কুল বদলে গুরুর চাঁদমারিতে চ্যালা
কে অন্যের কব্জির জোর জানেন। ফাঁকফোকরও।
এক জন গুরু অন্যকে হাতে ধরে শিখিয়েছেন, কী ভাবে ভোট করতে হয়। অন্য জন ক্ষমতার হাওয়া বুঝে গুরু ছেড়ে ‘গুরুমা’ ধরেছেন।
ঘাসফুলে ছেয়ে যাওয়া তামাম বর্ধমান জেলায় হাতে গোনা যে ক’টি জায়গায় সত্যি লড়াই হচ্ছে, তার একটি এই সালানপুর। তবে সিপিএম ছবিতেই নেই। এ কুরুক্ষেত্রে বৃদ্ধ দ্রোণাচার্যের ধ্বজা তেরঙ্গা। মধ্যবয়সী অর্জুনেরও তাই, তবে মধ্যে একটি জোড়াফুল। আর, রথচক্রের পাশে নেপোর ভূমিকায় সিপিএম।
প্রদেশ কংগ্রেস সদস্য শ্যামল মজুমদার রাজনীতিতে নেমেছেন, তাঁর শিষ্যের তখনও ছাত্রদশা ঘোচেনি। সেই ছেলেকে রাজনীতির আনাচ-কানাচ চিনিয়ে, ভোটে জিতিয়ে এনে আজকের ধরম কর্মকার করে তুলতে তাঁর কম ঘাম ঝরেনি। এর আগে ধরম রূপনারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে জিতে প্রধান হয়েছেন। ২০০৮-এ আরও বড় মাঠে, পঞ্চায়েত সমিতির আসনে তাঁকে জেতাতে দিনরাত এক করেছেন শ্যামলবাবুই। সভায়-সভায় বলেছেন, ‘সোনার ছেলে ধরমকে ভোট দিন।’ সেই ভোটে নিজেদের শক্ত ঘাঁটি সালানপুরে ২০টি আসনের মধ্যে ১৪টি পেয়েছিল কংগ্রেস। শ্যামলবাবু নিজে সহ-সভাপতি হন, ধরম স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ। এত কিছুর পরেও ২০১১ সালের বিধানসভা ভোট মিটতেই ধর্ম পাল্টে ফেলেন ধরম। শ্যামল কানন ছেড়ে উড়ে গিয়ে বসেন জোড়াফুলের বাগানে। গুরুজি দাগা পেয়েছিলেন বৈকি! এ বার তারই হিসেব-নিকেশ করার সময় এসেছে। নিজের ৯ নম্বর আসনে ফের দাঁড়িয়েছেন শ্যামলবাবু। ধরমের জেতা ৮ নম্বর মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। ছিটকে পাশে সরতে গিয়ে তিনি পড়েছেন গুরুর মুখোমুখি।
একেই বোধহয় বলে ‘ধর্মের কল’। কিন্তু তার পরেও শ্যামলবাবু তেমন নখ-দাঁত বের করতে পারলেন কই? এক সময়ে যে ছায়াসঙ্গীকে নিয়ে ভোট বৈতরণী পার করেছেন, তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার আফশোসই যেন হজম হচ্ছে না তাঁর। তবে বাড়ি-বাড়ি প্রচার শেষে তিনি বলছেন, “বিপদে উদ্ধার পেতে কোথায় যেতে হয়, এলাকার মানুষ জানেন।” এমন দৃশ্যে যে কোনও কুলত্যাগী শিষ্য যা বলে থাকেন, ধরমও তা-ই বলছেন “উনি আমার রাজনৈতিক গুরু ঠিকই। পোড় খাওয়া রাজনীতিক। তবু বলছি, আমরাই জিতব।” অসম্ভব নয়। স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ হওয়ার সুবাদে পাঁচ বছর তিনি নাগাড়ে গোটা ব্লক চষে বেড়িয়েছেন। চেনা-পরিচিতির খামতি নেই। নিজেই বলছেন, প্রতিটি ভোটারের কাছে অন্তত বার তিনেক গিয়েছেন। আর ভোটে জেতার বাকি জারিজুরি যে ধরম তাঁর কাছ থেকেই শিখে গিয়েছেন, শ্যামলবাবুর চেয়ে ভাল কে জানে!
তা হলে?
“আসল অস্ত্র আমার আস্তিনেই লুকানো আছে। গুরুমারা বিদ্যেটা তো আর শেখাইনি!”
গুরু হাসছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.