মাফিয়া ছাড়া ভোট কেমন, আজ দেখতে চায় লাউদোহা
লোকসভা হোক বা স্কুলভোট, অদৃশ্য রিমোট যেন থাকত তাঁদেরই হাতে। এক জন খুন হয়েছেন, অন্য জন জেলে। কয়লা মাফিয়া শেখ সেলিম ও শেখ আমিনকে ছাড়া কেমন হয় ভোট, আজ, সোমবার দেখতে চায় লাউদোহা।
বাম আমলে যে কোনও ভোটে কয়লা মাফিয়াদের ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে বারবার। দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের কৈলাসপুর, আমদহি, জগন্নাথপুর, মাধাইগঞ্জ ইত্যাদি এলাকার ভোট কেমন হবে, তা এক সময়ে আমিন আর সেলিমই ঠিক করে দিত বলে অভিযোগ ছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। লাউদোহায় সেই অভিযোগ যে একেবারে ভিত্তিহীন নয়, তার প্রমাণও মিলেছে কয়েক বার। সিপিএমের সভা-সমিতিতে দেখা গিয়েছে সেলিমকে। ২০০৮ সালে কয়লার চোরা কারবারের বিরুদ্ধে সরব হন লাউদোহা লোকাল কমিটির সদস্য শেখ ফারুখ হোসেন ও তাঁর সহকারী সুধীর বাউড়ি। খুন হয়ে যান তাঁরা। সেই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত সেলিম জেলে যান। ছাড়া পাওয়ার পরে তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। ২০১২ সালে একটি স্কুলভোটে তৃণমূলের লোকজনের সঙ্গে প্রকাশ্যে ঘুরতেও দেখা যায় তাঁকে। সে বছরই অক্টোবরে দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হন তিনি।
এক সময়ে সেলিমেরই সঙ্গী ছিল আমিন। পরে সেলিমের সঙ্গে শুরু হয় ক্ষমতা দখলের লড়াই। ২০০৮ সালে সেলিম গ্রেফতার হওয়ার পরে শক্তি বাড়ে আমিনের। সে বছরই সেলিমের ভাই শেখ জাহাঙ্গিরকে খুনের অভিযোগ ওঠে আমিনের বিরুদ্ধে। ২০০৯-এর ১৪ ডিসেম্বর সেলিমের আর এক ভাইয়ের কাঠগোলার দুই কর্মীকে গুলি করে খুনের ঘটনাতেও প্রধান অভিযুক্তও সে। ২০১১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি আমদহি গ্রামে দুই তৃণমূল কর্মীকে খুনের ঘটনায় আমিন-সহ মোট কুড়ি জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়। ওই বছর ২২ ফেব্রুয়ারি আমদহি গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয় শেখ আমিনকে। মে মাসে ২০০৯ সালে জোড়া খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর থেকেই সে জেলে।
লাউদোহার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ভোটের কাজে এর আগে পর্যন্ত নানা পক্ষ সেলিমকে ‘ব্যবহার’ করেছে। আমিনকে অবশ্য রাজনৈতিক নেতাদের আশপাশে তেমন ভিড়তে দেখা যায়নি। তবে গত তিন বছরে আমিনের লোকের হাতে অন্তত ১০ জন খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ। সেলিম-আমিনের অনুপস্থিতিতে এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। তাই বাসিন্দারা আশায়, এ বার শান্তিতে ভোট হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৈলাসপুরের দুই বাসিন্দা বলেন, “যে কোনও ভোটের আগেই এলাকায় সশস্ত্র দুষ্কৃতী আনাগোনা বেড়ে যেত। সন্ত্রস্ত হয়ে থাকতে হত। এ বার তা হয়নি।”
এ বার লাউদোহা পঞ্চায়েতের অধিকাংশ আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতায় ক্ষমতা দখল করতে চলেছে তৃণমূলই। পঞ্চায়েত সমিতিতে ১৭টি আসনের মধ্যে ৮টি প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া জিততে চলেছেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “আমরা কখনও মাফিয়াদের দিয়ে ভোট করাইনি। ওদের দিয়ে ভোট করাত সিপিএম। এ বার মানুষ প্রথম শান্তিতে ভোট দিতে পারবেন।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমল হালদারের অবশ্য বক্তব্য, “মাফিয়ারা নেই ঠিকই। কিন্তু অজয়ের ও পার থেকে প্রচুর দুষ্কৃতী এলাকায় ঢুকেছে। প্রশাসন যদি তাদের আটকে রাখতে পারে, তবেই মানুষ ভোট দিতে পারবেন। তাই ভোট মেটার আগে কিছু বলা যাবে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.