ওষুধ দিয়ে গাছ মেরে বাগান সাফ করার অভিযোগ উঠেছে মানকুন্ডুর খাঁ রোডে। প্রতিবাদে সোচ্চার স্থানীয় বাসিন্দা থেকে স্কুল পড়ুয়া।
ভদ্রেশ্বর পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের (নতুন) মানকুণ্ডু স্টেশন-সংলগ্ন খাঁ রোডের একটি আমবাগানের পূর্ণবয়স্ক আমগাছগুলিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের চোখের আড়ালে ওষুধ দিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
গাছগুলি সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাবার পরে কেটে ফেলা হবে আশঙ্কা স্থানীয় মানুষের। তাঁদের অভিযোগ, আনুমানিক ৩০ বিঘা জমিতে মোট ২০০টির উপরে আমগাছ আছে। আবাসন তৈরির জন্য কিছুটা অংশ টিন দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। ঘেরা জায়গার মধ্যে গোটা ৫০ গাছ আছে। ১৫টি আম গাছ মৃতপ্রায়।
হুগলির বনাধিকারিক চিত্তরঞ্জন প্রামাণিক বলেন, “অভিযোগ পেয়ে সরেজমিন তদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট এলে খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ভদ্রেশ্বরের পুরপ্রধান দীপক চক্রবর্তী বলেন, “পাশের একটা আবাসনের নিকাশি জল ওই বাগানে গিয়ে জমার ফলে গোড়ায় পচন ধরে গাছগুলি মরে যাচ্ছে। ওষুধ দিয়ে মারা হচ্ছে কিনা বলতে পারব না। তবে আবাসন তৈরির জন্য গাছ কাটা হচ্ছে কিনা, সে দিকে নজর রাখা হবে। প্রয়োজনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
স্থানীয় বাসিন্দারা ইতিমধ্যেই একজোট হয়ে প্রতিবাদে নেমেছেন। তাতে সামিল স্থানীয় স্কুল পড়ুয়ারাও। বাগান সাফ করে আবাসন তৈরির প্রতিবাদে হাতে পোস্টার নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছে পাড়ার ছোট ছেলেমেয়েরা। স্থানীয় ক্লাবের সদস্য থেকে পাড়ার মহিলা সকলেই বৃক্ষ নিধনের বিরুদ্ধে সরব। গাছ মারা রুখতে মাইকে প্রচার চালাচ্ছেন তাঁরা। সই সংগ্রহ করে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর, স্থানীয় সাংসদ-বিধায়ক, পুরপ্রধান, বন দফতর, প্রশাসনের কর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। জানানো হয়েছে পুলিশকেও।
কিন্তু কোনও কিছুরই তোয়াক্কা না করে গাছ মারা চলছে বলে অভিযোগ স্থানীয় মানুষের। তাঁরা জানাচ্ছেন, বেশ কয়েক বছর আগেও এই অঞ্চলে আমবাগান কেটে আবাসন তেরি হয়েছে। সেই সময় প্রতিবাদ জানিয়ে সংশ্লিষ্ট সব দফতরকে জানানো সত্ত্বেও কোনও প্রোমোটার-রাজ বন্ধ করা যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা সমর ভৌমিক বলেন, “পাশের একটা আমবাগানের গাছ কেটে সাফ করে তাতে আবাসন তৈরি হয়ে গেল। প্রতিবাদ জানিয়েও সুরাহা হয়নি। কিন্তু এ বার এলাকার মানুষ একত্রিত হয়ে সোচ্চার হয়েছেন।” এই একই প্রতিবাদের সুর শোনা গেল পাড়ার মণিমোহন চৌধুরী, প্রবীন বালা, মৌমিতা দেবনাথ, মৌসুমী দাস সকলের মুখে।
প্রোমোটারের মূল সহযোগী মানকুণ্ডু দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা বিশু পালের দফতরে ফোনে যোগাযোগ করলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনেও যোগাযোগ করা যায়নি। |