অনিশ্চয়তার গ্রাসে তেমন ভাবে মাথা তুলতে পারছে না শেয়ার সূচক কিংবা ভারতীয় টাকা। বুধবারও তার থেকে রেহাই মেলেনি। তবে বেশি রাতের খবর, মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ তার আর্থিক ত্রাণ প্রকল্প এখনই তুলে নিচ্ছে না বলে বৈঠক শেষে জানিয়েছে। বাড়ছে না সুদের হারও। এর প্রভাবে আগামী কাল বৃহস্পতিবার বাজার বেশ কিছুটা উঠবে বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ফেডারেল রিজার্ভ-এর সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে বুধবারই কিছুটা ইতিবাচক বৃত্তে পা রাখে শেয়ার ও বৈদেশিক মুদ্রার বাজার। কারণ, আগেভাগেই ইঙ্গিত মিলেছিল, ফেড রিজার্ভ কর্তা বার্নানকে আর্থিক ত্রাণ প্রকল্প পুরোপুরি গুটিয়ে নেবেন না। তবে ভারতের বাজার খোলা থাকাকালীন বৈঠক শেষ হয়নি। প্রসঙ্গত, ত্রাণ প্রকল্প আর বহাল থাকবে না এবং সুদের হার বাড়বে, এই আশঙ্কাই সম্প্রতি টেনে নামাচ্ছিল বিশ্ব বাজারকে, যার প্রভাব পড়ে ভারতে। বিদেশি সংস্থাগুলিও দেশে সুদ বাড়ার আশায় ভারতের বাজার থেকে লগ্নি তুলে নিচ্ছিলেন।
বুধবার দিনের শেষে কিছুটা মুখরক্ষা করে সেনসেক্স বেড়ে যায় ২২ পয়েন্ট। ভারতীয় টাকাও দু’দিনের পতন কাটিয়ে বেড়েছে ৭ পয়সা। যদিও, বুধবার দিনভরই ওঠা-পড়া চলে শেয়ার বাজারে। মঙ্গলবার ১০৩ পয়েন্ট পড়ার পর এ দিন একটু বেলার দিকেই সেনসেক্স পড়ে যায় আরও ১০২ পয়েন্ট। মূলত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, তেল শোধন, তথ্যপ্রযুক্তি, গাড়ি, বিদ্যুৎ এবং ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের শেয়ার বিক্রির চাপেই পড়তে থাকে সূচক। শেষ মুহূর্তে লগ্নিকারীরা ক্রেতার ভূমিকায় ফিরে আসায় সামান্য উঠে সেনসেক্স বন্ধ হয় ১৯,২৪৫.৭০ পয়েন্টে। বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলি মঙ্গলবার ৫৯৭.৩৭ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে। পাশাপাশি, গত দু’দিনে ডলারে টাকা পড়েছে ১২৬ পয়সা। তবে শেয়ার দর কিছুটা বাড়ায় ও রফতানিকারীদের ডলার বিক্রির জেরে দিনের শেষে ডলারে টাকা বাড়ে ৭ পয়সা। ফলে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৫৮.৭০ টাকা।
দু’দিনের দীর্ঘ বৈঠক শেষে মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক আজ জানিয়েছে, শিল্পের হাতে নগদের জোগান বজায় রাখতে ঋণপত্র কেনার কর্মসূচি থেকে এখনই তারা সরে আসছে না। অর্থনীতিতে এখনও বেকারত্বের চড়া হারের কারণে মাসে ৮,৫০০ কোটি ডলার হারে ঋণপত্র কেনা বহাল থাকছে। বেকারত্ব ৬.৫% বা তার নীচে না-নামা পর্যন্ত বাড়ছে না সুদও। উল্লেখ্য, মে মাসের হার ৭.৬%। তবে অর্থনীতির হাল ফেরার সম্ভাবনা বেড়েছে, ঝুঁকিও কমেছে বলে জানান বার্নানকে। কারণ মূল্যবৃদ্ধি দীর্ঘ মেয়াদি লক্ষ্যমাত্রা ২ শতাংশেরও নীচে নেমে এসেছে বলে তার বিবৃতিতে জানিয়েছে ফেড রিজার্ভ। |