মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ কর্তা বেন বার্নানকে-র ঘোষণাই বৃহস্পতিবার মোড় ঘুরিয়ে দিল ভারতীয় শেয়ার বাজারের। আমেরিকা তার আর্থিক ত্রাণ প্রকল্প বহাল রাখছে, বার্নানকে বুধবার রাত্রে এই সিদ্ধান্ত স্পষ্ট করায় ভারত-সহ এশীয় বাজারে তার প্রভাব পড়ে বৃহস্পতিবার। সেনসেক্স প্রায় ৩৮২ পয়েন্ট বেড়ে পৌঁছে যায় ১৯,৬৭৬.০৬ পয়েন্টে, যা গত ৬ সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। লগ্নিকারীদের সম্পদ এক দিনে বেড়ে গিয়েছে ১ লক্ষ কোটি টাকা।
বার্নানকে বলেন, “মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক শিল্পের হাতে নগদের জোগান বজায় রেখে অর্থনীতির হাল ফেরাতে তার ঋণপত্র কেনার কর্মসূচি থেকে এখনই সরে আসছে না। অন্য দিকে আমেরিকার বেকারত্বের হার কিছুটা কম দেখে অর্থনীতি, বিশেষ করে শ্রমের বাজার সম্পর্কে সঠিক আন্দাজ পাওয়া সম্ভব নয়।” এই খবর কার্যত টনিকের কাজ করেছে মুম্বই বাজারে। বার্নানকে-র ঘোষণার পর বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলি ভারত থেকে আর বড় অঙ্কের লগ্নি তুলে নেবে না বলেই আশা জাগে বাজারের। আর, এই আশাই আতঙ্ক কাটিয়ে ভরসা জুগিয়েছে লেনদেনকারীদের। ফলে তাঁরা এ দিন আবার ভিড় করেন শেয়ার বাজারে, যা টেনে তোলে সূচককে। প্রসঙ্গত, ফেডারেল রিজার্ভ আর্থিক ত্রাণ প্রকল্প তুলে নিলে এবং পাশাপশি সুদের হার বাড়লে বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলি মার্কিন মুলুকে লগ্নি করতেই আগ্রহী হত। সেই আশায় আগেভাগেই তারা ভারতীয় বাজারে শেয়ার বিক্রি করছিল বিপুল পরিমাণে। জুনের গোড়ার দিক থেকে বিদেশি লগ্নিকারীরা ভারতের বাজারে এ পর্যন্ত ১০,০৮০ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে। পাশাপাশি, তারা ডলার কিনতে শুরুও করেছিল বলে বাজার সূত্রের খবর। ডলারে ভারতীয় টাকার এত বেশি পতনের জন্যও এই কারণটিকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
টাকার দাম এ দিন অবশ্য কিছুটা স্থিতিশীল ছিল। লেনদেনের প্রথম দিকে তা শেয়ার বাজারের ঊত্থনের হাত ধরে বেশ কিছুটা উপরে উঠে যায়। এক সময়ে প্রতি ডলারের দাম ছোঁয় ৫৯.৩২ টাকা, যা গত এক সপ্তাহে সর্বোচ্চ। তবে দিনের শেষে উত্থান ধরে রখতে পারেনি টাকা। ২ পয়সা পড়ে বন্ধ হয় ৫৯.৬৭ টাকায়।
মার্কিন অর্থনীতির হাল এখনও ততটা বৃদ্ধির সড়কে না-ফেরায় এ দিন নিরাপদ লগ্নির মাধ্যম হিসেবে বিশ্ব বাজারে বেড়েছে সোনার দাম। প্রতি আউন্সে সোনা ছুঁয়েছে ১২৯৮.৭৩ ডলার। তার প্রভাব পড়ে ভারতেও।
বার্নানকে-র সিদ্ধান্তে এ দিন সেনসেক্স উঠলেও লেনদেনকারীরা ছিলেন সাবধানী। কারণ আগামী কাল চলতি অর্থবর্ষে ইনফোসিসের প্রথম ত্রৈমাসিকের আর্থিক ফল প্রকাশ। সেই দিকেই এখন তাকিয়ে ভারতের শেয়ার বাজার।
|