পুর-যান
চালক মেলে না
বাবা অসুস্থ। কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। বাড়ির কাছেই হাওড়া পুরসভা। অ্যাম্বুল্যান্সের খোঁজে হন্তদন্ত হয়ে পুরসভায় এসেছেন অরুণা দাস। অ্যাম্বুল্যান্স থাকলেও চালক নেই। শেষ পর্যন্ত বাবাকে ট্যাক্সি করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন।
শুধু অরুণাদেবীই নন, অনেকেই পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্সের খোঁজ করে হতাশ হন। কারণ, অ্যাম্বুল্যান্স থাকলেও চালকের অভাব রয়েছে। চালকের অভাব রয়েছে অন্যান্য বিভাগেও। পুরসভা সূত্রের খবর, ’৯৫-এ শেষ বার চালক নিয়োগ হয়েছিল। ফলে পুরসভার অনেক পরিষেবা দিতেই সমস্যা হচ্ছে।
এখন পুরসভার দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এক জন চালক আট ঘণ্টা কাজ করেন। ফলে শুধু দু’টি অ্যাম্বুল্যান্সে ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা দেওয়ার জন্যই ছ’জন চালক প্রয়োজন। কিন্তু চালক আছেন পাঁচ জন। অনেক সময়ে এঁদের আবার অন্য বিভাগের গাড়িও চালাতে হয় বলে অভিযোগ। ফলে প্রায়ই অ্যাম্বুল্যান্সের দরকার পড়লে চালককের অভাবে তা পাঠানো যায় না। চালকের অভাব রয়েছে জলের গাড়ি, শববাহী গাড়ি ও অন্যান্য পরিষেবার ক্ষেত্রেও। পুরসভা সূত্রের খবর, অনেক সময়ে কোথাও পানীয় জলের সঙ্কট হলে গাড়ি থাকা সত্ত্বেও চালকের অভাবে পাঠানো সম্ভব হয় না। নানা উৎসব অনুষ্ঠানেও জলের গাড়ি পাঠাতে সমস্যা হয়। এতে পুরসভা রাজস্ব হারায় বলে পুরসভা সূত্রের খবর। শববাহী গাড়ি থাকা সত্ত্বেও পরিষেবা পাওয়া যায় না বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। তা ছাড়া পুরকর্তাদের গাড়ির চালকও কম রয়েছে।
রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মালপত্র পৌঁছে দেওয়ার গাড়ি থাকলেও কোনও চালক নেই। অন্য বিভাগ থেকে চালক এনে কাজ চালানো হয়। কিন্তু এ ভাবেও অনেক সময়ে চালক মেলে না। ভোগান্তি হয় সাধারণ মানুষের। পুরসভার বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের অরুণ রায়চৌধুরী বলেন, “চালকের অভাবে সাধারণ মানুষ বিপদে পড়েন। অথচ এই বোর্ডের কোনও হেলদোল নেই।”
পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “হাওড়া পুরসভার কোনও পরিকাঠামোই ঠিক নেই। অ্যাম্বুল্যান্সের মতো জরুরি পরিষেবার জন্য চালক না থাকাটা দুর্ভাগ্যজনক।” সমস্যার কথা স্বীকার করে মেয়র মমতা জয়সোয়াল বলেন, “দীর্ঘ দিন কোনও চালক নিয়োগ হয়নি। এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে লোক চাওয়া হয়েছে। সমস্যা মেটাতে আপাতত চার জন চালককে অস্থায়ী ভাবে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা হবে।”

এক নজরে
পরিষেবা দরকার আছেন
শববাহী গাড়ি দু’জন কেউ নেই
জলের গাড়ি চার জন দু’জন
স্বাস্থ্য বিভাগের গাড়ি দু’জন কেউ নেই
মালবাহী গাড়ি দু’জন কেউ নেই
অ্যাম্বুল্যান্স ছ’জন পাঁচ জন

ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.