টালা ট্যাঙ্কে পাঁচটি ফুটো!
কলকাতা পুরসভার কর্মীরা আপাতত তা সামাল দিলেও এই শহরে পানীয় জল সরবরাহের সব চেয়ে বড় ভরসার ওই কাঠামোর আয়ু নিয়ে চিন্তিত খোদ পুর-প্রশাসন।
১০৪ বছরের পুরনো ওই জলের ট্যাঙ্ক কতটা সুরক্ষিত রয়েছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সমীক্ষা শুরু করেছে পুর-প্রশাসন। আকারে ছোট হলেও ইতিমধ্যেই সেখানে বেশ কয়েকটি লিকেজ ভাবিয়ে তুলেছে জল সরবরাহ দফতরকে। এ বার একদল বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিলেন পুরকর্তারা। শনিবার সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন খড়্গপুর আইআইটি, যাদবপুর, শিবপুর, এইচআরবিসি, রাইট্স এবং কেওপিটি-র অধ্যাপক-ইঞ্জিনিয়ারেরা। আইআইটি-র এক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, ১০০ বছরেরও বেশি আগে লন্ডনে তৈরি ইস্পাত দিয়ে বানানো হয়েছিল টালার বিশাল ওই জলের ট্যাঙ্ক। ঠিক ওই একই ধরনের ইস্পাত দিয়েই তৈরি হয়েছিল টাইটানিক জাহাজও।
পুরসভা সূত্রের খবর, ৯০ লক্ষ গ্যালন জলধারণের ক্ষমতাসম্পন্ন টালা ট্যাঙ্ক এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে কাজ করে চলেছে। এই সময়ের মধ্যে ওই ট্যাঙ্কে বড় ধরনের কোনও রকম কাজ করার প্রয়োজন হয়নি। |
একই ধরনের ইস্পাতে তৈরি হয়েছিল টালা ট্যাঙ্ক ও টাইটানিক। |
তা হলে এখন হঠাৎ করে টালা ট্যাঙ্ক নিয়ে চিন্তার কারণ কী?
পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের ডিজি বিভাস মাইতি জানিয়েছেন, ১০০ মিটার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের ওই বিশাল জলের ট্যাঙ্কটি ১৬ ফুট উচ্চতার। তা রয়েছে ১১০ ফুট (প্রায় দশতলা বাড়ির সমান) উঁচুতে। পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, “১০০ বছর পার হল। মাঝেমধ্যেই ট্যাঙ্কে লিকেজের সন্ধান মিলছে। বড় কিছু হওয়ার আগে ওই ট্যাঙ্ক কেমন অবস্থায় আছে, তা জানা খুব জরুরি।”
যদিও গোটা কয়েক লিকেজ ছাড়া এতকাল ধরে ওই জলের ট্যাঙ্ক যে ভাবে কাজ করেছে, তাতেই বিস্মিত বিশেষজ্ঞেরা। রাইট্স-এর জেনারেল ম্যানেজার পল্লবকান্তি পাল বলেন, “ট্যাঙ্কটি গড়তে যে ধরনের ইস্পাত ব্যবহার করা হয়েছে, তার সংরক্ষণ করাই এখন প্রধান কাজ হবে।” তিনি জানিয়েছেন, ট্যাঙ্কের কোনও অংশ ক্ষতিগ্রস্ত কি না, তা জানাটা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষজ্ঞদের মতামত ছাড়া ওই কাজে হাত দেওয়া ঠিক হবে না। আর তড়িঘড়িও করা যাবে না।
পুর-কমিশনার খলিল আহমেদ জানিয়েছেন, ওই কাজ চলার সময়ে জল সরবরাহে যাতে কোনও বিঘ্ন না ঘটে, তার ব্যবস্থা করা হবে। পুরসভা সূত্রের খবর, সমীক্ষা শেষ হওয়ার পরে পুরো কাজের জন্য বিশদ প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি হবে। পরে তা পাঠানো হবে কেন্দ্রের জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের অনুদানের জন্য। শনিবার বিভাসবাবু জানান, খুব শীঘ্রই একদল বিশেষজ্ঞ ওই ট্যাঙ্ক পরিদর্শনে যাবেন। |