অলিম্পিয়ান মহারাজ কৃষ্ণ কৌশিককে জাতীয় দলের কোচের পদে নিয়োগ করার হকি ইন্ডিয়ার সিদ্ধান্তকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক ধনরাজ পিল্লে। বলে দিলেন, “হকি ইন্ডিয়া আবারও হঠকারী একটি সিদ্ধান্ত নিল। নবসকে অনেক আগেই সরানো উচিত ছিল। তবে এখন হকি ইন্ডিয়া রোলান্ট ও কৌশিকের ওপর দায়িত্ব দিয়ে আরও একটা ভুল করল। এতে কোনও লাভ হবে বলে আমার মনে হয় না।”
একই সঙ্গে হকি ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধেও উগড়ে দিলেন একরাশ ক্ষোভ। প্রাক্তন ভারত-অধিনায়ককে মুম্বইতে ফোনে ধরা হলে তিনি হকি ইন্ডিয়ার সমালোচনা করে বলেন, “হকি ইন্ডিয়ার বর্তমান কর্তারা তো ভারত থেকে হকি তুলে দিতে বসেছেন। সত্যিই কী ওঁরা হকির কথা ভাবেন। আমার তো সন্দেহ আছে!”
উল্লেখ্য, ২৪ অগস্ট থেকে মালয়েশিয়ায় এশিয়া কাপ হকির আসর বসছে। এশিয়া কাপ জিততে পারলে ২০১৪ হল্যান্ড বিশ্বকাপের ছাড়পত্র পেয়ে যাবে ভারত। ১৬ জুলাই থেকে বেঙ্গালুরু সাইতে জাতীয় ক্যাম্প শুরু হয়ে যাচ্ছে। সে জন্যই তড়িঘড়ি মাইকেল নবসের সহকারী হিসেবে যোগ দেওয়া কৌশিকের হাতেই কোচের দায়িত্ব তুলে দিল হকি ইন্ডিয়া। ‘হাই পারফরম্যান্স ডিরেক্টর’ রোলান্ট অল্টম্যানস অবশ্য কৌশিকের মাথার ওপর থাকছেন।
হকি ইন্ডিয়ার সচিব নারিন্দর বাতরা এ দিন অবশ্য বলেন, “আমি আশাবাদী, কৌশিকের কোচিংয়ে দলের উন্নতি হবে। এশিয়া কাপের জন্য আমার শুভেচ্ছা রইল।” দায়িত্ব পাওয়ার পর মস্কো অলিম্পিকের সোনাজয়ী দলের সদস্য কৌশিকের গলাতেও চ্যালেঞ্জের সুর। বললেন, “কোচ হিসাবে ১৯৯৮-এ ব্যাংকক এশিয়ান গেমস জিতিয়েছিলাম ভারতকে। তা ছাড়া ভারতীয় মহিলা দলকে ২০০৩ দিল্লি এশিয়া কাপের সোনা ও ২০০৬ দোহা এশিয়ান গেমসের ব্রোঞ্জ পদক জিতিয়ে এনেছিলাম। এ বারও চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখব না।”
২০১০-এ দিল্লিতে হকি বিশ্বকাপের সময় জাতীয় মহিলা দলের কোচ ছিলেন কৌশিক। সে সময় তাঁর বিরুদ্ধে দলের খেলোয়াড়রা যৌন নিগ্রহের অভিযোগ তুলেছিলেন। তদন্ত কমিশন বসিয়েছিল হকি ইন্ডিয়া। কিন্তু কৌশিকের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণই পাওয়া যায়নি। মহিলা খেলোয়াড়দের অভিযোগকে খারিজ করে দেওয়া হলেও, নিজেই হকি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন কৌশিক। স্বভাবতই এ দিন জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর কৌশিক বলে দিলেন, “আমি যে নির্দোষ ছিলাম, সেটা আরও একবার প্রমাণ করে দিল হকি ইন্ডিয়াই।”
ভারতীয় দলের প্রাক্তন টেকনিক্যাল উপদেষ্টা ও অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন তারকা খেলোয়াড় চার্লসওয়ার্থও হকি ইন্ডিয়ার এই সিদ্ধান্তে খুশি নন। তাঁর দাবি, “আধুনিক হকির জন্য ভারতীয় কোচেরা একেবারেই উপযুক্ত নন। হকি ইন্ডিয়ার উচিত বিদেশি কোচ নিয়ে আসা। না হলে কোনও লাভ নেই।” চার্লসওয়ার্থের এই দাবি মানতে রাজি নন ধনরাজ। তিনি পালটা বলেছেন, “ভারতীয় কোচেরাও পারে হকির খোলনলচে বদলে দিতে। তার জন্য অবশ্য সঠিক লোককে বেছে নিতে হবে।”
|