|
|
|
|
পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ভোট |
নীতীশের সম্মতি মেলেনি, ক্যাম্পে ফিরল বিএমপি |
স্বপন সরকার • পটনা |
শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি না আসায় স্টেশনে কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করে বিহার মিলিটারি পুলিশের ১০ কোম্পানি জওয়ান ফিরে গেল ব্যারাকে। কলকাতার ট্রেনে চড়া আর তাদের হল না।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে আধা সেনা বরাদ্দ করতে হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করতে হচ্ছে বাহিনী। ১০ কোম্পানি বিএমপি পাঠানোর জন্য বিহার সরকারকে নির্দেশ দেয় মন্ত্রক। বিহারের অধীনে থাকা এই বিএমপি কোথাও মোতায়েন করতে গেলে কেন্দ্রীয় নির্দেশের পরেও বিহারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন দরকার। বিহার সরকারের সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহ ধরে মুখ্যমন্ত্রীর টেবিলেই এই সংক্রান্ত ফাইলটি পড়ে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সই করেননি।
গত কালই বিএমপি জওয়ানদের ট্রেন ধরার কথা ছিল। ফাইলে মুখ্যমন্ত্রী সই করে দেবেন এই ভেবেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। গত কাল সকাল ৯টায় দানাপুর স্টেশনে পৌঁছে বিএমপি জওয়ানরা ট্রেনে গুছিয়ে-গাছিয়ে বসেন। বেলা দশটায় ট্রেন ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু ট্রেন ছাড়েনি। দানাপুর স্টেশনে পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নিজেদের ব্যারাকে যান জওয়ানরা। পশ্চিমবঙ্গে বিহার মিলিটারি পাঠানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি মেলেনি।
রাজ্য পুলিশের সূত্রে জানা গিয়েছে, কাল সকাল ৯টায় বিশেষ ট্রেনে পশ্চিমঙ্গে যাওয়ার কথা ছিল ১০ কোম্পানি বিহার মিলিটারি পুলিশের। বিহার মিলিটারি পুলিশের কর্তাব্যক্তিরা নিশ্চিত ছিলেন, অনুমতি আসবে। সেই মতো অনুমতি মেলার আগেই সশস্ত্র পুলিশ কর্মীরা স্টেশনে পৌঁছে যায়। বিহার মিলিটারি পুলিশ নিশ্চিত ছিল যে পশ্চিমবঙ্গে কোন কোন ব্যাটেলিয়ন থেকে পুলিশ নিয়ে যাওয়া হবে তা ঠিক হয়েছে। সেই মতো পটনা, কাটিহার, গয়া, জামালপুর, মুজফ্ফরপুর প্রভৃতি ব্যাটেলিয়ন থেকে সশস্ত্র পুলিশ নিয়ে আসে। স্টেশনে দুটো পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরে ক্লান্ত জওয়ানরা বুঝতে পারছিলেন না, তাঁরা কী করবেন। ওই বিশেষ ট্রেনটি কলকাতায় যাওয়ার জন্য সকাল ১০টায় ছাড়ার কথা ছিল। বেলা দুটো নাগাদ সদর দফতর থেকে জানানো হয়, কলকাতায় যেতে হবে না। পরে স্টেশন ছাড়েন জওয়ানরা।
কেন এমন হল এ নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা মেলেনি। স্বরাষ্ট্র সচিব আমির সুভানি শুধু বলেন, “ফাইল মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছিল। তারপর কী হয়েছে আমি বলতে পারব না।” সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে পাঠানো নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য এক সপ্তাহ ধরে তাঁর টেবিলেই পড়ে ছিল। তা নিয়ে নীতীশ কুমার কোনও উচ্চবাচ্যই করেননি। কেন? মমতার রাজ্যে পুলিশ পাঠানোয় নীতীশের আপত্তি কেন? নাকি প্রস্তাবিত ফেডেরাল ফ্রন্টের কথা ভেবে মমতাকে না চটাতেই নীতীশ এই সিদ্ধান্ত নিলেন? সরকারের সঠিক কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বিষয়টির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি জড়িত থাকায় বিহার প্রশাসন কার্যত এই ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছে। বিহার মিলিটারি পুলিশের ডিআইজি অজয় কুমার মিশ্র বলেন, “আজ পর্যন্ত কোনও নির্দেশ পাইনি। কেন অনুমতি পাওয়া যায়নি তা বলতে পারব না। তবে আমরা শেষ মুহূর্তের নির্দেশের জন্যও তৈরি ছিলাম।” বিহার মিলিটারি পুলিশের এডিজি এ কে উপাধ্যায়ও এই ব্যাপারে অন্ধকারে। তিনি বলেন, “এর পিছনে কী কারণ তা জানি না।” |
|
|
|
|
|