‘ওডাফাকে বল বাড়াতে হবে ভেবেই টেনশন হচ্ছে’ |
ভারতে আসার পর স্বপ্ন ছিল ওডাফার পাশে খেলার। শেষ পর্যন্ত তা পূর্ণ হলেও অন্য আশঙ্কা এ বার ঘিরে ধরেছে মোহনবাগানের জাপানি ফুটবলার কাতসুমি ইউসাকে।
সবুজ-মেরুনের ‘জাপানি বোমা’ বলছেন, “ওডাফার বিরুদ্ধে খেলেছি। এ বার ওকে গোলের জন্য বল বাড়াব ভেবেই টেনশন হচ্ছে। ওডাফার পাশে ভাল খেলা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে আমি তৈরি। চেষ্টার ত্রুটি থাকবে না।”
গরমের জন্য গত মরসুমের সেই কাঁধ পর্যন্ত লম্বা চুল আর নেই। ছেঁটে ফেলেছেন। চেহারায় নতুন সংযোজন গোঁফ জোড়া। গত মরসুমে ওএনজিসি-র জার্সি গায়ে ২৫ ম্যাচে ৬ গোল করেছিলেন এই জাপানি ফরোয়ার্ড। এর মধ্যে নজর কাড়ে মর্গ্যানের দলের বিরুদ্ধে তাঁর শেষ মুহূর্তের গোল। যা আই লিগ চ্যাম্পিয়নশিপের কক্ষপথ থেকে সরিয়ে দেয় ইস্টবেঙ্গলকে।
মরসুম শেষ হতেই কাতসুমিকে নিয়ে কলকাতার দুই প্রধানের মধ্যে শুরু হয়ে যায় দড়ি টানাটানি। শেষ পর্যন্ত লাল-হলুদের জাল কেটে কাতসুমিকে সবুজ-মেরুন নৌকায় তোলেন অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত। শহরে পা দেওয়ার ৭২ ঘণ্টা পরে শনিবার বিকেলে মোহনবাগান তাঁবুতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সে কথা গোপনও করেননি জে লিগের ক্লাব হিরোশিমা সানফ্রেসি-তে ফুটবল জীবন শুরু করা কাতসুমি। এজেন্ট কাম দোভাষী অরবিন্দকে পাশে বসিয়ে বললেন, “ইস্টবেঙ্গলের প্রস্তাবও ছিল। কিন্তু মোহনবাগানের ঐতিহ্য এবং আন্তরিকতাই এখানে টেনে আনল।” |
ওএনজিসিতে কাতসুমির প্রাক্তন কোচ সন্তোষ কাশ্যপ উচ্ছ্বসিত কাতসুমির মোহনবাগান ইনিংস প্রসঙ্গে। মুম্বই থেকে ফোনে বললেন, “ছেলেটার গতি, ড্রিবলিং, প্রখর ফুটবল বোধ, শৃঙ্খলা, পরিশ্রম মনে রাখার মতো। ভাল পাসার। ওডাফা কিন্তু এ বার অনেক বল ওর থেকে পাবে।”
সোমবার থেকেই নেমে পড়বেন অনুশীলনে। তবে এখনও জার্সি পাননি। সচিব অঞ্জন মিত্র জানিয়েছেন, ২৯ জুলাই মোহনবাগান দিবসের দিনেই প্রতিটি ফুটবলারের হাতে তুলে দেওয়া হবে জার্সি। তবে ভিতরের খবর, চলতি মরসুমে করিমের দলের ১০ নম্বর হতে চলেছেন চব্বিশ বছর বয়সি এই জাপানি ফুটবলার।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর ভক্ত কাতসুমি সাবলীল সেন্ট্রাল অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসাবেই। কিন্তু দলের প্রয়োজনে যে কোনও প্রান্তেই বা স্ট্রাইকারের পিছনে উইথড্রয়াল ফরোয়ার্ড হিসাবেও খেলতে পারেন। বলছেন, “করিম ভারতের অন্যতম সফল কোচ। তবে কোচের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত কোনও কথা হয়নি। করিম যে ভাবে চাইবেন দলের প্রয়োজনে সে ভাবেই নিজেকে মেলে ধরতে প্রস্তুত রয়েছি।”
এ দিন সাংবাদিক সম্মেলন সেরেই সদস্য, সমর্থক, সাংবাদিক পরিবৃত হয়ে ছুটলেন মোহনবাগান মাঠ দেখতে। ফুকুশিমার ছেলে সেখানে বল নাচিয়ে মেটালেন আলোকচিত্রীদের আবদারও।
টানা তিন মরসুম ট্রফি নেই। গঙ্গাপারের তাঁবুর এই চরম দুঃসময়ে বিপত্তারিণী পুজোর বিকেলে কাতসুমির আগমন ট্রফি-খরার বিপদ কাটাবে বলেই আশাবাদী সবুজ-মেরুন সমর্থকরা। আর কাতসুমি বলছেন, “ওপারা ভারতের সেরা ডিফেন্ডার। ওকে টপকাতে গেলে কিন্তু অনুশীলনে নিজেকে নিংড়ে দিতে হবে।”
ফুকুশিমায় বেড়ে উঠেছেন। দু’বছর আগে যেখানকার পারমাণবিক বিকিরণে কেঁপে গিয়েছিল দুনিয়া। এ বার কি বাগানের আক্রমণে কাতসুমির তেজস্ক্রিয়তা ঝলসে দেবে বিপক্ষ রক্ষণকে? শুনে হাসছেন জাপান এবং প্যারাগুয়ের লিগে খেলা কাতসুমি। বলছেন, “ডোন্ট গিভ আপ হোপ। মোহনবাগানই ভারতের সেরা দল। এ বার ট্রফি আমরা পাবই।” |