শ্বশুরবাড়িতে নির্যাতন হত বলে বাপের বাড়িতে চলে এসেছিলেন। কিন্তু, সেই ‘নিরাপদ আশ্রয়েও’ খুন হলেন এক বধূ। খুনের অভিযোগে পুলিশ ধরল তাঁর স্বামীকে। তবে, সরমিনা বিবি (২৪) নামে ওই বধূকে কী ভাবে মারা হয়েছে, তা পুলিশের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়।
বীরভূমের দুবরাজপুর থানার চিতগ্রামের ঘটনা। ধৃত স্বামী শেখ পিয়ারুলের দাবি, “রবিবার রাতে স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হতে চেয়েছিলাম। ও রাজি না হওয়ায় মাথা গরম হয়ে যায়। কানের কাছে জোরে চড় মারি। ভুল হয়ে গিয়েছে।” পুলিশের কাছে জেরায় একই দাবি করেছে সে। ধৃতকে সোমবার দুবরাজপুর আদালতে তোলা হলে দু’দিন পুলিশি হেফাজত হয়। পুলিশ জানিয়েছে, সরমিনার মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরোচ্ছিল। মৃতদেহের পাশে পড়েছিল রবারের টিউবের সরু অংশ। ফলে শ্বাসরোধ করে খুনের সম্ভাবনা পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না। |
ধৃত পিয়ারুল। —নিজস্ব চিত্র |
স্থানীয় সূত্রের খবর, সরমিনার এটা দ্বিতীয় বিয়ে। প্রথম স্বামী অসুখে মারা যাওয়ার দেড় বছর পরে কাঁকরতলা থানার বড়রা-ডাঙালপাড়ার বাসিন্দা পিয়ারুলের সঙ্গে বিয়ে হয়। দু’বারই সম্বন্ধ করে বিয়ে হয়েছিল। সরমিনার মা জারেফা বিবির অভিযোগ, “মাস পাঁচেক শ্বশুরবাড়িতে ছিল মেয়ে। তার মধ্যেই ওকে ইলেকট্রিক শক দেওয়া, মারধর করা হচ্ছিল। বিষাক্ত কিছু খাইয়ে ওর গর্ভের সন্তানকে মেরেও ফেলতে চেয়েছিল শ্বশুর, শাশুড়ি, জামাই ও পরিবারের লোকেরা। শ্বশুরবাড়ি থেকে নিয়ে এসে সিউড়ি হাসপাতালে ভর্তি করে মেয়ে ও নাতিকে বাঁচাতে পেরেছিলাম। আর ওকে শ্বশুরবাড়ি পাঠাইনি।”
দুবরাজপুর আদালতে বধূ নির্যাতন ও খোরপোষোর মামলা করেন জারেফা বিবি। তিনি বলেন, “মেয়েকে নিয়ে যাবে বলে দিন দু’য়েক আগে জামাই আসে। বলেছিলাম, দু’পক্ষ ও পড়শিদের সামনে লিখিত চুক্তির পরই মেয়েকে পাঠাব। জামাই আমার বাড়িতে থেকে গিয়েছিল। রমজান চলছে। মেয়েও রোজা রেখেছিল। রবিবার রাত আড়াইটে নাগাদ উঠে মেয়েকে ডাকছিলাম। সাড়া পাইনি। পরে জামাই দরজা খুললে দেখি, মেয়ের নিথর দেহ বিছানায় পড়ে।” পিয়ারুল পালানোর চেষ্টা করলেও জারেফা বিবির চিৎকারে পড়শিরা তাকে ধরে ফেলেন। সকালে সে গ্রেফতার হয়। |