সিলের বৈঠক চলাকালীন অবস্থান করেন। উপাচার্য অবশ্য জানান, পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না থাকায় এ বছর স্নাতকোত্তরে আসন বাড়ানো যাবে না।
উপাচার্য জানান, এ দিন ‘সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন রোম্যান্টিক লিটারেচার’ নামে একটি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপিত হয়েছে প্রেসিডেন্সির। ওই কেন্দ্রের সংগ্রহে থাকা বই, সিডি ইত্যাদি এ বার প্রেসিডেন্সিতেই একটি ঘরে ঠাঁই পাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের পাশাপাশি অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের, এমনকী পড়শি রাজ্য থেকেও কেউ চাইলে ওই সংগ্রহগুলি ব্যবহার করতে পারবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্সির সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে গঠিত মেন্টর গ্রুপ আজ, মঙ্গলবার বৈঠকে বসবে। এ মাসেই তাদের পঞ্চম রিপোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে জমা দেওয়ার কথা।
মেন্টর গ্রুপের চেয়ারম্যান সুগত বসু জানিয়েছেন, নিজেদের বিভিন্ন সুপারিশ ও মতামত সংবলিত রিপোর্ট তাঁরা এ মাসেই জমা দেবেন রাজ্য সরকারের কাছে। |