উচ্চ মাধ্যমিকের বই ছাপা ও বিক্রির উপরে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তা সত্ত্বেও একাদশ শ্রেণির বাংলা, ইংরেজি পাঠ্যবই ঢেলে বিকোচ্ছে বাজারে। কলেজ স্ট্রিট বইপাড়ার দোকানে দোকানে একাদশের ইংরেজি পাঠ্যপুস্তক ‘মাইন্ডস্কেপস’ এবং বাংলা পাঠ্য ‘সাহিত্যচর্চা’ সাজানো। বিক্রেতাদের দাবি, উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ মেনে প্রকাশকেরা বাজারে নতুন করে বই ছাড়তে পারবেন না। কিন্তু তাঁরা তো আগেই বইগুলি কিনে রেখেছেন। তাই বই বিক্রিতে তাঁদের উপরে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই।
বাংলা, ইংরেজি পাঠ্য-সহ আটটি বই এ বার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের প্রকাশ করার কথা। বইগুলি ছাপার বরাত যে-পদ্ধতিতে দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছে একটি প্রকাশনা সংস্থা। মঙ্গলবার মামলাটি আদালতে উঠলে ওই আটটি বই প্রকাশ ও বিক্রির উপরে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, বৃহস্পতিবার ফের ওই মামলার শুনানি হবে। |
কলেজ স্ট্রিটের দোকানে এ ভাবেই ঢালাও বিক্রি হচ্ছে পাঠ্যবই। —নিজস্ব চিত্র |
বই ছাপার বরাত দেওয়া নিয়ে প্রশাসনিক চাপান-উতোর চলছে কয়েক মাস ধরে। তার জেরে বইগুলির প্রকাশ ও বিক্রি ক্রমশ পিছিয়ে যায়। জুনের চতুর্থ সপ্তাহে ক্লাস শুরু হয়ে গেলেও বাংলা, ইংরেজির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের পাঠ্যবই পেতে অনেক দেরি হয়েছে ছাত্রছাত্রীদের। এতে পঠনপাঠনে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা শিক্ষক, ছাত্র, অভিভাবক সকলের। মঙ্গলবার থেকে বই বিক্রি হচ্ছে জেনে বুধবার কলেজ স্ট্রিটে এক অভিভাবক বলেন, “আদালতের রায় বুঝি না। বইয়ের অভাবে মেয়ের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছিল। এখন বাজারে বই পাওয়া যাচ্ছে। তাই কিনতে এসেছি।”
যাঁর বিরুদ্ধে নিয়ম না-মেনে বই ছাপার বরাত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, সেই সংসদ-সভাপতি মুক্তিনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অপসারণের দাবি জানিয়েছে এসএফআই। একই দাবি জানিয়েছে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি। মুক্তিনাথবাবু অবশ্য বিষয়টি বিচারাধীন বলে এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এ দিকে, একাদশের পাঠ্যপুস্তক কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে কলেজে ভর্তি, ই-কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তিতে অস্বচ্ছতা, কলেজে ফি মকুবের সুযোগ না-মেলা ইত্যাদি অভিযোগে চলতি মাসেই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কাছে স্মারকলিপি দিচ্ছে এসএফআই। বুধবার এ কথা জানান সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক দেবজ্যোতি দাস। তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়গুলি নির্দেশ দিয়েছে, কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে শুধু মেধার উপরেই জোর দিতে হবে। কিন্তু তা অমান্য করে ভর্তির সময় পড়ুয়াদের কাছ থেকে জোর করে হাজার হাজার টাকা নিচ্ছে তৃণমুল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)।” টিএমসিপি অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ওই সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক তমোঘ্ন ঘোষের পাল্টা অভিযোগ, বাম আমলেই পড়ুয়াদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হত। এসএফআই আবার সেই অভিযোগ মানতে চায়নি।
|