নেটে সওদার অর্ধেকই ছোট শহর থেকে
নেটে হেঁটে কেনাকাটায় মেট্রো শহরের সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দিচ্ছে মফস্সল। অনলাইনে পণ্য বা পরিষেবা কেনার (ই-কমার্স) ৫০ শতাংশ ব্যবসাই আসছে ছোট ও মাঝারি শহর থেকে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে এ বিষয়ে ‘এঁদো’ শহরতলির কাছে বেমক্কা গোল খাচ্ছে বড় শহর। দৌড়ে ঢুকে পড়েছে অনেক বর্ধিষ্ণু গ্রামও। আর সেই কারণে বাজার বাড়াতে ছোট-মাঝারি শহর এমনকী গ্রামাঞ্চলকেও এখন বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে ই-কমার্স সংস্থাগুলি।
বছর কয়েক আগেও অনলাইনে কেনা-বেচার ৮০ শতাংশ ব্যবসাই আসত বড় শহর থেকে। গ্রাম তো দূর অস্ৎ, এ বিষয়ে বহু যোজন পিছিয়ে ছিল ছোট ও মাঝারি শহরগুলি। কিন্তু এখন সেই ছবি বদলেছে। রেল-বিমানের টিকিট তো বটেই, স্মার্ট ফোনের অত্যাধুনিক মডেলও নেটে কিনে ফেলছে ছোট শহরের এই প্রজন্ম। প্রচলিত বিপণির তাকের দিকে হাপিত্যেশ করে তাকিয়ে না-থেকেই।
ইন্টারনেট অ্যান্ড মোবাইল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে এখন অনলাইন ব্যবসার অঙ্ক প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে ৪০ হাজার কোটিই আসে রেল-বিমান-বাসের টিকিট বিক্রি থেকে। অর্থাৎ, সেই হিসেবে অন্যান্য পণ্য বা পরিষেবা কেনাবেচা হয় ১০ হাজার কোটি টাকার (চাহিদার মাত্র ২০%)। কিন্তু তা সত্ত্বেও ই-কমার্স সংস্থাগুলির কাছে ভারতের বাজার অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এবং অন্যতম লোভনীয়।
ভারতে নেট-বাজার ৫০ হাজার কোটি টাকার। যার ৮০% রেল-বিমান-বাসের টিকিট।
ফি-বছর এই বাজার বাড়ছে ৪০%
অধিকাংশ ক্রেতাই মহিলা
কারণ, ওই সব সংস্থার নিজেদের হিসাব অনুযায়ী, দেশে ফি-বছর অনলাইনে কেনাকাটা বাড়ছে প্রায় ৪০% হারে। যার অন্যতম কারণ ছোট ও মাঝারি শহরে তার দ্রুত বাড়তে থাকা জনপ্রিয়তা। শুধু তা-ই নয়, অনেককেই অবাক করে দিয়ে এখন এই ব্যবসার প্রায় ৯% আসছে সম্পন্ন গ্রামাঞ্চল থেকে।
আর এই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই বাজার দখলের জন্য ঝাঁপাচ্ছে ইন্ডিয়া প্লাজা, ফ্লিপকার্ট, জাবং, ই-বে থেকে শুরু করে মিন্ট্রা, সি-বাজারের মতো বিভিন্ন ই-কমার্স সংস্থা। তাদের মতে, ২০০১ সালে যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহার করতেন মাত্র ৩০ লক্ষ মানুষ, সেখানে এখন তা কোটি ছাড়িয়েছে। হাতের মুঠোয় ধরা ফোনেই দেখে নেওয়া যাচ্ছে বিশ্বের প্রায় সব ব্র্যান্ডের, সব পণ্যের খুঁটিনাটি। তাই পছন্দের পণ্য বা পরিষেবা কিনতে অনেক সময়েই আর আগের মতো প্রচলিত বিপণির দিকে তাকিয়ে থাকছেন না ছোট শহরের বাসিন্দারা।
মিন্ট্রা-র মুখপাত্রের মতে, অধিকাংশ ছোট শহরেই নামী ব্র্যান্ডের দোকান নেই বললেই চলে। থাকলেও সেখানে ‘স্টক’ কম হওয়ায় বাছার সুযোগ কম। তাই সেই সমস্ত ঝক্কি এড়িয়ে মাউসে ক্লিক্ করেই জিনিস কিনছেন অনেকে। সরাসরি বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছে নেটে পরখ করে বরাত দেওয়া সেই পণ্য।
সংস্থাগুলির মতে, বাজার যে শুধু বাড়ছে, তা-ই নয়। অনেক নিত্য-নতুন বৈশিষ্ট্যও উঠে আসছে। যেমন, ই বে-র সমীক্ষা মাফিক, অনলাইন কেনাকাটার এই বাজারে নতুন ক্রেতারা অধিকাংশই মহিলা। সংস্থার অন্যতম কর্তা শরৎ দ্বিগুমূর্তির দাবি, শুধু দেশি পণ্য নয়, ছোট-মাঝারি শহরে প্রবণতা বাড়ছে বিদেশি মোবাইল, ল্যাপটপ, খেলনা ইত্যাদি কেনারও।
কেনা-বেচার জন্য যাঁরা নেট দুনিয়ায় ভিড় জমাচ্ছেন, তাঁরা সকলেই যে খুচরো ক্রেতা, তা নয়। যেমন, নিজেদের জিনিস বিক্রির বড় জানলা হিসেবে ক্রমশ অনলাইন রিটেলকে বেছে নিচ্ছেন ছোট শহরের বিক্রেতারা। মাত্র ছ’মাস আগে চালু হওয়া সংস্থা গেট ইট-এ ইতিমধ্যেই নাম লিখিয়েছেন ৬ হাজার দোকানি। সংস্থার প্রধান কিরণ মূর্তি বলেন, “নেটে ভর করে ব্যবসা করতে চাইলেও ক্রেতার কাছে জিনিস পৌঁছে দেওয়া বা জিনিসের দাম নেওয়ার মতো পরিকাঠামো সব দোকানির নেই। তাই সেই অভাব মেটাতে আমাদের পরিকাঠামো ব্যবহার করছেন তাঁরা।”
মূর্তির দাবি, আপাতত দোকানিদের লাভের অঙ্ক ঠিক রাখতে নিজেদের পরিষেবার দাম কম রাখা হয়েছে। আগামী দিনে দোকানির সংখ্যা বহু গুণ বাড়িয়েই এই ব্যবসায় সাফল্যের মুখ দেখতে চান তিনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.